অমরনাথ দত্ত : সংবিধান দিবসে বৃহস্পতিবার শান্তিনিকেতনে আসেন বিজেপি সাংসদ স্বপন দাশগুপ্ত। সেখানে সায়রবীথির একটি বেসরকারি রিসোর্টে তিনি তাঁর বক্তব্য রাখার সময় বীরভূম জেলার তৃণমূল নেতৃত্ব অর্থাৎ নাম না করেই অনুব্রত মণ্ডলকে ‘কুম্ভকর্ণের উত্তরাধিকারী বা রাবণের উত্তরাধিকারী’ বলে খোঁচা দিলেন। সংবিধান দিবসে রাজনৈতিক শালীনতা নিয়ে এমন মন্তব্য করতে দেখা যায় তাঁকে।
যদিও তাকে এই খোঁচা দেওয়ার সময় কোথাও বীরভূম জেলা তৃণমূল সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলের নাম উচ্চারণ করেননি। তবে তিনি তার প্রতিটি শব্দে আসতে পারে বুঝিয়ে দিয়েছেন কাকে ইঙ্গিত করতে চাইছেন। তার আঙ্গুল যে অনুব্রত মণ্ডলের দিকেই তা বুঝতে বাকি থাকছে না কারোর।
মঞ্চে নিজের বক্তব্য রাখার সময় স্বপন দাশগুপ্ত বলেন, “বীরভূমে আমি যে ধরনের নেতৃত্ব দেখছি। যে ভাষায় কথা বলে, কুম্ভকর্ণের হয়তো উত্তরাধিকারী বা রাবণের উত্তরাধিকারী। সেই ভাষাতেই হবে। তা বলুন, বীরভূমটা কার? রবীন্দ্রনাথ না তার!”
এর পরেই তিনি পশ্চিমবঙ্গের রাজনীতির প্রসঙ্গ টেনে বলেন, “পশ্চিমবঙ্গের রাজনীতি হচ্ছে হিংসার রাজনীতি। শুধু দশ বছর নয়, গত পঞ্চাশ বছর ধরে এটা দেখে আসছি। আর কোন রাজ্য নেই, হয়তো কাশ্মীর ছাড়া, যেখানে এত সিস্টেম্যাটিকভাবে হিংসার রাজনীতি চলছে। সেই আরম্ভ হয়েছিল ১৯৬৭ সাল থেকে, তারপর থেকে অনবরত অবিরামভাবে হিংসা চলছে। আর এটা এমন পর্যায়ে এসে গেছে যেখানে নরমেল গণতন্ত্র, যেটাকে আমরা পাঁচ বছর পরে নির্বাচন বলি, সেই নির্বাচন প্রসেসটাই বিকৃত হয়ে গেছে। আর এই বিকৃত হয়ে গেছে দুটি কারণে। একটি হলো ভয়, ভয়ের কারণে বলতে পারছে না। আর দ্বিতীয়টি হলো পঞ্চায়েত নির্বাচনের মতো। জোর করে মাসেল পাওয়ার দিয়ে নমিনেশন আটকে দেওয়া, ভোট দেওয়া আটকে দেওয়া। ২০১৯ সালের নির্বাচনের আগে যখন অনেক জায়গায় ঘুরে ছিলাম তখন বেশিরভাগ মানুষের মুখ এই একটাই কথা, ‘দাদা দেখবেন যেন ভোটটা দিতে পারি’।”
প্রসঙ্গত, গতকাল সিউড়িতে এসে বিজেপি রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ পশ্চিমবঙ্গের ‘দ্বিতীয় কাশ্মীর’ বলেছিলেন। এরপর বৃহস্পতিবার বিজেপি সাংসদ স্বপন দাশগুপ্তের মুখ থেকেও কাশ্মীর প্রসঙ্গ। যদিও পরে তিনি সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে জানান, “আমি কখনোই পশ্চিমবঙ্গের দ্বিতীয় কাশ্মীরের সাথে তুলনা করছি না। আমি শুধু পশ্চিমবঙ্গের হিংসার রাজনীতি বোঝাতে চেয়েছি।”