Swati Mohan Rathod UPSC: 12th Fail-ও ফেল! আধপেটা সবজি বিক্রেতা দম্পতির মেয়ে ৫ বারের চেষ্টায় UPSC-তে সফল

Swati Mohan Rathod, Daughter of vegetable vendor couple clears UPSC in 5th attempt: ইউপিএসসিতে সফলতার কাহিনী প্রায়ই আমাদের চোখে পড়ে বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে। বিধু বিনোদ চোপরার ছবি ’১২ ফেল’ নিয়ে জনগণের মধ্যে উত্তেজনা ছিল জোরকদমে। দর্শকরা এই সিনেমাটিকে যথেষ্ট ভালোবাসা ও প্রশংসা দিয়েছে। ছবিতে দেখানো হয়েছে যে ব্যর্থতায় জীবনের শেষ পরিণতি নয় কারণ, পঞ্চমবারের চেষ্টায় সাফল্য পেয়েছিল একেবারে হতদরিদ্র ঘরের ছেলে মনোজ কুমার শর্মা! চরিত্রটিকে দক্ষতার সঙ্গে ফুটিয়ে তুলেছিলেন বিক্রান্ত মেসি। সত্যিই জীবনের লড়াই যে কত কঠোর হতে পারে তা এই সিনেমাটির মাধ্যমে আমরা ভালোভাবেই বুঝতে পারি।

তবে সিনেমার গল্প কিন্তু বাস্তবের সঙ্গে মিল রেখে করা হয়ে থাকে। সিনেমার মনোজের মতোই জীবনের কঠিন লড়াইতে পঞ্চমবারের চেষ্টায় সফলতা লাভ করল স্বাতী (Swati Mohan Rathod UPSC)! ইউপিএসসি হল ভারতের সবথেকে কঠিনতম পরীক্ষা, যাতে সফলতা লাভ করা সত্যিই খুব কষ্টকর। এই মেয়ের বাবা সোলাপুরে সবজি বিক্রি করেন এবং খুবই কষ্ট করে তিনি দিন গুজরান করে থাকেন। বাবার চিরকালের স্বপ্ন মেয়ে বড় অফিসার হবেন এবং তার জন্য নিজের জীবনকে উৎসর্গ করে দিয়েছেন। যাদের পক্ষে এক বেলার খাবার যোগার করা খুবই কঠিন তাদের জন্য এই লড়াই সত্যিই কষ্টদায়ক। সম্প্রতি ঘোষিত সেন্ট্রাল পাবলিক সার্ভিস কমিশনের পরীক্ষায় স্বাতী মোহন রাঠোড় (Swati Mohan Rathod UPSC) বড় সাফল্য পেয়েছেন। জীবনের শত ব্যর্থতা এবং বাধা-বিপত্তিকে পেরিয়ে তিনি ৪৯২ তম স্থান অর্জন করেছেন। গোটা সোলাপুরের মানুষ আজ এই মেয়েটির জন্য খুশি এবং গর্বিত।

স্বাতী মোহন রাঠোর (Swati Mohan Rathod UPSC) মূলত সোলাপুরের একটি বানজারা পরিবারের মেয়ে। বাড়ির কঠিন আর্থিক পরিস্থিতির জন্য পড়াশোনা টিকিয়ে রাখায় তার পক্ষে কষ্টকর হয়ে গেছিল। স্বাতীর পরিবারে তিন বোন ও এক ভাই। স্বাতীর বাবা মা দুজনেই সবজি বিক্রি করেন বাজারে! সবজি বিক্রি করে ছোট্ট একটি ভাড়া ঘরে থেকে জীবনের এই কঠিন লড়াইতে জয়লাভ করে এই পরিবারটি। ইউপিএসসিতে (UPSC News) সফলতা লাভ করে তিনি আজ গোটা সোলাপুরের গর্ব।

আরও পড়ুন 👉 Nandalal Saikiran UPSC: বাবা নেই, মা বাঁধেন বিড়ি! সেই ঘরের ছেলেরই UPSC-র সিভিল সার্ভিসে র‍্যাঙ্ক ২৭

স্বাতীর স্কুলের প্রাথমিক শিক্ষা শেষ হয়েছিল মিউনিসিপ্যাল কর্পোরেশন স্কুলে। তিনি মুম্বাইয়ে দশম শ্রেণী পর্যন্ত পড়াশোনা করেছেন কিন্তু মুম্বাইয়ে পড়াশোনার খরচ বহন করা সত্যি তার পরিবারের পক্ষে কঠিন হয়ে পড়েছিল। সেই কারণে তারা সোলাপুরে থাকতে চলে আসেন। এরপর স্বাতী সোলাপুরের ভারতী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১২ পাশ করেন। তিনি সোলাপুরের বসুন্ধরা কলেজ থেকে স্নাতক শেষ করার পর ওয়ালচাঁদ কলেজ থেকে ভূগোলে স্নাতকোত্তর করেন। পড়াশোনা চলাকালীন তার আগ্রহ জন্মায় UPSC সম্পর্কে এবং UPSC পরীক্ষা দিয়ে অফিসার হওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। পরিস্থিতির সঙ্গে লড়াই করে স্বাতী পড়াশোনা শুরু করেন। তিনি UPSC পরীক্ষায় চারবার ব্যর্থ হন। ব্যর্থতা তাকে থামিয়ে রাখতে পারেনি। তিনি বরাবর সমস্যার থেকে সমস্যার সমাধানকে বেশি গুরুত্ব দিয়েছেন। সম্প্রতি এই পরীক্ষার ফল ঘোষণা করা হয় এবং স্বাতী পঞ্চম প্রচেষ্টায় সাফল্য পান।

ইউপিএসসি পরীক্ষায় প্রথম সোলাপুরের বানজারা সম্প্রদায়ের কোন মেয়ে পাশ করেছে। তার মা বলেন, স্বাতীর সাফল্যে গোটা পরিবার গর্বিত। স্বাতী জানান, খুব কষ্ট করে তার বাবা-মা তাকে এই জায়গায় এনে দাঁড় করিয়েছেন। গয়না বন্দক দিতে হলেও কোনদিনও পড়াশোনাতে খামতি আসতে দেননি। তার গোটা জীবনটাই যেন সিনেমার মতো।