প্রাণপন চেষ্টা চলছে করোনা ভ্যাকসিন আবিষ্কারের, সম্ভাব্য দাম জানালো সিরাম ইনস্টিটিউট

নিজস্ব প্রতিবেদন : করোনা ভাইরাসের সংক্রমণের জেরে ভেঙে পড়েছে বিশ্বের অর্থনীতি। সমান্তরালভাবে ভেঙে পড়েছে ভারতের অর্থনীতিও। ভারতের মতো দরিদ্র দেশে দীর্ঘ লকডাউনের কারণে গরিবদের হাতের নগদ অর্থ প্রায় শেষের দিকে। এখন সকলেই এই ভাইরাসের থেকে মুক্তি পেতে চাইছেন, ফিরতে চাইছেন স্বাভাবিক জীবনে।মুক্তি পাওয়া স্বাভাবিক জীবনে ফেরার এসবের জন্য প্রয়োজন এই ভাইরাসকে প্রতিরোধ করার মত ওষুধ অথবা ভ্যাকসিনের আবিষ্কার। সেদিকেই তাকিয়ে বিশ্বের কোটি কোটি মানুষ। তাই সবার মধ্যেই একটাই প্রশ্ন টিকা কবে আসবে? আর টিকা এলেও সেই টিকা বা ভ্যাকসিনের দাম কত হবে?

আর এই পরিস্থিতিতে ভ্যাকসিন আবিষ্কার নিয়ে আশার আলো দেখাচ্ছে বিশ্বের বৃহত্তম ভ্যাকসিন প্রস্তুতকারক সংস্থা ‘সিরাম ইনস্টিটিউট অফ ইন্ডিয়া’। সংস্থার প্রধান আদার পুনেওয়ালা জানান, “বিজ্ঞানীরা প্রাণপন চেষ্টা চালাচ্ছেন ভ্যাকসিন আবিষ্কারের জন্য। এপ্রিল মাসেই ট্রায়াল শুরু হয়ে গেছে। সবকিছু ঠিকঠাক চললে হয়তো এবছরের সেপ্টেম্বরেই বাজারে চলে আসতে পারে করোনা ভাইরাসের টিকা।”

ভ্যাকসিন প্রস্তুতকারক এই সংস্থা ‘সিরাম ইনস্টিটিউট অফ ইন্ডিয়া’ তাদের ভ্যাকসিন তৈরি করার কাজ শুরু করেছে ইবোলার ভ্যাকসিন আবিষ্কারক গবেষক দলের সাথে। গত মে মাস থেকেই শুরু হয়েছে ভ্যাকসিনের প্রোডাকশন। আর ইতিমধ্যেই এই ভ্যাকসিনের ট্রায়াল শুরু হয়েছে কোভিড-১৯ সংক্রামিত ব্যক্তিদের উপর। যদিও এই সংস্থা এত তাড়াতাড়ি বাজারে ভ্যাকসিন আনার দাবি করলেও অন্যান্য গবেষকরা এই দাবি নিয়ে প্রশ্ন তুলতে শুরু করেছেন।

অন্যান্য গবেষকদের দাবি, করোনার টিকা বাজারে আসতে এখনও অন্তত দেড় বছর সময় লাগবে। কিন্তু সংস্থাটি এত কম সময়ে কিভাবে করোনার টিকা বাজারে প্রস্তুত করার দাবি করছেন? আর এই প্রশ্নের উত্তরে সিরাম ইন্সটিউটের প্রধান আদার পুনেওয়ালা জানিয়েছেন, “কোডাজেনিক্স সংস্থার সাথে কাজ করার সময় আমরাও ভেবেছিলাম ভ্যাকসিন আবিষ্কার করতে অনেক সময় লাগবে। কিন্তু অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকদের সাথে কাজ করার ফলে আমাদের কাজে বেশ গতি এসেছে। এমনকি ২৩শে এপ্রিল থেকে আমরা ভ্যাকসিনের ট্রায়ালও শুরু করে দিয়েছি।”

আর এসব ছাড়াও সিরাম ইন্সটিউটের প্রধান আদার পুনেওয়ালা জানিয়েছেন, “এই মূহূর্তে সব কাজ ছেড়ে দিয়ে আমাদের নজর শুধু করোনা ভাইরাসের টিকা আবিষ্কারের দিকেই। যদিও এখনও এর দাম সম্পর্কে নির্দিষ্ট কিছু বলা যায় না। তবে মনে করা হচ্ছে ভ্যাকসিনটির দাম ১০০০ টাকার কাছাকাছি হবে।”

এমনকি বিশ্বের বৃহত্তম টিকা প্রস্তুতকারক সংস্থা ভারতের সিরাম ইনস্টিটিউটের প্রধান কার্যনির্বাহী কর্মকর্তা আদর পুনাওয়ালা গত মঙ্গলবারই জানান, প্রতিষেধকটির উৎপাদনের জন্য ১০ কোটি মার্কিন ডলার অর্থাৎ ভারতীয় মুদ্রায় প্রায় ৭৫০ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। খুব শীঘ্রই এই প্রতিষেধক উৎপাদনের কাজও শুরু হয়ে যাবে। তবে ভ্যাকসিনের চূড়ান্ত পর্বের হিউম্যান ট্রায়ালের ফলাফল না পাওয়া পর্যন্ত অর্থাৎ এটির সুরক্ষা ও কার্যকারিতার দিক বিবেচনা না করা পর্যন্ত ভ্যাকসিনটিকে বাজারে ছাড়া হবে না।