Sumaiya siddhiqui of Murshidabad has overcome severe financial difficulties and ranked in NEET: বাবা মায়েরা তেমন শিক্ষা অর্জন করতে না পারলেও প্রত্যেক বাবা-মায়ের ইচ্ছা থাকে সন্তানদের সুশিক্ষিত করে বড় করে তোলার। তার জন্য অনেকেই নানান ভাবে প্রচেষ্টা করে। অনেক ছেলেমেয়েদেরও স্বপ্ন থাকে বড় হয়ে কিছু করার। কিন্তু সে ক্ষেত্রে মধ্যবিত্ত গরিব ঘরে অন্তরায় হয়ে দাঁড়ায অর্থ কষ্ট। যার ফলে অনেকেই পিছনে ফিরে আসে। কিন্তু না, অর্থ কষ্ট পড়াশোনায় বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারে না। যা প্রমাণ করে দেখালেন মুর্শিদাবাদের সুমাইয়া। দুর্দান্ত ফলাফল করলেন মেডিকেল প্রবেশিকা পরীক্ষায় (NEET Ranked Sumaiya)। কিভাবে অর্থকষ্টকে জয় করে এই রেজাল্ট করলেন তিনি। তারই গল্প আজকের এই প্রবন্ধে তুলে ধরা হয়েছে। যা বর্তমান ছেলেমেয়েদের অনুপ্রেরণা জোগাবে।
অত্যন্ত গরিব পরিবারের কন্যা সুমাইয়া সিদ্দিকা। বাড়ি মুর্শিদাবাদের ফরাক্কা ব্লকের অর্জুনপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের খোদাবন্দপুর গ্রামে। তিন বোন এক ভাই ও বাবা মোবারক হোসেন এবং মা সাজেদা বিবি এই নিয়ে সংসার তাদের। মা বাঁধেন বিড়ি, বাবার পেশা টোটো চালানো। কিন্তু কখনোই ছেলেমেয়েদের অর্থ কষ্ট বুঝতে দেয়নি তাদের পিতা-মাতা। আর্থিক অনটন নিত্য সঙ্গী হলেও ছেলে-মেয়েদের পড়াশোনার খরচ ঠিক জুগিয়ে চলেছেন তারা। পাশাপাশি জোর কদমে খেটেছে কন্যা সুমাইয়া সিদ্দিকা। যার ফল সুমাইয়ার নিট পরীক্ষার র্যাঙ্ক (NEET Ranked Sumaiya)।
প্রসঙ্গত, গত মঙ্গলবার প্রকাশিত হয়েছে নেট পরীক্ষার রেজাল্ট। আর সেখানেই তাক লাগানো রেজাল্ট করেছে ফরাক্কার সুমাইয়া সিদ্দিকা। ৭২০ নম্বরের পরীক্ষায় ৬৭০ পেয়ে সর্বভারতীয় স্তরের র্যাঙ্ক করেছে ১৪০৩২। ওবিসি ক্যাটাগরিতে তার র্যাঙ্ক দাঁড়িয়েছে ৫৯৮১। খুশির হাওয়া সুমাইয়ার পরিবারসহ খোদাবন্দপুর গ্রামে। অভিনন্দন জানাতে সুমাইয়ার মাটির বাড়িতে ভিড় জমিয়েছেন প্রতিবেশীরা। তাদের উক্তি, সুমাইয়াকে দেখে শিখবে পাড়ার অন্যান্য ছেলেমেয়েরা। প্রতি ছেলেমেয়েদের অনুপ্রেরণা এই ছোট্ট সুমাইয়া।
ডাক্তারি পরীক্ষায় মেয়ের নজরকারা সাফল্যে উৎফুল্ল বাবা-মোবারাক হোসেন। মেয়ের এই সাফল্যে বাবার উক্তি, তিনি নিজে কোনদিনও পড়াশোনা শেখেনি। কিন্তু পাড়া-প্রতিবেশীরা সব সময় তাকে বলেছে মেয়ের দিকে নজর দাও, পড়াশোনা করে একদিন অনেক বড় হবে। তাই টোটো চালিয়ে সন্তানদের পড়াশোনার খরচ চালায় তিনি। অভাব অনটন বুঝতে দেয়নি। তাই মেয়ের এই সাফল্যে তিনি অত্যন্ত খুশি এবং তিনি চান বড় ডাক্তার হয়ে মানুষের মতো মানুষ হয়ে গ্রামের মানুষদের পাশে দাঁড়াক তার মেয়ে। দরিদ্রদের সেবায় রত হোক তার কন্যা।
এত পেশা থাকতে হঠাৎ ডাক্তারি পেশা কেন বেছে নিলে সুমাইয়া? এই বিষয়ে সুমাইয়ার উক্তি, ছোট থেকেই সে দেখে আসছে বিড়ি মহল্লায় শ্রমিকদের নানান অসুখে ভুগতে। এমনকি তার মাও মাঝেমধ্যে অসুখে ভোগেন। কিন্তু অর্থের অভাবে ঠিকঠাক চিকিৎসা করাতে পারেন না। তাই দরিদ্র শ্রমিক পরিবারের সদস্যদের যাতে সঠিক চিকিৎসা করানো যায়। তাদের পাশে দাঁড়ানো যায়। তার জন্যই এই লক্ষ্য স্থির করে সুমাইয়া। প্রসঙ্গত, ছোট থেকেই খুব মেধাবী সুমাইয়া সিদ্দিকা। প্রথম থেকেই ক্লাসে ফার্স্ট হয়ে এসেছেন তিনি। তার স্বপ্ন বড় ডাক্তার হওয়ার। আর তার জন্য এই কঠোর পরিশ্রম (NEET Ranked Sumaiya)। যার সাফল্য প্রকাশ মেডিকেল পরীক্ষায়। তিনি বর্তমান প্রজন্মের ছেলেমেয়েদের কাছে একজন ইনস্পিরেশন।