আর নয় সাত, নতুন আবিষ্কারে মহাদেশের সংখ্যা নিয়ে জল্পনা তুঙ্গে

নিজস্ব প্রতিবেদন : ছোটবেলা থেকেই ভূগোল আমাদের পড়িয়েছে পৃথিবীতে মহাদেশের সংখ্যা সাত, আর মহাসাগর রয়েছে পাঁচটি। তবে এই মহাবিশ্বে রহস্যের শেষ নেই, তাই রহস্য মোচন করতে একের পর এক অভিযান চালায় ভূতত্ত্ববিদ, জ্যোতির্বিজ্ঞানী থেকে শুরু করে অন্যান্য গবেষকরা। আর তাতেই অনেক নতুন নতুন অনাবিষ্কৃত বিষয়বস্তু চলে আসে আমাদের সামনে।

সম্প্রতি এমনই এক ঘটনায় জল্পনা শুরু হয়েছে বিশ্ব জুড়ে। ভূমধ্যসাগরীয় অঞ্চল নিয়ে গবেষণার সময় ভূবিজ্ঞানীরা আবিষ্কার করে ফেললেন নতুন এক মহাদেশের অস্তিত্বের। এ নিয়ে আরো বিস্তারিত খোঁজ চালাচ্ছেন ভূবিজ্ঞানীরা। সমুদ্রের তলদেশ থেকে অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া এই মহাদেশের নাম গ্রেটার আড্রিয়া।

বিগত ১০ বছর ধরে ভূমধ্যসাগর পার্বত্য রেঞ্জে স্পেন থেকে ইরান পর্যন্ত গবেষণা চলছিল। সেই গবেষণার ফলাফল প্রকাশিত হয় গন্ডোয়ানা রিসার্চ নামে একটি জার্নালে। সেখানে বলা হয়েছে ভূপৃষ্ঠের নিচের স্তরে গ্রীনল্যান্ডের সমান একটি অংশ রয়েছে। মনে করা হচ্ছে এই অংশটি একসময় উত্তর আফ্রিকা থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছিল। নতুন এই স্তরের আবিষ্কার হওয়া অংশের নাম বিজ্ঞানীরা রেখেছেন গ্রেটার আড্রিয়া।

গবেষক দলের মুখ্য সদস্য নেদারল্যান্ডের গবেষক ডো ভ্যান হিনসবার্গেন জানিয়েছেন, “আমরা যে পার্বত্য অংশ ধরে গবেষণা করেছি, সেখানকার বেশিরভাগ পর্বতেরই উৎস উত্তর আফ্রিকা থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়া এই অংশটি। যে ঘটেনি কমপক্ষে ২০ কোটি বছর আগেকার। এটা আসলে একটা মহাদেশ, যাকে ঘিরে পর্বতগুলো গড়ে উঠেছে। শুধু ফালির মতো মহাদেশের এই অংশ তুরিন থেকে আড্রিয়াটিক সমুদ্র পর্যন্ত বিস্তৃত। এখান থেকেই পরবর্তী সময়ে ইতালি গড়ে উঠেছে।”

গবেষকরা আরো জানিয়েছেন, বিশ্বের বেশিরভাগ মহাদেশই জলের তলায় ছিল। সেগুলিতে প্রাকৃতিক বদলের ফলে পলি জমতে শুরু করলে জমির আকার নেই। ভূগর্ভস্থ প্লেটের সংঘর্ষের সেই পলি জমি পর্বতের আকার ধারণ করে। তবে নতুন আবিষ্কৃত এই মহাদেশ গ্রেটার আড্রিয়া রয়েছে অনেক রহস্য। কারণ ভূবিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, নতুন আবিষ্কৃত এই মহাদেশের ভূগর্ভস্থ প্লেটের মধ্যে কোন ঠোকাঠুকি হয়নি। বরং অন্যান্য অংশের প্রবল সংঘর্ষের ফলে এই অংশের বদল ঘটেছে।

তবে এই নতুন আবিষ্কারের ফলে বোঝা যায় পৃথিবীতে সাতটি মহাদেশ ছাড়াও ছিল আরও একটি মহাদেশে অস্তিত্ব, যে আবিষ্কার সত্যিই চমকপ্রদ।