দোষের বোঝা ঘুচিয়ে করোনা যুদ্ধে সামিল তবলিঘি সদস্যরা, প্লাজমা থেরাপিতে রক্তদান

নিজস্ব প্রতিবেদন : করোনা সংক্রামিতের খবর তখন দেশের চারিদিকে কান পাতলেই শোনা যাচ্ছে। গোটা বিশ্ব এক অপ্রীতিকত ঘটনার সম্মুখীন হয়েছে। ইতালিতে তখন হাজারে হাজারে মৃতদেহ। পরিস্থিতি‌ তখন ক্রমশ জটিল হচ্ছে। এই পরিস্থিতির মধ্যেই দেশে চালু হলো লকডাউন। আর মার্চ মাসের মাঝামাঝি সময়েই সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের অনেক মানুষ দিল্লির নিজামুদ্দিনে চলে গেলেন সেখানকার ধর্মসভায় যোগ দিতে।এরপরের গল্পটা সবার জানা। সেই নিজামুদ্দিনের সভা থেকেই করোনা সংক্রমণ ছড়িয়ে গেলো কয়েক হাজার। পুরো দেশ উত্তপ্ত হয়ে উঠলো এই ঘটনায়। ঐ সভায় উপস্থিত হ‌ওয়া মানুষদের খোঁজ করা শুরু হয়ে গেলো।

সেই সংক্রামিত মানুষজন এখন সুস্থ হয়ে উঠে সমাজের মূল স্রোতে ফিরে এসেছেন। এই মানুষগুলিই এখন প্লাজমা থেরাপিতে সহায়তা করছেন। ভাবছেন‌ তো কী এই প্লাজমা থেরাপি?

বিশ্বে যতবার মহামারী হয়েছে ততবারই প্লাজমা থেরাপি কাজে এসেছে। প্লাজমা থেরাপি অর্থাৎ কোনো মানুষ যখন কোনো রোগ থেকে সেরে ওঠেন তখন তার মধ্যে প্রতিরোধক ব্যাপারটিও গড়ে ওঠে। এবার ঐ সুস্থ হয়ে ওঠা মানুষের রক্তের প্লাজমা নিয়ে অপর সংক্রামিতদের শরীরে ঢুকিয়ে দেওয়া হয়। এইভাবেই চলে প্লাজমা থেরাপি। করোনা সংক্রমিতদের সুস্থ করে তুলতে নিজাম‌উদ্দিনের সংক্রামিতরাই এখন নিজেদের রক্তদান করছেন। আর এই রক্তের প্লাজমা থেকেই করোনা সংক্রামিতদের চিকিৎসা করা হবে।

দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল এই প্লাজমা থেরাপি করানোর জন্য জাতি-ধর্ম নির্বিশেষে সকল মানুষকে এগিয়ে আসতে অনুরোধ করেন। করোনা সংক্রামিতদের চিকিৎসা করার জন্য তিনি সকলকেই রক্তদানের জন্য অনুরোধ করেন। তার এই অনুরোধেই কাজ হয়। এরপর দিল্লী সরকারের স্বাস্থ্য দফতর জানায় যে হাজারেরও বেশি তবলিঘি সদস্যরা সুস্থ হয়ে গেছেন এবং এনাদেরই একটা বড় অংশ এবার রাজধানীর নানা জায়গায় রক্তদানের জন্য এগিয়ে এলেন।

প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, তবলিঘি জমায়েতের নেতা মৌলানা সাদ করোনার বিরুদ্ধে যুদ্ধে সকলকে শামিল হ‌ওয়ার জন্য ও রমজান মাসে ঘরে থেকে ধর্ম পালনের জন্য অনুরোধ করেন।

অরবিন্দ কেজরিওয়াল এই রক্তদানের প্রসঙ্গে বলেছেন যে এই সময়টা দেশের সংহতির ও ভ্রাতৃত্বের সময়। এখন সকলকেই করোনার বিরুদ্ধে একযোগে লড়াই করতে হবে।আসলে এই যুদ্ধ আমাদের সকলের। তাই সকল মানুষকে এক হয়ে এখন লড়াই করতে হবে করোনার বিরুদ্ধে। এটাই আমাদের লক্ষ্য।