মহিলাদের অন্তর্বাসে চমক, যুগান্তকারী আবিষ্কারে ধর্ষণ থেকে বাঁচবে মহিলারা

নিজস্ব প্রতিবেদন : ২০১২ সালের ১৬ ই ডিসেম্বর, কিছু মানুষরূপী প্রাণীর লালসার শিকার হন নির্ভয়া, প্রথমে পৈশাচিক ধর্ষণ, তারপর খুন। আজ, সালটা ২০১৯ আবারও নর পিশাচের লালসার শিকার একটি মেয়ে, প্রিয়াঙ্কা। প্রিয়াঙ্কা থেকে নির্ভয়া থেকে আসিফা থেকে কামদুনি, ৩ মাসের কন্যা সন্তান থেকে ৮০ বছরের বৃদ্ধা, তাদের পৈশাচিক পরিণতির কথা রোজই একাধিক থাকে খবরের কাগজের পাতায় পাতায়। তবে হয়তো বা মাত্র ২০% ঘটনা আমাদের সামনে উঠে আসে বাকি সবই মিডিয়ার আড়ালে। এই কথা সবাই মানতে বাধ্য ভারতে নারীরা বরাবরই অসুরক্ষিত। তাই অনেক নারীরাই রাস্তায় বের হওয়ার সময় নিজের সুরক্ষার কথা ভেবে পেপার বা চিলি স্প্রে বা ধারালো অস্ত্র রাখেন। তবে যদি এমন কোনো অন্তর্বাস হতো যা ধর্ষণ প্রতিরোধে সক্ষম হতো!

এরকম অনেকেই ভেবেছেন নিশ্চয়। ঠিক সেমতই ভারতের বুকেই নারীদের নিরাপত্তার কথা ভেবে আবিষ্কার হলো ‘ধর্ষণ প্রতিরোধক অন্তর্বাস’!

না, কল্পনা নয়, সত্যি। ভারতের একটি জনবহুল রাজ্য উত্তরপ্রদেশ। জনবহুল হওয়ার সাথে সাথেই নানারকম অপরাধমূলক কাজকর্ম মূলত ধর্ষনের মতন ঘটনার খবর এই জেলা থেকে বারে বারেই উঠে এসেছে। এই জেলারই ফারুকবাদ নামক এক ছোট্ট জেলার বাসিন্দা বিএসসি শিক্ষার্থী সিনু কুমারী এই অলীক কল্পনাকে সত্যিতে রূপান্তরিত করে প্রমাণ করলেন, ভাবলে হয়ত অনেক কিছুই হয়। তিনি এক এমন অন্তর্বাস আবিষ্কার করেছেন যা কেবল ধর্ষণ প্রতিরোধে করতেই না বরং ধর্ষককে শনাক্ত করে দিতেও সাহায্য করবে।

একটি ক্যামেরা এবং একটি জিপিএস যুক্ত করা এই অন্তর্বাসের সাথে যাতে ধর্ষকের ছবি ধরা পড়বে এবং জিপিএসের মাধ্যমে কাছের মানুষ জানতে পারবে তার অবস্থান। শুধু তাই না, কলিং বোতাম ও যুক্ত করা যায় এই অন্তর্বাসের সাথে। যাতে মাত্র একটি ক্লিকেই ফোন চলে যায় পুলিশে! নানা, এখানেই শেষ নয়, অন্তর্বাসে থাকবে একটি লক সিস্টেম যা শুধুমাত্র একটি নির্দিষ্ট পাসওয়ার্ড দ্বারা খোলা যাবে অর্থাৎ সেটি না জানা কোনো ব্যাক্তি সেই অন্তর্বাসকে খুলতে পারবেন না।

তবে মনে প্রশ্ন জাগতে পারে হঠাৎ এরকম একটা আবিষ্কারের কথা কিভাবে তার মাথায় এলো। উত্তরপ্রদেশের মতন জনবহুল রাজ্যে নিত্য ধর্ষনের কথা শুনতে শুনতেই তিনি ঠিক করেন এরকম একটি আবিষ্কার প্রয়োজন কিন্তু এই আবিষ্কার করার চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেন একটি প্রতিবেদন পরে। সেই প্রতিবেদনে একটি সাত বছরের শিশুর ধর্ষণ ও খুনের ঘটনার কথা বর্ণনা করা হয় যা পরার পর তিনি এই আবিষ্কারের কথা ভাবেন।এলাহাবাদের ন্যাশনাল ইনোভেশন ফাউন্ডেশনে পুরস্কৃত করার জন্য এই আবিষ্কারটির নাম যায়।

সিনু কুমারীর মতে, সবসময় এটি পড়ার প্রয়োজন না হলেও একা কোথাও যাওয়ার সময় নারীদের সুরক্ষার ক্ষেত্রে তারা এটি ব্যবহার করতে পারেন। তবে এ কথাও ভাবতে হবে যে আমাদের সমাজের পরিস্থিতি বর্তমানে কুরুপ যে এরকম আবিষ্কার নারীদের প্রয়োজনীয় হয় উঠেছে! এই আবিষ্কারের জন্য সিনু কুমারীর কুর্নিশ অবশ্যই প্রাপ্য।