হিমাদ্রি মণ্ডল : বর্তমান রাজ্য রাজনীতির অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু হলেন তৃণমূল বিধায়ক তথা রাজ্যের মন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারী। বর্তমানে তাঁকে বিভিন্ন অনুষ্ঠানে কোনরকম দলীয় পতাকা ছাড়াই দেখতে পাওয়া এবং দলের একাংশের বিরুদ্ধে ইঙ্গিত ইশারা রাজ্য রাজনীতি চর্চায় এনেছে তাঁকে।
এমনকি দলের একাংশকেও তাঁর বিরুদ্ধে মুখ খুলতে দেখা গিয়েছে। এমত অবস্থায় রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা তো একপ্রকার মনেই করছেন ‘এই তিনি দল ছাড়লেন বলে’। আর দল ছেড়ে কি নতুন দল, নাকি গেরুয়া শিবির, তাই এখন সব থেকে বড় জল্পনা।
আর এই দলবদল নিয়ে যখন জল্পনা বৃহৎ তখনই আবার গতকাল শুভেন্দু অধিকারী একটি প্রশাসনিক কর্মসূচিতে উপস্থিত হয়ে জল্পনায় আরও ঘি ঢেলে দেন। একদিকে দলের বিরুদ্ধে ক্ষোভ, অন্যদিকে শুভেন্দু অধিকারীকে নিয়ে বিজেপি নেতাদের নানান মন্তব্য, আবার প্রশাসনিক কর্মসূচিতেও তিনি। আর এমন জল্পনার মুহূর্তেই দুই মেদিনীপুর সহ বিভিন্ন জায়গায় শুভেন্দু অধিকারীর সমর্থনে পোস্টার ‘আমরা দাদার অনুগামী।’
আর এই পোস্টটার এবার বীরভূমের সিউড়িতে। সোমবার সন্ধ্যা থেকে সিউড়ি শহরের বিভিন্ন জায়গায় লক্ষ্য করা গিয়েছে ‘শুভেন্দু অধিকারী জিন্দাবাদ। আমরা দাদার অনুগামী’ পোস্টার। আর সিউড়ি শহরে এমন পোস্টার রাজনৈতিক ভাবে বেশ তাৎপর্যমণ্ডিত।
মেদিনীপুরের অধিকারী পরিবারের রাজনৈতিক ক্ষমতা দীর্ঘদিনের। দুই মেদিনীপুরে এই অধিকারী পরিবারের যথেষ্ট আধিপত্য রয়েছে বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা। শুভেন্দু অধিকারী তার এবং তাদের পরিবারের এই আধিপত্যের কথা কৌশলী বক্তব্যে জানিয়েও দিয়েছেন। তিনি তার বক্তব্যে বলেছেন, “আমি প্যারাসুটে নামিনি এবং লিফলেটে উঠিনি। ছোটলোকদের দিয়ে বাজে কথা বলিয়ে, ভেবেছে আমি উত্তর দেব, কুকুর পায়ে কামড়ালে, মানুষ কখনো কুকুরের পায়ে কামড়ায় না।”
আর এই মন্তব্যে আবার মমতা শিবির থেকে পাল্টা চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিয়েছেন কখনো ফিরহাদ হাকিম, কখনো অখিল গিরি। তবে এই সকল চ্যালেঞ্জকে কোনরকম পাত্তা দিতে নারাজ শুভেন্দু অধিকারী। যে কারণে তিনি আবার প্রত্যুত্তরে জানিয়েছেন, “আমরা চলি সম্মুখপানে কে আমাদের বাঁধবে, রইল যারা পিছুর টানে কাঁদবে তাঁরা কাঁদবে।”
তবে দাদার অনুগামী পোস্টার সিউড়িতে কে বা কারা সাটালো তা সম্পর্কে কিছু জানা যায়নি। সোমবার হঠাৎ সন্ধ্যা থেকে এই পোস্টার লক্ষ্য করা যায়। আর তারপর থেকেই শহর জুড়ে শুরু হয় জল্পনা।
যদিও এবিষয়ে সিউড়ি শহর তৃণমূলের তরফ থেকে বলা হচ্ছে, “এই সবকিছু উটকো লোকের কাজ। যারা বিতর্ক উস্কে দেওয়ার জন্য এইসব কাজ করছেন। শুভেন্দু অধিকারী তৃণমূলেরই একটি অংশ, তিনি রাজ্যের একজন দায়িত্বপ্রাপ্ত মন্ত্রী, তিনি তো কখনো মুখ ফুটে কিছু বলেননি। পুরো বিষয়টি বীরভূম জেলা সভাপতি দেখবেন।”