পাত্তা না পাওয়া ছাত্রনেতা থেকে তাবড় মন্ত্রী! কিভাবে এত বড় উত্থান হলো বালুর

Shyamali Das

Published on:

নিজস্ব প্রতিবেদন : রেশন দুর্নীতি মামলার তদন্ত এগোতেই ইডির জালে ধরা পড়েন রাজ্যের প্রাক্তন খাদ্য মন্ত্রী তথা বনমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক (Jyotipriya Mallick)। জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক যিনি এলাকায় বালু দা নামেই পরিচিত, তার উত্থানও কিন্তু বেশ রোমাঞ্চকর। ছিলেন এক প্রকার কোন ঠাসা ছাত্রনেতা, আইনের ছাত্র আর তারপরেই ধাপে ধাপে তার উত্থান এবং শেষ পর্যন্ত হয়ে ওঠেন রাজ্যের মন্ত্রী।

সম্প্রতি গ্রেপ্তার হওয়া জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের সম্পত্তির উত্থান যেমন মানুষের নজরে এসেছে ঠিক সেইরকমই যদি পিছন ফিরে তাকানো হয় তাহলে তার রাজনৈতিক উত্থানও চোখে পড়ার মতো। একসময় তিনি ছাত্র পরিষদ করতেন বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়ে। তবে এরপর মন্ত্রী হয়ে ওঠার আগেও তিনি একজন দক্ষ রাজনীতিক হিসেবে দলের বহু গুরু দায়িত্ব সামলেছেন। এমনকি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যাদের চোখ বন্ধ করে ভরসা করতে পারেন তাদের মধ্যে একজন হলেন বালু।

তৃণমূলের প্রতিষ্ঠার সময় যাদের স্বাক্ষর রয়েছে তাদের মধ্যে একজন হলেন একসময় কলেজ স্ট্রিট দাপিয়ে বেড়ানো, কংগ্রেস করা ছেলেটির। রাজনৈতিক জীবনে বহুবার ধাক্কা খেতে দেখা গিয়েছে জ্যোতিপ্রিয় মল্লিককে, বহুবার কোণ ঠাসা হয়ে পড়তে দেখা গিয়েছে তাকে, তবে কখনোই তাকে জমি ছেড়ে চলে যেতে দেখা যায়নি। যদিও এমন একজন দুর্দণ্ড প্রতাপ নেতাকে এখন দুর্নীতির জালে পড়ে গ্রেপ্তার হতে হল।

তিনি একসময় ছাত্র পরিষদ নেতা ছিলেন এবং মধ্য কলকাতায় রাজনীতি করতেন। কিন্তু উল্লেখযোগ্য বিষয় হল মধ্য কলকাতাতে রাজনীতি করলেও সৌমেন মিত্র গোষ্ঠীর সঙ্গে তার সম্পর্ক ছিল না। পরে যখন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যুব কংগ্রেস সভানেত্রী হন তখন তিনি তার সান্নিধ্যে আসেন এবং অলক দাসের সঙ্গে জুটি বেঁধে উত্তর ২৪ পরগনায় সংগঠন চালাতে শুরু করেন। পরবর্তীতে তিনি ২০০১ সালে বিধায়ক হন। এরপরই ২০০৬ সালের মাঝামাঝি সময় থেকে তিনি হয়ে ওঠেন উত্তর ২৪ পরগনার রাজনীতিতে শেষ কথা।

জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক ছিলেন বড়মা বীণাপাণি দেবীর আশীর্বাদ ধন্য। যে কারণেই তিনি পুরো মতুয়া সম্প্রদায়ের ভোটব্যাঙ্ক তৃণমূলে আনতে সক্ষম হয়েছিলেন। এর আগে কোন রাজনৈতিক দল তাদের ভোট ব্যাঙ্কে মতুয়া সম্প্রদায়কে এইভাবে টানতে পারিনি। মতুয়া সম্প্রদায়ের ভোট এইভাবে টানার ফলেই জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের গুরুত্ব অনেক বেড়ে যায়। এমনকি উত্তর ২৪ পরগনায় মুকুল রায়ের মতো নেতা থাকলেও জ্যোতিপ্রিয়র গুরুত্ব কোনো দিন কমেনি। পরবর্তীতে ২০১১ সালে যখন তৃণমূল সরকারে আসে সেই সময় প্রথম খাদ্যমন্ত্রী হিসেবেই বেছে নেওয়া হয় জ্যোতিপ্রিয়কে। এরপর থেকেই তিনি খাদ্য মন্ত্রীর দায়িত্ব সামলাচ্ছিলেন। তবে এবার তাকে খাদ্যমন্ত্রী থেকে সরিয়ে করা হয় বনমন্ত্রী।