ভিনরাজ্যে আটকে পড়া শ্রমিক, বাসিন্দা ও পড়ুয়াদের ফেরাতে চলেছে রাজ্য সরকার

নিজস্ব প্রতিবেদন : ভিনরাজ্যে যে সকল শ্রমিক, চিকিৎসা করাতে যাওয়া বাসিন্দা ও ছাত্রছাত্রীরা এই করোনার লকডাউনের চক্করে পড়ে আটকে গেছেন তাদের প্রতি আমাদের রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বরাবরই মানবিক দৃষ্টিভঙ্গি দেখিয়ে এসেছেন। তাদের পাশে তিনি আছেন এই আশ্বাস তিনি বারংবার দিয়েছেন। এবার ভিনরাজ্যে আটকে পড়া সেই সকল ছাত্র-ছাত্রী ও বাসিন্দাদের পশ্চিমবঙ্গে ফেরাতে বিশেষ উদ্যোগী হলো রাজ্য সরকার।

রাজস্থানের কোটায় যেসকল ছাত্রছাত্রীরা আটকে পড়েছেন তাদের ফিরিয়ে আনতে বিশেষ বাস পাঠানোর ব্যবস্থা করবেন মুখ্যমন্ত্রী। আবার চিকিৎসা করাতে গিয়ে যে সকল মানুষরা চেন্নাই ও ভেলোরে গিয়ে সেখানে আটকে পড়েছেন সেই সকল মানুষদের ফেরাতে এবং বাংলার সকল পরিযায়ী শ্রমিকদের বাংলায় ফিরিয়ে আনার জন্য কেন্দ্রকে বিশেষ ট্রেনের বন্দোবস্ত করার আর্জি করেছেন মুখ্যমন্ত্রী।

ইঞ্জিনিয়ারিং প্রবেশিকা পরীক্ষার প্রস্তুতি নেওয়ার জন্য রাজস্থানের কোটায় গিয়ে আটকে পড়েছে পশ্চিমবঙ্গের পড়ুয়ারা। সংখ্যায় তারা প্রায় আড়াই হাজারের বেশি। সেই সকল পড়ুয়াদের রাজ্যে ফিরিয়ে আনার ব্যাপারে রাজস্থান সরকারের সাথে কথা বলেছেন মুখ্যমন্ত্রী।

এক্ষেত্রে একটি সমস্যাও রয়েছে। এত সংখ্যক পড়ুয়াকে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে ফিরিয়ে আনতে গেলে প্রায় ৩০০ টি এসি বাসের দরকার। আর রাজস্থান থেকে বাংলায় আসার পথে উত্তরপ্রদেশ, ঝাড়খণ্ডের মত কতগুলি রাজ্য পেরিয়ে আসতে হবে।

এত লম্বা রাস্তা পেরোবার জন্য সময় লাগবে তিন দিন তিন রাত। এর ফলে রাতে ওই রাজ্যগুলিতেই ওই পড়ুয়াদের থাকা খাওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে। কিন্তু এই মুহূর্তে করোনাজনিত কারণে প্রতিটি রাজ্যের এমন করুণ পরিস্থিতি যে এত সংখ্যক পড়ুয়ার জন্য থাকা-খাওয়ার এইরকম বিশাল আয়োজন করাটা তাদের পক্ষে একটি চাপের বিষয়। তাই একসাথে এত সংখ্যক পড়ুয়াকে ফেরত না এনে অল্প সংখ্যক করে করে কয়েকবারে ফেরানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন রাজ্য সরকার।

সোমবার একটি ট্যুইট করে মুখ্যমন্ত্রী জানান, “আমি যতদিন বেঁচে আছি বাংলার কেউ কখনো নিজেকে অসহায় মনে করবেন না। আপনাদের রাজ্যে ফিরিয়ে আনতে আমাদের তরফ থেকে চেষ্টার কোনরকম খামতি রাখবো না।”

মুখ্যমন্ত্রী পরে আরও একটি ট্যুইট করে লিখেছেন, “আমি ব্যক্তিগতভাবে পুরো বিষয়টি দেখছি। আমার তরফ থেকে সাহায্যের কোনো খামতি থাকবে না। কোটায় আটকে থাকা সকল পড়ুয়াদের ফিরিয়ে আনা হবে। খুব শীঘ্রই তারা বাড়িতে ফিরে আসবেন।”

মুখ্যমন্ত্রীর কাছ থেকে এইরকম আশ্বাসবাণী পেয়ে রাজ্যে আটকে থাকা ছাত্রছাত্রী এবং পরিযায়ী শ্রমিক উভয়েই কিছুটা আশ্বস্ত হচ্ছেন।