Natarajan Chandrasekaran, a farmer’s son, is today the CEO of Air India: ভারতবর্ষের শীর্ষস্থানীয় কোম্পানিগুলির মধ্যে অন্যতম হলো টাটা সন্স কোম্পানি। যাঁর জন্য আজ কোম্পানির এত নাম ডাক তিনি হলেন রতন টাটা। এই কোম্পানির প্রতি তাঁর যে কতটা ভালোবাসা তা তিনি কাজের মাধ্যমে প্রকাশ করেছেন। শুধু টাটা গ্রুপের প্রতি নয়, সাধারণ মানুষের প্রতিও অগাধ ভালোবাসা রয়েছে রতন টাটার। পড়ুয়া থেকে শুরু করে বহু মানুষকে বিভিন্ন কাজে সাহায্য করেছেন তিনি। বর্তমানে তিনি তাঁর কোম্পানির কমান্ড হ্যান্ডওভার করেছেন কাছের মানুষ নটরাজন চন্দ্রশেখরনের (Natarajan Chandrasekaran) হাতে। যার উপর অগাধ ভরসা রতন টাটার। কে এই নটরাজন চন্দ্রশেখরন? তাঁর সাথে রতন টাটা সম্পর্ক কিভাবে গড়ে উঠলো?
শৈশবকাল কষ্টে কাটলেও বর্তমান সময়ে বিলাসিতায় জীবন কাটান এন চন্দ্রশেখরন। ১৯৭৩ সালে জন্মগ্রহণ করেন চন্দ্রশেখরন (Natarajan Chandrasekaran)। তামিলনাড়ুর এক মধ্যবিত্ত কৃষক পরিবারের ছেলে হলেন টাটা কোম্পানির সিইও। ছোটবেলায় খুবই দারিদ্রতায় কাটে চন্দ্রশেখরনের জীবন। কোনো গাড়িতে নয়, তিন কিলোমিটার হেঁটে ভাই-বোনেদের সাথে স্কুলে যেতেন তিনি। কষ্টের মধ্যে দিয়ে জীবন কাটলেও পড়াশোনায় তিনি কোনো খামতি রাখেননি। স্কুলের পড়াশোনা শেষ করে স্নাতক পাশ করেন কোয়েম্বাটুর ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজি থেকে। তারপর স্নাতকোত্তর ডিগ্রী অর্জন করেন তামিলনাড়ুর তিরুচিরাপল্লীর আঞ্চলিক ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ থেকে।
পড়াশোনার প্রতি তাঁর যেমন আগ্রহ ছিল তেমন মেরিটও ছিল দারুন। পড়াশোনা শেষ করে ২০০৭ সালে টিসিএস বোর্ডে অন্তর্ভুক্ত হয়ে CEO-এর দায়িত্ব পান এন চন্দ্রশেখরন। তার দু বছরের মাথায় অর্থাৎ ২০০৯ সালে সিইও হিসেবে নিযুক্ত হন। বয়স তখন ৪৬। TCS কোম্পানির সিইওদের মধ্যে বয়সে জুনিয়র ছিলেন এন চন্দ্রশেখরন। টাটা গ্রুপের মুনাফা অর্জনেও দারুন কৃতিত্ব রয়েছে চন্দ্রশেখরনের। পাঁচ বছরের শাসনকালে টাটা কোম্পানির আয় বাড়িয়েছে ৬.৩৭ লক্ষ কোটি টাকা থেকে ৯.৪৪ লক্ষ কোটি টাকায়। সেই হিসেবে তাঁর বেতনও বৃদ্ধি হয়েছে। ২০১৯ সালে বার্ষিক বেতন পেতেন ৬৫ কোটি টাকা। পরবর্তীতে ২০২২ সালে বার্ষিক বেতন দাঁড়িয়েছে ১০৯ কোটি টাকায়।
আরও পড়ুন ? TCS: এই জায়গায় টাটাদের কাছে হার মানল বিশ্বের তাবড় তাবড় সংস্থা! ৯ বছর ধরে রাখল ১ নং স্থান
কথায় আছে কষ্ট করলে কেষ্ট মেলে। ফলেই কৃষকের ছেলে হয়ে আজ কোটি টাকার ফ্ল্যাটে বসবাস করেন এন চন্দ্রশেখরন। নিজের আয় করা টাকায় ২০২০ সালে মুম্বাই পেডার রোডে ডুপ্লেক্স ফ্ল্যাট কেনেন। যার দাম ৯৮ কোটি টাকা। যে ফ্ল্যাটের মাসিক ভাড়া ২০ লক্ষ টাকা। যা নামিদামি শিল্পপতি মুকেশ আম্বানির বাড়ির খুব কাছেই অবস্থিত। তবে সর্বক্ষণ যে তিনি টাকার পিছনে ছুটেন তা কিন্তু নয়। শরীরের দিকেও বিশেষ নজর দেন তিনি। স্বাস্থ্য ঠিক রাখতে বিশেষ রুটিন মেনে চলেন। ভোর ৪টের সময় উঠে দৌড়াতে যান। অনেকেই হয়তো জানেন না তিনি একজন ম্যারাথন দৌড়বিদ। এই হাফ ম্যারাথনে অংশগ্রহণ করে তিনি বিশ্ব ভ্রমণ করেছিলেন।
এই সমস্ত কিছুর পাশাপাশি তিনি রতন টাটার খুব কাছের মানুষ হয়ে উঠেছেন। অনেকেই তাঁকে রতন টাটার ডান হাত বলে মনে করেন। মূলত ব্যবসায়িক পরিকল্পনা, ব্যবসা সম্পর্কিত নানান পরামর্শ, বোঝাপড়া এসব কিছুই তাঁকে রতন টাটার ঘনিষ্ঠ করে তুলেছে। অনেকের কাছেই এটা অজানা যে, নটরাজন চন্দ্রশেখরন (Natarajan Chandrasekaran) আজ যে কোম্পানির সিইও সেই কোম্পানিতেই তিনি ইন্টার্নশিপ করতেন। রতন টাটার খুবই বিশ্বস্ত মানুষ তিনি।