Super Vasuki: ভারতীয় রেলওয়েতে এক অবিশ্বাস্য সংযোজন ‘সুপার বাসুকী’ (Super Vasuki)। এটি শুধুমাত্র একটি ট্রেন নয়, এটি একটি চলন্ত বিস্ময়। ২০২২ সালের ১৫ অগস্ট চালু হওয়া এই ট্রেনটির দৈর্ঘ্য প্রায় সাড়ে তিন কিলোমিটার, যা বিশ্বের দীর্ঘতম ট্রেনের মধ্যে একটি। নামের মতোই, এই ট্রেনের বিশালতা অবাক করার মতো, যা মনে করিয়ে দেয় ভারতীয় পুরাণের দৈত্যাকৃতি বাসুকী নাগের কথা।
‘সুপার বাসুকী’ (Super Vasuki) একটি পণ্যবাহী ট্রেন হলেও এর বহন ক্ষমতা অসাধারণ। একত্রে পাঁচটি পণ্যবাহী ট্রেনের রেক একত্রিত করে তৈরি এই ট্রেনটি ৯৬টি কোচের সমন্বয়ে গঠিত। এতে রয়েছে ২৯৫টি ওয়াগন এবং ৬টি শক্তিশালী ইঞ্জিন, যা একসঙ্গে এক অসাধারণ শক্তি প্রদর্শন করে। একবারে প্রায় ৯,০০০ টন কয়লা বহন করতে সক্ষম এই ট্রেনটি একটি চলন্ত বিদ্যুৎ কেন্দ্রের সমান, যা ৩০০০ মেগাওয়াটের পাওয়ার প্ল্যান্টে আগুন ধরানোর জন্য যথেষ্ট।
এই ট্রেনের আরেকটি অবাক করা দিক হলো এর ওজন। ‘সুপার বাসুকী’ (Super Vasuki) ট্রেনের মোট ওজন প্রায় ২৫,৯৬২ টন, যা সাধারণ ট্রেনের তুলনায় তিনগুণ বেশি। ট্রেনটি ২৬৭ কিলোমিটার পথ অতিক্রম করতে প্রায় ১১ ঘণ্টা ২০ মিনিট সময় নেয়। এটি পরিচালনার জন্য ৬টি ইঞ্জিনের প্রয়োজন হয়, যা একযোগে কাজ করে ট্রেনটিকে সামনে এগিয়ে নিয়ে যায়। ভারতের পণ্যবাহী পরিবহন ব্যবস্থায় এই ট্রেন একটি নতুন মাত্রা যোগ করেছে।
দক্ষিণ-পূর্ব-মধ্য রেলওয়ে দ্বারা পরিচালিত ‘সুপার বাসুকী’ ট্রেনটি শুধুমাত্র দৈর্ঘ্য বা ওজনের দিক থেকেই নয়, এর প্রযুক্তিগত দক্ষতাতেও চমকপ্রদ। এটিতে ব্যবহৃত ইঞ্জিন এবং রেকের সংমিশ্রণ একটি অভিনব উদ্ভাবন যা ভারতীয় রেলকে আন্তর্জাতিক মানচিত্রে একটি উচ্চতর স্থানে পৌঁছে দিয়েছে। এর দ্বারা বিপুল পরিমাণ পণ্য পরিবহনের মাধ্যমে ভারতের অর্থনীতিতে এক নতুন জোয়ার এসেছে।
অসংখ্য মানুষের চোখের সামনে দিয়ে চলা ‘সুপার বাসুকী’ (Super Vasuki) ভারতীয় রেলের গর্ব এবং প্রযুক্তির উন্নয়নের একটি শ্রেষ্ঠ উদাহরণ। এর দৈর্ঘ্য, ক্ষমতা এবং আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার এটিকে শুধুমাত্র ভারতের নয়, বিশ্বের রেল ইতিহাসে একটি স্মরণীয় নাম করে তুলেছে। ভারতীয় রেলের এই অদ্ভুত ট্রেনের যাত্রা সত্যিই চমৎকার!