নিজস্ব প্রতিবেদন : চাকরির হাহাকার! অন্ততপক্ষে সাম্প্রতিক ঘটে যাওয়া একটি ঘটনা এই প্রশ্নটাই উঠছে। এনআরএস মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে ডোমের পদে নিয়োগের জন্য বিজ্ঞপ্তি বের হতেই এমন ঘটনা সামনে আসে। ওই পদে নিয়োগের জন্য আবেদন করেছেন স্নাতকে ইতিহাসে First Class গোল্ড মেডেলিস্ট এক গৃহবধূ। তবে অবশ্যই গৃহবধূর দাবি, ‘কাজের কোন ছোট-বড় হয় না’।
ওই মেডিকেল কলেজ এবং হাসপাতালে ডোমের পদে নিয়োগের জন্য নূন্যতম শিক্ষাগত যোগ্যতা অষ্টম শ্রেণী পাশ রাখা হয়। তবে শিবপুরের স্বর্ণালী সামন্ত, যিনি এক সন্তানের মা ওই পদে নিয়োগের জন্য চাকরিপ্রার্থী। জানা গিয়েছে, খুব অল্প বয়সে দেবব্রতর সাথে বিয়ে করে শিবপুরে সংসার পাতেন তিনি। তবে সংসার পাতলেও পড়াশোনা চালিয়ে যান। পড়াশোনা করে ইতিহাসে গোল্ড মেডেলিস্ট হন। তারপর থেকে একাধিক সরকারি চাকরির জন্য আবেদন করলেও সেই সকল আবেদনে সফলতা মেলেনি।
স্বর্ণালীর স্বামী দেবব্রত Uber বাইক চালান। অন্যদিকে কষ্টের এই সংসারের হাল ধরতে স্বর্ণালী ডালহৌসির একটি বেসরকারি হাসপাতালে রিসেপসনিস্টের কাজ করেন। তবে এরই মাঝে করোনার দ্বিতীয় ঢেউ এবং তার জেরে কঠোর বিধিনিষেধের কারণে তাদের সংসারে শুরু হয় আরও অভাব-অনটন। টানা তিন মাস তারা দুজনে প্রায় কর্মহীন হয়ে রয়েছেন। একমাত্র মেয়ের খাওয়া-দাওয়াসহ অন্যান্য পরিচর্চার জন্য তাদের সংসার চালানো খুবই কষ্টকর হয়ে দাঁড়িয়েছে। তাই অগত্যা এই পদে নিয়োগের জন্য তিনি আবেদন করেছেন।
স্বর্ণালীর কথায়, বিজ্ঞপ্তিতে লেখা ছিল ল্যাবরেটরি অ্যাটেনডেন্ট (এটি আসলে ডোম পদ)। তাই তিনি তা দেখে আবেদন করেছেন। যদিও পরে বিষয়টি পরিষ্কার হলেও তিনি পিছিয়ে আসেন নি। তিনি জানিয়েছেন, “প্রয়োজন একটা নিরাপদ চাকরি। হাসপাতালের ডাক্তার, নার্স, আয়া এইসব চাকরির ক্ষেত্রে মেয়েরা যোগ দিতে পারলে ডোমের পদে কেন যোগ দিতে পারবে না? কেন এই পদ থেকে পিছিয়ে আসবো?
গত রবিবার এই পদের জন্য স্বর্ণালী লিখিত পরীক্ষা দিয়ে এসেছেন। যদিও সেই পরীক্ষার ফলাফল এখনো বের হয়নি। তবে স্বর্ণালী মনেপ্রাণে চাইছেন চাকরিটা যেন হয়ে যায়।