Scholarship for Tab: ২০২০ সালে করোনা ভাইরাসের প্রকোপে অনলাইন শিক্ষার প্রচলন শুরু হয়। মানুষের মধ্যে এই ধারণা আসে যে ঘরে বসে দূর-দূরান্ত থেকে ডিজিটাল মিডিয়ার হাত ধরে যেকোনো কাজ করা সম্ভব হয়। আর তারপরেই যখন লকডাউনে সারা বিশ্ব ঘরবন্দী হয়েছিল, তখন এই ডিজিটাল মিডিয়ার হাত ধরে পড়াশোনা কিছুটা এগিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু সেই সময় প্রধান সমস্যা হিসেবে দেখা যায় যে প্রত্যেক ছাত্র-ছাত্রীর পক্ষে স্মার্টফোন জোগাড় করা সম্ভব হয়ে ওঠেনা। স্মার্টফোনের অভাবে পড়াশুনা থমকে থাকবে এমনটা মানতে নারাজ হন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাই তিনি একাদশ শ্রেণীর ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য বিনা মূল্যে ট্যাব (Scholarship for Tab) দেওয়ার প্রকল্প নিয়ে যেখানে আসেন ১০,০০০ টাকা করে সরকার থেকে পড়ুয়াদের অ্যাকাউন্টে পাঠিয়ে দেওয়া হয়।
২০২৪-এর ইতিমধ্যে এই প্রকল্পের কাজ শুরু শুরু হয়ে গেছে। পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন স্কুলে ছাত্রছাত্রীরা ইতিমধ্যে যাদের অ্যাকাউন্টে ট্যাবের জন্য ১০,০০০ টাকা (Scholarship for Tab) করে পেয়ে গেছে। তবে সব পড়ুয়ারা যে তাদের অ্যাকাউন্টে টাকাটি পেয়েছে তেমন কিন্তু নয়। এমন বহু স্টুডেন্ট আছে যাদের অ্যাকাউন্টে এখনো সরকার থেকে টাকা ঢোকেনি। স্কুল কর্তৃপক্ষের মতে তারা সঠিক তথ্য দেওয়া সত্ত্বেও টাকা পড়ুয়াদের ব্যাংক অ্যাকাউন্টে ঢোকেনি, বোধ হয় হ্যাক হয়ে গেছে।
কিন্তু এই অভিযোগ মানতে রাজি হয়নি শিক্ষা দপ্তর। শিক্ষা দপ্তরের মতে শিক্ষকরাই যখন পড়ুয়াদের নাম ও নম্বর আপডেট করছিলেন, সেই সময় হয়তো ভুলবশত ভুল নম্বর আপডেট হয়ে যায়। যার ফলে এই টাকার গন্ডগোলটি সৃষ্টি হয়। অথবা পড়ুয়ারা হয়তো নিজেদের তথ্য দিতে ভুল করায় এরূপ সমস্যায় পড়ে। শিক্ষকরা ইচ্ছাকৃতভাবে ভুল তথ্য দিয়ে এই বিভ্রান্তি সৃষ্টি করতে পারে। যার ফলে শিক্ষা দপ্তর থেকে এফআইআর দায়ের করা হয়েছে। তবে টাকা পাওয়া গেলে তৎক্ষণাৎ সেই সমস্ত পড়ুয়াদের অ্যাকাউন্টে চলে যাবে বলে প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়।
আরো পড়ুন: নভেম্বরে শেষেই শুরু হতে চলেছে দুয়ারের সরকার ক্যাম্প, মিলবে একঝাঁক সুবিধা
কৃষ্ণাংশু মিশ্র, পশ্চিমবঙ্গ প্রধান শিক্ষক সমিতির একজন সাধারণ সম্পাদক শিক্ষা ভবনের এই এফআইআর দায়ের করা নিয়ে যথেষ্ট ক্ষুব্ধ হয়েছেন। তিনি বলেছেন যে, পড়ুয়াদের টাকা কোন মতেই শিক্ষকরা ছিনিয়ে নিতে পারে না। আর শিক্ষকরা ইচ্ছে করে কখনোই পড়ুয়াদের অ্যাকাউন্টের জায়গায় নিজেদের অ্যাকাউন্টও বসাননি যাতে টাকাটি তার অ্যাকাউন্টে ঢুকে যায়। তবে কেন এই এফআইআর দায়ের করা হলো। দুর্বল নেটওয়ার্কের কারণে অনেক সময় বাংলা শিক্ষক পোর্টালের সমস্যা দেখা গিয়েছে। যার ফলে হয়তো নাম অ্যাকাউন্ট নম্বর আপডেটে ভুল হয়েছে। এটি নিছকই টেকনিক্যাল ত্রুটি। এই ত্রুটিগুলি যত দ্রুত সম্ভব ঠিক করা দরকার শিক্ষা দপ্তরের।
বাঙুরের নারায়ণ দাস মেমোরিয়াল স্কুলের প্রধান শিক্ষক সঞ্জয় বড়ুয়া বলেছেন যে, সবচেয়ে বড় ব্যাপার সমস্ত পড়ুয়ারা যে ট্যাবের টাকা (Scholarship for Tab) দিয়ে ট্যাব বা স্মার্টফোনে কিনছে তা কিন্তু নয়। অনেকেই এই ১০ হাজার টাকার অপব্যবহার করছে। বিভিন্ন কাজে লাগিয়ে দিচ্ছে শিক্ষা দপ্তরের দেওয়া এই টাকাটি। তাই যদি পড়ুয়াদের এই টাকা না দিয়ে তাদের সরাসরি ট্যাব কিনে দেওয়া হয় তবে টাকাটি যথাযথ কাজে লাগবে। তবে শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য পশু এ বিষয়ে এখনো কিছু সিদ্ধান্ত নেন নি। কিন্তু তিনি বলেছেন যে পুরো ব্যাপারটি তিনি নিজে দায়িত্ব সহকারে খতিয়ে দেখবেন।