নিজস্ব প্রতিবেদন : দেবী লক্ষ্মী হলেন সৌভাগ্যের দেবী। তিনি জগৎপালক বিষ্ণুর পত্নী। তিনি ধন-ঐশ্বর্য সৌভাগ্য দান করার পাশাপাশি ভক্তিও দান করেন। দেবীর অপর নাম শ্রী। শ্রী অর্থে সুন্দর। সমগ্র জগতকে তিনি শস্য-শ্যামলা করে তোলেন। দেবী সম্পর্কে এই কথাগুলি প্রত্যেকটি পুরাণে কমবেশি একই রকম পাওয়া যায়। তবে দেবীর উৎপত্তি সম্পর্কে এক এক পুরাণ এক এক রকম কথা বলে।
কোন পুরাণ মতে দেবী হলেন প্রজাপতি ব্রহ্মার কন্যা। জগতের সৃষ্টিকর্তা ব্রহ্মা অর্থাৎ প্রজাপতিই তাকে সৃষ্টি করেছেন। আবার কোন পুরাণ বলে তিনি ভৃগুর কন্যা। ভৃগু পত্নী খ্যাতির গর্ভে তিনি জন্মগ্রহণ করেন। জন্মের পর তিনি নারায়ণকে লাভের জন্য ঘোর তপস্যা শুরু করেন। এই সময় অন্যান্য দেবতারা দেবীকে ছলনা করতে
নারায়ণ সেজে দেবীর সামনে উপস্থিত হন। দেবী জানতেন একমাত্র নারায়ণ ব্যতীত আর কেউ বিশ্বরূপ দেখাতে পারেন না। তাই তিনি দেবতাদেরকে বিশ্বরূপ দেখাতে বলেন। দেবতারা বিশ্বরূপ দেখাতে না পেরে লজ্জিত হয়ে চলে যান। এরপর দেবীর তপস্যায় তুষ্ট হয়ে স্বয়ং নারায়ন দেবের সম্মুখে আবির্ভূতা হন এবং দেবীকে স্ত্রী রূপে গ্রহণ করেন।
আরেকটি পুরান মতে দেবী সমুদ্রমন্থনের সময় সমুদ্রের গর্ভ থেকে উত্থিত হয়েছিলেন। ঋষি দুর্বাসার শাপে ইন্দ্রলোক শ্রীহীন হয়ে যায়। এরপর দেবতা ও অসুরেরা সম্মিলিত হয়ে সমুদ্র মন্থন করেন। এই সমুদ্রমন্থনের সময় এক এক করে বিপুল ধনরত্ন থেকে শুরু করে চন্দ্রদেব উত্থিত হন। এই সমুদ্রমন্থনের সময় দেবী লক্ষী দেবীর ও উত্থান হয়। এরপর জগৎপালক শ্রী বিষ্ণু দেবীকে পত্নী রূপে গ্রহণ করেন।
এইবছর লক্ষ্মী পুজোর নির্ঘন্ট-
লক্ষ্মী পুজোর তিথি শুক্রবার সন্ধ্যা ৫:২০ নাগাদ লাগছে আর শনিবার সন্ধ্যে সাড়ে সাতটায় ছাড়ছে।
সামনের শুক্রবার লক্ষ্মী পুজো। এইদিন দেবীকে সন্তুষ্ট করতে হলে সারাদিন উপোস থেকে সন্ধ্যের দিকে দেবীর আরাধনা করুন অন্যথায় সাত্ত্বিক আহার গ্রহণ করে দেবীর মূর্তির সামনে ভক্তিপূর্বক একটি দ্বীপ প্রজ্জ্বলন করুন।
দেবী বিষ্ণুপত্নী। তাই ক্রুর আচরণ, অসত্য ভাষণ, নির্মমতা দেবী কখনো সহ্য করেন না। তাই এই আচরণগুলিকেও পরিহার করুন।
তবে দেবী লক্ষ্মীর সঙ্গে নারায়ণের আরাধনা করলে দেবী অধিক প্রীত হন। তাই যদি একই সাথে লক্ষ্মীনারায়ণের পুজো দেওয়া যায় তাহলে ঘরের মধ্যে দেবী অচলা হয়ে অবস্থান করবেন।