ডেঙ্গু অতীত, রাজ্যে থাবা স্ক্রাব টাইফাসের! বলি ২, জানুন বাঁচার উপায়

নিজস্ব প্রতিবেদন : ডেঙ্গু নিয়ে ব্যতিব্যস্ত রাজ্য, এরই মাঝে নতুন আতঙ্ক স্ক্রাব টাইফাস। নতুন এই জ্বরে প্রাণ হারিয়েছেন তরুণ সরকার নামে মুর্শিদাবাদের খড়গ্রামের এক যুবক। গত কয়েকদিনে এই স্ক্রাব টাইফাস প্রাণ হারানোর সংখ্যা দাঁড়াল ২।

দিন সাতেক আগে জ্বর নিয়ে মুর্শিদাবাদ মেডিকেল কলেজে ভর্তি হয় তরুণ সরকার নামে ওই যুবক। কিন্তু পরিস্থিতির অবনতি হলে দুদিন আগে তাকে কলকাতার একটি মেডিকেল কলেজে ভর্তি করা হয়। তবে তার পরিস্থিতি ক্রমশ অবনতির দিকে এগোতে থাকে। ধীরে ধীরে মাল্টি অর্গান ফেলিওর হয়ে যায়। চিকিৎসকদের সমস্ত চেষ্টা ব্যর্থ হয়।

স্ক্রাব টাইফাস এই রোগ আসলে কি?

মূলত ঝোপঝাড়, আবর্জনা থেকে বেড়ে ওঠা এক ধরনের মাকড়ের কামড় থেকে এই রোগের বিস্তার। এই মাকড়ের বাহক কখনো ইঁদুর, কখনো বা কুকুর। এই রোগের লক্ষণ হলো, প্রচন্ড জ্বরের সাথে সাথে গোটা গায়ের র‌্যাশ ও ছেঁকার মতো দাগ। ঠিক সময়ে এই রোগের চিকিৎসা না করালে পরিস্থিতির অবনতি হয়। শরীরের সমস্ত অরগ্যান কাজ করা বন্ধ করে দিতে পারে। এই রোগের উপসর্গ ডেঙ্গির উপসর্গের মতই। তাই পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে চিকিৎসা শুরু করতে অনেকটা বিলম্বিত হয়ে যায়।

চিকিৎসা বিশেষজ্ঞদের মতে, স্ক্রাব টাইফাস নিয়ে মানুষের চিরন্তন ধারণা ছিল এই রোগের বিস্তার কম বলে। কিন্তু সেই ধারণা এই মুহূর্তে ভেঙে যাচ্ছে। কারণ বর্তমানে শহর ও শহরতলির অনেকেই এই রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন। তাই সময় এসেছে এই রোগ নিয়ে সচেতন হওয়ার।

উপায়

প্রথমেই বলে রাখা ভালো, স্ক্রাব টাইফাস রোধে কেন্দ্র বা রাজ্য কোনো সরকারেরই নির্দিষ্ট কোনো প্রকল্প নেই। তবে তারা হাত গুটিয়ে বসে রয়েছে এমনটাও নয়। এ যাবৎ সরকারি ক্ষেত্রে শুধু স্কুল অফ ট্রপিক্যাল মেডিসিনেই স্ক্রাব টাইফাসের নির্ণায়ক পরীক্ষা করা হত। স্বাস্থ্য দপ্তর এ বার সিদ্ধান্ত নিয়েছে, এসএসকেএম, বাঁকুড়া সম্মিলনী মেডিক্যাল, উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ, মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ-সহ রাজ্যের আরও ১২টি কেন্দ্রে চালু করা হবে স্ক্রাব টাইফাসের নির্ণায়ক পরীক্ষা। মোট ১৩ টি কেন্দ্রের সঙ্গে জুড়ে দেওয়া হয়েছে রাজ্যের প্রায় সমস্ত জেলাকে।

পাশাপাশি রাজ্য বা কেন্দ্রীয় সরকার ছাড়াও আমাদের সাধারণ মানুষদের যতটা সম্ভব এই রোগ থেকে বাঁচার জন্য পারিপার্শ্বিক পরিবেশ পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে। প্রচন্ড জ্বর, জ্বরের সাথে শরীরে র‌্যাশ দেখা দিলে কোনরকম বিলম্বিত না করে দ্রুত চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যান।