নিজস্ব প্রতিবেদন : স্বাধীন ভারতে এমনিতেই সর্বোচ্চ সাজা ফাঁসির সাক্ষী খুব কম। এরপর আবার কোন মহিলা। এখনো পর্যন্ত স্বাধীন ভারতে কোন মহিলার ফাঁসির নজির না থাকলেও সম্প্রতি এমনটাই হতে চলেছে। স্বাধীন ভারতে প্রথম ফাঁসির কাঠে চড়তে চলেছেন আমরোহার শবনম। উত্তরপ্রদেশের মথুরা, যেখানে মহিলাদের ফাঁসির জন্য বিশেষ ব্যবস্থা রয়েছে সেই জায়গা ইতিমধ্যেই পরিদর্শন করেছেন মিরাটের পবন জল্লাদ। পাশাপাশি আসছে বক্সার জেলের বিশেষ দড়ি। যদিও এখনও ফাঁসির দিনক্ষণ ঠিক হয়নি।
কিন্তু প্রশ্ন হলো কি এমন অপরাধ করেছেন এই শবনম? অপরাধ শুনলে যে কারোর গা কাঁটা দেবে। ঘটনা ২০০৮ সালের ১৪ই এপ্রিল। অদম্য প্রেম থেকে নিজের পরিবারের সাতজনকে খুন। আর সেই ঘটনায় দোষী সাব্যস্ত হন তিনি। সুপ্রিম কোর্ট তাকে ভারতীয় সংবিধানের সর্বোচ্চ সাজা মৃত্যুদণ্ড বহাল রাখে। রাষ্ট্রপতিও প্রাণভিক্ষার আরজি ফিরিয়ে দিয়েছেন। সুতরাং শবনমই স্বাধীন ভারতের প্রথম কোন মহিলা যার ফাঁসি হতে চলেছে।
শবনম হলেন উত্তর প্রদেশের আমরোহা জেলার হাসানপুর এলাকার বাওয়ানখেদি গ্রামে বসবাসরত শিক্ষক শওকত আলির মেয়ে। আর তিনি গ্রামেরই এক যুবক সেলিমের সাথে সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন। কিন্তু তাদের এই সম্পর্ক মেনে নেয়নি শবনমের পরিবার। অন্যদিকে শবনমও ছিল নাছোড়বান্দা। যে কারণে প্রায় দিন রাতে পরিবারের সদস্যদের ঘুমের ওষুধ খাইয়ে সেলিমের সাথে দেখা করতে যেত সে। এই ভাবেই চলত দীর্ঘদিন।
একদিন শবনম এবং সেলিম ঠিক করেন পরিবারের সকলকে শেষ করে দেওয়ার। এরপর পরিবারের সকলকে ঘুমের ওষুধ খাইয়ে কুঠার দিয়ে সকলকে কুপিয়ে খুন করেন। সকাল বেলায় রটে যায় দুষ্কৃতীরা এই ঘটনা ঘটিয়েছে। কিন্তু তদন্তে ধীরে ধীরে সমস্ত ঘটনা সামনে আসে। গ্রেপ্তার করা হয় শবনম এবং সেলিমকে। পরে দুজন পুলিশি জেরায় সমস্ত ঘটনা স্বীকারও করে নেয়। সেদিনের সেই ঘটনায় প্রাণ হারান শবনমের বাবা-মা, ১০ মাসের ভাইপো সমেত পরিবারের সাতজন।
[aaroporuntag]
এমনিতে শবনম বেশ শিক্ষিত। আদরের সাথে পরিবারে মানুষ হওয়ার পর স্নাতকোত্তর পাস করেন। যার পর শিক্ষিকা হিসেবে পেশায় নিযুক্ত হন। তবে এই ছন্দ জীবনের পতন ঘটে সেলিমের সাথে প্রেম এবং সেই প্রেমকে পরিণতি দেওয়ার জন্য নির্মম পথ বেছে নেওয়ায়।