নিজস্ব প্রতিবেদন : ২০২৪ সালের পদ্ম সম্মানের তালিকায় রীতিমত চমক। রীতি মেনে এবারও পদ্ম সম্মানের তালিকা প্রজাতন্ত্র দিবসের আগের দিন অর্থাৎ ২৫ জানুয়ারি প্রকাশ করা হয়েছে কেন্দ্রের তরফ থেকে। তালিকা প্রকাশ পেতেই দেখা যায় বাংলার একাধিক মুখ জায়গা পেয়েছে সেই তালিকায়। সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য বিষয় হলো, এবার প্রান্তিক এলাকা থেকে উঠে এসেছেন একাধিক পদ্ম সম্মানের মুখ।
বৃহস্পতিবার কেন্দ্র সরকারের তরফ থেকে তালিকা প্রকাশ করার পর দেখা যায় বীরভূমের সিউড়ির লোকশিল্পী রতন কাহারের নাম রয়েছে তালিকায়। তার নাম তালিকায় দেখতে পাওয়ার পরই বীরভূমের বাসিন্দারা আনন্দে আত্মহারা হয়ে ওঠেন। তবে শুধু রতন কাহার নয়, রতন কাহারের পাশাপাশি পদ্ম সম্মান পেয়ে বীরভূমকে গর্বিত করেছেন আরও এক পদ্মশ্রী প্রাপ্ত তকদিরা বেগম (Padma Award 2024 Takdira Begum)।
তাকদিরা বেগম বীরভূমের বোলপুরের জামবুনি এলাকার মাদ্রাসা পাড়ার বাসিন্দা। তিনি ৩০ বছরের বেশি সময় ধরে কাঁথা স্টিচের কাজ করছেন। এই কাজের জন্যই তাকে কেন্দ্র সরকারের তরফ থেকে পদ্মশ্রী পুরস্কারে সম্মানিত করার জন্য বেছে নেওয়া হয়েছে। ৩০ বছর ধরে তিনি এমন কাজ করার পাশাপাশি তার কাজের জন্য কখনো জেলা, কখনো রাজ্য আবার কখনো জাতীয় স্তরে পুরস্কৃত হয়েছেন। ১৯৯৫ এবং ১৯৯৬ সালে পরপর দুবার তিনি জাতীয় স্তরে পুরস্কৃত হয়েছিল। এছাড়াও ২০০৯ সালে তিনি শিল্পগুরু পুরস্কারে পুরস্কৃত হয়েছিলেন। এরপর ২০২৪ এ পদ্মশ্রী।
তকদিরা বেগম যখন পঞ্চম শ্রেণীতে পড়াশোনা করতেন তখন থেকেই সেলাইয়ের কাজ শিখেছিলেন। পরবর্তীতে তিনি কাঁথা স্টিচের কাজ শেখেন পরিবারের গুরুজনদের থেকে। এরপরই শুরু হয় তার এই কাঁথা স্টিচ কাজের লড়াই। নিজে এই কাজ করে রোজগার এবং সংসার চালানোর পাশাপাশি এলাকার বহু মহিলাকে তিনি রোজগারের পথ দেখিয়েছেন। তার থেকে কাজ শিখে এবং করে অনেক মহিলা রয়েছেন যারা সংসার চালিয়ে থাকেন। তার মাধ্যমে সমাজের আর্থিকভাবে পিছিয়ে পড়া রোজগারের দিশা দেখছেন। এই বিষয়টিকে সম্মান দিতেই কেন্দ্রের তরফ থেকে তাকে এমন পদ্মশ্রী সম্মান নিয়ে সম্মানিত করা হয়েছে।
তাকদিরা বেগম নিজের বাড়িতেই কাঁথা স্টিচের কাজ করেন এবং তা দেশের বিভিন্ন জায়গায় পৌঁছে দেন। তার হাতে তৈরি কাঁথা স্টিচের কাজ এখন মূলত দিল্লিতে পৌঁছে যায় তার মেয়ে ও জামাইয়ের হাত ধরে। সেখানেই তাকদিরার হাতে তৈরি কাঁথা স্টিচের সারঞ্জাম বিক্রি হয়। বৃহস্পতিবার তাকদিরা যখন জানতে পারেন তিনি এমন পদ্মশ্রী সম্মানে সম্মানিত হচ্ছেন তখন থেকেই তিনি আনন্দে আত্মহারা।