অমরনাথ দত্ত : মন্ত্রিত্ব ছাড়ার আগেই অনুব্রত গড়ে সিউড়িতে একবার ‘আমরা দাদার অনুগামী’ এই পোস্টটার চোখে পড়েছিল। যা নিয়ে প্রথম দফায় একবার সরগরম হতে দেখা গিয়েছিল বীরভূমকে। যদিও অনুব্রত মণ্ডল এপ্রসঙ্গে দাবি করেছিলেন, ‘ওই একজন শুভেন্দুর পুরাতন ছবি টাঙ্গিয়ে ছিলো বাসস্ট্যান্ডের কাছে। পরে খুলে নিয়েছে।’
আর বীরভূম জেলা তৃণমূল সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলের এই দাবির পর সত্যিই জেলাজুড়ে আর কোথাও শুভেন্দু অনুগামী পোস্টার সেভাবে চোখে পড়তে দেখা যায়নি। কিন্তু বুধবার শুভেন্দুর বিধায়ক পদ থেকে ইস্তফা দেওয়া এবং দলের সাথে সমস্ত রকম সম্পর্ক ছিন্ন করার পরেই ফের অনুব্রত গড়ে শুভেন্দুর নামে পোস্টার পরতে দেখা গেল। বোলপুর থেকে মাত্র ছয় কিলোমিটার দূরে দেওয়ালে দেওয়ালে শুভেন্দুর সমর্থনে পোস্টারের ছয়লাপ হতে দেখা গেল রায়পুর গ্রাম পঞ্চায়েতের বিভিন্ন এলাকাকে।
শুভেন্দু অধিকারীর তৃণমূল ছেড়ে দেওয়া এবং গেরুয়া শিবিরের নাম লেখানোর যে প্রবল সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে তাতে রাজ্যের শাসক দল তৃণমূলের চরম থেকে চরমতম ধাক্কা বলেই মনে করছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা। কারণ শুধু শুভেন্দু অধিকারী নন, তার পিছনে পিছনে তৃণমূলের শীর্ষস্থানীয় একাধিক নেতা এবং বিধায়ককে ইতিমধ্যেই পদত্যাগপত্র জমা দিতে লক্ষ্য করা গেছে এবং সেই ধারাবাহিকতায় এখনো বজায় রয়েছে।
দল ছেড়ে দেওয়া বা দল ছাড়া জল্পনা শুধু শুভেন্দুর স্পর্শে থাকা জেলাগুলিতেই, এমনটাও কিন্তু নয়। অনুব্রতর খাসতালুকেও সেই জল্পনা জিয়ে রয়েছে। কেননা অনুব্রত ঘনিষ্ঠ তৃণমূল নেতা সুদিপ্ত ঘোষের ফেসবুকে এমনই জল্পনা ভরা পোস্ট লক্ষ্য করা গিয়েছিল কিছুক্ষণের জন্য। তারপর আবার গুসকরার তৃণমূল কাউন্সিলর নিত্যানন্দ চট্টোপাধ্যায়ের দাবি যথেষ্ট জল্পনার সৃষ্টি করেছে। নিত্যানন্দ বাবুর দাবি, ‘অনুব্রত মণ্ডল ঘনিষ্ঠ দুই মন্ত্রীও বিজেপিতে যোগ দেবেন।’ যদিও এক্ষেত্রে সুদীপ্ত ঘোষ এবং জেলার দুই মন্ত্রী জল্পনার ইতি টেনে জানিয়েছেন তারা তৃণমূলেই রয়েছেন এবং থাকবেন। পাশাপাশি সুদিপ্ত ঘোষ দাবি করেছেন, তিনি ফেসবুকে কোন পোস্ট করেননি। তার প্রোফাইল হ্যাক করে কেউ এই পোস্ট করেছিলো।
আর এত সব জল্পনার মাঝেই বোলপুর থানার অন্তর্গত রায়পুর পঞ্চায়েতে শুভেন্দু অধিকারীর নাম নিয়ে পোস্টার জল্পনাকে আরও বাড়িয়ে তুলছে। সম্প্রতি অনুব্রত গড়ে যে পোস্টারগুলি চোখে পড়েছে তাতে লেখা রয়েছে, ‘শুভেন্দু দা আমরা তোমার অনুগামী।’ যদিও এই পোস্টটার কে বা কারা দিয়েছে তা সম্পর্কে কিছু জানা যায়নি বা প্রচারকের কোন নামও উল্লেখ নেই। তাহলেও শুভেন্দু অধিকারীর নামে অনুব্রত গড়ে পোস্টার রাজনৈতিক চর্চার কেন্দ্রবিন্দু হয়ে পড়েছে।