নিজস্ব প্রতিবেদন : ভারত এবং চীন দুই প্রতিবেশী দেশ হলেও দুই দেশের মধ্যে রয়েছে চিরশত্রুতা। চীনের সঙ্গে কেবল ভারতের নয়, বরং বিশ্বের অধিকাংশ দেশেরই সেই ভাবে অ্যাডজাস্টমেন্ট দেখা যায় না। আসলে এর জন্য চীনের আগ্রাসন নীতিকেই দায়ী করা হয়। তবে এবার ভারত (India) এমন এক চাল চালল, যাতে চীনের (China)রাতের ঘুম উড়বে তা নিয়ে কোন সন্দেহ নেই।
ভারতের নতুন চালে চীনের রাতের ঘুম উড়ে যাওয়ার মূল কারণ হলো ভারতের প্রতিরক্ষা সেক্টর একটি টানেল উদ্বোধনের কারণে অনেক শক্ত হয়ে গেল। শনিবার প্রধানমন্ত্রীর নরেন্দ্র মোদী এই টানেলের উদ্বোধন করেন। যে টানেলটি বিশ্বের সবচেয়ে দীর্ঘতম দুই লেনের টানেল। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির হাত দিয়ে শনিবার উদ্বোধন হওয়া ওই টানেলের নাম হলো সেলা টানেল (Sela Tunnel)।
সেলা টানেল তৈরি করা হয়েছে অরুনাচল প্রদেশে। যে অরুণাচল প্রদেশের বিভিন্ন অংশকে চীন বারবার নিজেদের বলে দাবি করে আসছে। সেই অনৈতিক দাবির এবার কড়া জবাব দিল কেন্দ্র সরকার। ইটানগর থেকে উদ্বোধন করা এই টানেলে যান চলাচল শুরু হয়ে গেলে ভারতীয় সেনারা সামরিক দিক হোক অথবা কৌশলগত দিক সবেতেই চীনের থেকে এগিয়ে যাবে। কেননা এই টানেল দিয়ে ভারতীয় সেনারা খুব অল্প সময়ের মধ্যে পৌঁছে যেতে পারবেন চীন সীমান্তে।
সেলা টানেল বিশ্বের দীর্ঘতম দুই লেনের টানেল যার মোট দৈর্ঘ্য হল ১২ কিলোমিটার। এই টানেলটি এমনভাবে তৈরি করা হয়েছে যাতে করে সহজেই পৌঁছে যাওয়া যায় চীন সীমান্ত সংলগ্ন এলাকা তাওয়াং ও কামেঙ্গ সেক্টরে। যে কারণে চিন সেনাদের একটু টিরিক বিরিক দেখলেই ভারতীয় সেনারা নিমেষে পৌঁছে যেতে পারবেন ওই এলাকায়। আর এর ফলে অরুণাচল প্রদেশের প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখা বরাবর চীন সেনাদের চোখ রাঙানি আর চলবে না।
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী শনিবার যে সেলা টানেলের উদ্বোধন করলেন সেটি সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ১৩ হাজার ফুট উচ্চতায় অবস্থিত। এই টানেলের উদ্বোধন না হওয়া পর্যন্ত এতদিন তাওয়াং ও কামেঙ্গ সেক্টরে যাওয়ার জন্য ভারতীয় সেনাদের সংকীর্ণ পাহাড়ি পথ ব্যবহার করতে হতো। যে সংকীর্ণ পাহাড়ি পথে ট্যাঙ্ক এবং সাঁজোয়া গাড়ি নিয়ে যাওয়া একপ্রকার অসম্ভব ছিল। বর্ষাকালে পরিস্থিতি আরও ভয়ঙ্কর হয়ে যেত। যে কারণে ভারতীয় সেনাদের ওই সকল এলাকায় পৌঁছাতে প্রচুর কসরত করতে হতো। এই পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখেই ২০১৯ সালে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এই টানেল তৈরির জন্য ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন করেন। যে প্রকল্পের জন্য ধার্য করা হয়েছিল ৬৯৭ কোটি টাকা। অবশেষে এই টানেলের উদ্বোধনের ফলে এই প্রকল্প বাস্তবায়িত হল।