নিজস্ব প্রতিবেদন : চার দফা ভোটের দিন শীতলকুচির ১২৬ নং বুথ আজও দগদগে রাজ্যের বাসিন্দাদের সামনে। সেদিনের সেই ঘটনায় বাহিনীর গুলিতে প্রাণ হারান চারজন। অন্যদিকে এই শীতলকুচিতেই সাতসকালেই প্রাণ হারাতে হয় আরও এক যুবককে। মোটের উপর এক দফা নির্বাচনেই পাঁচ পাঁচটি তরতাজা প্রাণ উধাও হয়ে যায়। কিন্তু কেন? ঠিক কী ঘটেছিল?
শীতলকুচির সেদিনের ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে সম্প্রতি আরও একটি ভিডিও ছড়িয়ে পড়েছে। যে ভিডিওটি নিয়ে ইতিমধ্যে একাধিক সংবাদমাধ্যম সংবাদ পরিবেশন করেছে বা করছে। পাশাপাশি সামনে এসেছে প্রিসাইডিং অফিসারের বক্তব্য। ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, একদল মানুষ বাঁশ লাঠি নিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে। আর তার কিছুক্ষণের মধ্যেই শোনা যায় বুলেটের শব্দ। মুহুর্তের মধ্যে এলাকায় আর্তনাদ শুরু হয়। শুরু হয় হাহাকার। তার কিছুক্ষণের মধ্যেই বুথের দরজা বাঁশ দিয়ে, লাথি দিয়ে ভেঙ্গে ফেলার চেষ্টা। ওই ভিডিওর কোনোরকম সত্যতা যাচাই করেনি BanglaXp।
এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে ওই বুথের থাকা থার্ড প্রিসাইডিং অফিসার সর্বভারতীয় এক সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে জানিয়েছেন, “বুথের ভিতরে ছিলাম। যে কারণে বাইরের দৃশ্য অতটা ভালো করে দেখতে পাইনি। তবে লাইনে বেশ ভালই লোক ছিলেন। কিন্তু শান্তিপূর্ণভাবে ভোট হতে হতে হঠাৎ গন্ডগোল। আর সেই গন্ডগোল বাড়িতে রেখে আমরা দরজা বন্ধ করে দিই। তার কিছুক্ষণের মধ্যেই গুলির শব্দ পাওয়া যায়। কিছুক্ষণের মধ্যেই একদল বুথের ভিতরে ঢুকে ইভিএম চুরি করে নিয়ে চলে যায়। ইভিএম চুরি করার সময় আমাদের মা’রধর করে। ভেবেছিলাম আমরা হয়তো বেঁচে ফিরবো না। কিছুক্ষণের মধ্যে আরও কিছু লোক বুথের ভিতরে ঢুকে আমাদের রক্ষা করেন এবং পরে পুলিশ ও কেন্দ্রীয় বাহিনী এসে আমাদের বের করে নিয়ে যান।”
তবে এটাও ঠিক যে সম্প্রতি যে ভিডিওটি সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়েছে তাতে যে দৃশ্য ধরা পড়েছে সেখানে খুব একটা বেশি মানুষের সমাগম লক্ষ্য করা যাচ্ছে না। পাশাপাশি তাদের হাতে বাঁশ এবং লাঠি থাকলেও অন্য কোন অস্ত্র চোখে পড়ছে না। আবার যে জায়গায় বাহিনী গুলি চালিয়েছে সেই মুহূর্তও দেখা যাচ্ছে না এই ভিডিওতে। তবে আওয়াজ শুনে বোঝা যাচ্ছে কিছুটা দূরে হলেও গুলি চলছে। সুতরাং এই ভিডিও শেষ কথা নয় বলেই মনে করছেন রাজনৈতিক মহলের বিশেষজ্ঞরা।
অন্যদিকে এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে কোচবিহারের পুলিশ সুপার আগেই জানিয়েছেন, “একটি গুজবকে কেন্দ্র করে ৩০০ থেকে ৩৫০ জন লোক জড়ো হন। তারপর গন্ডগোল শুরু হলে বাহিনী থেকে হাতিয়ার কেড়ে নেওয়ার চেষ্টা চালায় তারা। বাহিনী আত্মরক্ষার্থেই গুলি চালিয়েছে।”
[aaroporuntag]
অন্যদিকে এই ঘটনার রাজনৈতিক তরজা এখনো অব্যাহত। তৃণমূল ঘটনার জন্য কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ এবং কেন্দ্রীয় বাহিনীর ওপর দোষারোপ করছে। অপরদিকে বিজেপির পাল্টা দাবি, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্ররোচনামূলক বক্তব্যের জেরেই ঘটনা ঘটেছে।