লতার গলা মানেই বিস্ময়! ৯২ বছরেও এমন সুরেলা, কি বলছে বিজ্ঞান

শর্মিষ্ঠা চ্যাটার্জী : সুরের সম্রাজ্ঞী লতা মঙ্গেশকরের অগণিত ভক্তরা বিশ্বাস করতেন স্বয়ং সরস্বতীর বরকন্যা লতা মঙ্গেশকর। তাঁর গলার আওয়াজের দ্বারাই তিনি যেনো একবাক্যে সবার মন জয় করে নিতে পারতেন। সেই সুরের মূর্ছনা মোহিত করে রাখতো সবাইকে। কিন্তু একজন এতো বয়স্ক মানুষের গলা কিভাবে আর এত ক্ষমতাশালী হতে পারে? এই বিস্ময় তো ভক্তদের মধ্যে ছিলই।

বিস্ময় এই গলা নিয়ে বিজ্ঞান কি বলছে তাহলে জেনে নেওয়া যাক।the world.org এর একটি রিপোর্ট অনুযায়ী, ম্যাসাচুসেটস হাসপাতালের ভয়েস সেন্টারের পরিচালক, স্টিভেন গিটেলস একজন মানুষের সুমধুর গানের পেছনে ভোকাল মাসলের অবদান দায়ী করেছেন। মানুষের মুখের পেছনে ওই মাংসপেশি মানুষকে কথা বলতে ও গান করতে দেখা যায়। ডাক্তারির ভাষায়, ল্যারিংস কে ভয়েস বক্স বলা যায়, যা দেখতে দুটি ইংরেজি V অক্ষরের মতো দেখতে।

সাদা রঙের লিগামেন্ট যখন কোনো ব্যক্তি কথা বলেন বা গান করেন তখন এটি কাঁপতে থাকে। আর লিগামেন্ট যত বেশি ভাইব্রেট করাতে পারেন একজন শিল্পী ততো বেশি ভালো গান গাইতে পারেন। তবে একমাত্র ফুসফুস মজবুত থাকলেই ল্যারিংস ভালো কাজ করতে পারে।

শ্বাসবায়ু নিয়ন্ত্রণ করতে পারাই একজন গায়ক বা গায়িকার প্রধান কাজ। আর এই শ্বাসবায়ু নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে ডায়াফ্রাম, পেটের পেশী, পিঠের পেশী, পাঁজরের মাঝে থাকা পেশী। এর প্রভাবেই একজন ব্যক্তি ঠিকভাবে কথা বলতে ও গান করতে পারেন। ভোকাল কর্ডের মধ্যে থাকা ছোট পেশিদের, ভোকাল ফোল্ড বলা হয়।

ভোকাল ফোল্ডে বায়ু পৌঁছলে সাদা লিগামেন্ট কম্পিত হতে শুরু করে। তারপরেই যে ধ্বনি সৃষ্টি হয় তা তরঙ্গ আকারে বাইরে বেরিয়ে এলে কান তাকে শব্দ বলে চিহ্নিত করে দেয়। ভালো গায়ক বা গায়িকারা অত্যধিক অভ্যাসের ফলেই এত উঁচুতে ও নিচুতে গান গাইতে সক্ষম হয়ে থাকেন।

গান মানব শরীরের জন্য একটি অব্যর্থ ওষুধ হতে পারে। গান গাওয়ার ফলে মস্তিষ্কের ডান দিক সক্রিয় হয়ে ওঠে। মানসিক প্রশান্তি তে সাহায্য করে গান। কথা বলার সমস্যা থাকলেও গানের অভ্যাসে তা নিরাময় হতে পারে।