Summer cool menu of Ajodhya Hills is filling the minds of tourists this summer: গ্রীষ্মের তীব্র গরম থেকে বাঁচতে পর্যটকরা প্রথমেই বেছে নেন পাহাড়। হাতের কাছের পাহাড় বলতে দার্জিলিং বাঙালির প্রথম পছন্দ। কিন্তু এই গরমে দার্জিলিং-এ তিল ধারণের জায়গা নেই। অন্যদিকে রাজ্যের আরেকটি পাহাড়কেন্দ্রিক পর্যটন কেন্দ্র একেবারেই ফাঁকা। আসলে দার্জিলিং এবং পুরুলিয়ার অযোধ্যা পাহাড়ের (Ajodhya Hills) আবহাওয়ার মধ্যে রয়েছে বিস্তর ফারাক। কোথাও মনোরম পরিবেশ আবার কোথাও গ্রীষ্মের তীব্র তাপপ্রবাহ। এই সময় পুরুলিয়াতে জলসঙ্কট দেখা যায়। তাই গরমেও যাতে পর্যটকরা পুরুলিয়ার অযোধ্যা পাহাড়ে ভিড় জমাতে পারে তার জন্য বেশ কয়েকটি রিসর্ট ‘সামার মেনু’ দিয়ে নিয়ে আসা হয়েছে নতুন চমক।
গরমকালে দার্জিলিং এবং পুরুলিয়ার অযোধ্যা পাহাড়ের আবহাওয়ার পার্থক্য থাকে বিরাট রকমের। সবাই হিম শীতল পরিবেশ খোঁজার জন্য ছুটে যায় দার্জিলিংয়ের পাহাড়ে এবং ধুধু করে অযোধ্যা পাহাড়ের (Ajodhya Hills) পর্যটন কেন্দ্র। রাজ্যের পর্যটন মানচিত্রের একেবারে প্রথম দিকে থাকা দুই পাহাড়ে ভরা গ্রীষ্মে দুরকম চিত্র। এই সময় স্কুল কলেজ গুলো সব জায়গাতেই গরমের ছুটি পড়ে যায় এবং ছুটি কাটাতে সবার প্রথম পছন্দ থাকে উত্তরবঙ্গ। কিন্তু আরেক পাহাড় অযোধ্যা থেকে মুখ ফিরিয়ে নেন বেশিরভাগ পর্যটকরা। অথচ মার্চের শেষ পর্যন্ত যখন লাল পলাশে ঘেরা ছিল পুরুলিয়া। নাকে আসছিলো মহুয়ার সুবাস, কুসুমের কচি কচি লাল পাতায় ছিল বসন্তের রূপ। এই পাহাড়ও উপচে পড়েছিল ভিড়ে। দোল-হোলিতে থাকার জায়গা পর্যন্ত ছিল না। একটা খাটিয়ায় রাত কাটানোর জন্য হাপিত্যেশ করে গিয়েছেন পর্যটকরা।
তবে প্রকৃতির এমনই লীলা সেই পাহাড়ের চিত্র বদলে গেছে এক নিমেষেই। ঝাড়খণ্ডের পাথুরে অঞ্চল লাগোয়া এই পাহাড় এখন যেন ঝলসে যাচ্ছে। পুরুলিয়ায় তাপমাত্রা সর্বোচ্চ ছিল ৪৩.৩ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড। যা এই মরশুমের সর্বোচ্চ। আবার অন্যদিকে দার্জিলিং-এ সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ২৪ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড। সর্বনিম্ন ১২ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড। ফলে এখানে ঘুরতে গেলে হালকা শীতবস্ত্র গায়ে লাগিয়ে পরিবেশটা সত্যি জমজমাট। পুরুলিয়ার অযোধ্যা পাহাড়তলির একটি বেসরকারি পর্যটন সংস্থার কর্ণধার বলেছেন যে, বিগত বছরেও এমন পর্যটক শূন্য ছিল না পুরুলিয়ার অযোধ্যা পাহাড়। গ্রীষ্মের তাপপ্রবাহ এখানে বরাবরই চলে কিন্তু তবুও পর্যটক থাকে কয়েক বছর ধরেই। আসলে পাহাড়ের চরিত্রটা একটু অন্যরকম। আগেকার পরিবেশের সঙ্গে এখনকার পরিবেশের অনেকটাই পার্থক্য হয়ে গেছে। আগে দিনের বেলা অসহ্য গরম থাকলেও সন্ধ্যের পর থাকতো মনোরম পরিবেশ। পর্যটকরা দিনের বেলায় ইনডোরে থাকলেও সন্ধের পর আউটডোরে নানান মজা করেন।
কিন্তু এবার ছবিটা বদলে গিয়েছে। সন্ধ্যার পর কোনভাবেই যেন শীতল হচ্ছে না অযোধ্যা পাহাড়ি (Ajodhya Hills) এলাকা। আবহাওয়ার এরকম বিরূপ মনোভাবের ফলে পর্যটকরা মুখ ফিরিয়ে নিয়েছেন রাজ্যের এই সুন্দর পর্যটন কেন্দ্র থেকে। তাই ভীষণভাবে ক্ষতি হচ্ছে এখানকার পর্যটন শিল্পের। শুধুমাত্র জলসংকটের কারণে বহু হোম স্টে, বেসরকারি পর্যটন সংস্থা এমনকি রাজ্যের পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন বিভাগের আওতায় থাকা সামগ্রিক অঞ্চল উন্নয়ন পর্ষদের অযোধ্যা পাহাড় প্রকল্পের অতিথি আবাসের দরজাও বন্ধ হয়ে গিয়েছে। জল সংকটের ফলে অনলাইন বুকিং নেওয়াও বন্ধ হয়ে গেছে। তবে অযোধ্যা পাহাড়তলির মাঠা ও হিলটপে চারতারা হোটেল কর্তৃপক্ষ গুলি পর্যটক টানতে স্পেশাল মেনু করেছে।
আরও পড়ুন ? Sanglaphu Lake: পর্যটকদের জন্য আরও সুখবর! সিকিমে খুলে গেল আরও এক ট্যুরিস্ট স্পট
মাঠায় ইকো রিসোর্টে ড্রিংকসে আছে বিভিন্ন রকমের ভ্যারাইটি; যা সহজেই পর্যটকদের মন কারতে পারে। তালিকায় আছে পুদিনা ঠান্ডাই, আমপোড়া শরবত, লাউকি সবজা। মেইন কোর্স-এ আপনারা পেয়ে যাবেন বড়ি ভাতে, কাঁচা মিঠা আম কাসুন্দি স্যালাড, লাউ কাচকলা ভাজা, কচি বেগুন পেঁয়াজ পোস্ত, কুমড়ো ভাপা জেলি, আম আচারি রুই। অযোধ্যা পাহাড়ের (Ajodhya Hills) কচুরিরাখার কুশল পল্লীতে ড্রিংকসে আছে সুইট ইমলি পানি, গন্ধরাজ দইয়ের ঘোল, পুদিনা তরমুজ সিকাঞ্জি। মেইন কোর্স-এ কন্টাই লাউ বড়ি কাচকলা ভাজা , পোড়া টমেটোর পেঁয়াজ সরষে মাখা, ঢাকাই সেকা কুমড়ো ভর্তা, সিম চচ্চড়ি, কলাপাতা দিয়ে চারা পোনা ভাপা, মুর্শিদাবাদি নবাবি মোরগ, আমের টক জল। আসলে পর্যটকদের আগমনের জন্যই এই ধরনের বিভিন্ন রকমের সুস্বাদু এবং অন্য রকমের রেসিপির কথা চিন্তাভাবনা করা হয়েছে।
এছাড়া নজর কাড়া ড্রিঙ্কস রয়েছে। ফলে কিছুটা হলেও পর্যটকরা এখানে আসছেন। তবে এই সময় দার্জিলিং পাহাড়ে ভিড় চোখে পড়ার মতো। বাংলা ছাড়াও দেশের বিভিন্ন প্রান্তের মানুষ ছুটে আসছেন ঠান্ডা আবহাওয়ার লোভে। ফলে কার্শিয়াং, কালিম্পং-এও হোটেল, গেস্ট হাউস, হোম স্টে একেবারে ভিড়ে ঠাসা। পর্যটন শিল্প যথেষ্টই আয় করছে এই বছর। তবে অযোধ্যা পাহাড় এলাকায় পর্যটক শূন্য থাকলেও দীঘা এবং মন্দারমনিতে গরমের এই ছুটিতে ভিড় লক্ষ্য করা যাচ্ছে। দিনের বেলা হোটেলে থেকে বিকেলের পর পর্যটকরা উপভোগ করছেন সমুদ্রের পারের সুন্দর আবহাওয়া। কিন্তু অন্যান্য বছরে দীঘা কিংবা মন্দারমনিতে যেরকম ভিড় থাকে পর্যটকদের তার থেকে চেহারা কিন্তু অনেকটাই আলাদা। যেমনটা অযোধ্যা পাহাড়ে। প্রকৃতির লীলার দুই রকম চিত্র দেখা যাচ্ছে দুই পাহাড়ের