লাল্টু : উচ্চমাধ্যমিকে ভাল ফল করেছে মেয়ে, যতটাই খুশির খবর পরিবারের কাছে, ততটাই দুঃখের। ছেলেমেয়ে পরীক্ষায় ভালো ফলাফল করলে খুশি হয় প্রত্যেক পরিবারেরই। পরীক্ষায় ভালো ফল করার পরেও যদি তাদের পরিবারের সন্তানদের ভালো জায়গায় পড়াতে না পারেন তাহলে তা আরও দুঃখের।
হ্যাঁ, ঠিকই ধরেছেন আমরা খয়রাশোল ব্লকের কাঁকরতলা থানার বড়রা উচ্চবিদ্যালয় থেকে ৪৮৯ নম্বর পেয়ে দশম স্থান অধিকারী সুপ্রিয়া পালের কথা বলছি। সুপ্রিয়াকে প্রশ্ন করা হয়, বড় হয়ে কী হতে চাও? সুপ্রিয়া পড়াশোনায় ভালো হওয়া সত্ত্বেও আর্থিক অস্বচ্ছলতার জন্য বড় হয়ে কী করবে সেই নিয়েই দিশাহীন।
সুপ্রিয়ার কথায়, প্রথমদিকে পাশের বাড়ির বান্ধবীর মোবাইল থেকেই অনলাইনে পড়াশোনা করত। বাড়িতে একটি মোবাইল থাকার কারণে এই অসুবিধা হতো। তবে এই সকল প্রতিকূলতাকে দূরে সরিয়ে আজ সে এত বড় সাফল্য পেয়েছে। ভালো ফলাফল করতে পারবে সে এমনটা আশা করলেও এত ভালো ফলাফল হবে তা তার জানা ছিল না।
সুপ্রিয়ার বাবা প্রদীপ পালের কথায়, আর্থিক অস্বচ্ছলতার জন্য মেয়েকে খুব কষ্ট করেই মানুষ করছি। স্কুলের টিচাররা খুব যত্ন করে তাকে পড়াশোনা করান। পাশাপাশি প্রাইভেট টিউশনের টিচাররাও মেয়েকে বিনামূল্যে পড়াশোনা করান। মেয়ে বড় হয়ে কী হতে চায় বাবার আর্থিক কষ্টের জন্য তা বলতে পারেনি। কেউ যদি মেয়েকে পড়াবার জন্য এগিয়ে আসেন তাহলে মেয়েটা উচ্চশিক্ষায় শিক্ষিত হবে। মেয়ের ইচ্ছা শিক্ষিকা হওয়া।
প্রসঙ্গত, চলতি বছর উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় রাজ্য জুড়ে ২৭২ জন উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী প্রথম দশে স্থান করে নিয়েছে। এদের মধ্যে আবার বীরভূমের ১৫ জন। তবে এদের মধ্যে সুপ্রিয়া আলাদাভাবে জায়গা করে নিয়েছে এই রকম একটি দুঃস্থ দরিদ্র পরিবার থেকে উঠে এসে।