নিজস্ব প্রতিবেদন : রাজ্যে করোনা সংক্রমণ বাড়লেও শর্তসাপেক্ষে স্বাস্থ্যবিধি ও নিয়মকে সঙ্গী করে স্বাভাবিক হওয়ার পথে হাঁটছে পশ্চিমবঙ্গ। আগামী সোমবার অর্থাৎ পয়লা জুন থেকে খুলতে চলেছে ধর্মীয় স্থান, সরকারি দপ্তর, বাসে বাড়ছে যাত্রীসংখ্যা। এছাড়াও আরও একগুচ্ছ ছাড়ের পরিকল্পনা রয়েছে রাজ্যের। চতুর্থ দফার লকডাউন আগামীকাল অর্থাৎ রবিবার শেষ হওয়ার পর দেশে লকডাউন বাড়লেও পশ্চিমবঙ্গে এসকল ক্ষেত্রে যে ছাড় মিলতে চলেছে তা স্পষ্ট জানিয়ে দেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
একনজরে সোমবার থেকে রাজ্যে শর্তসাপেক্ষে ছাড়ের তালিকা
১) ধর্মীয় স্থান : ১লা জুন অর্থাৎ সোমবার থেকে খুলে যাবে রাজ্যের সমস্ত রকম ধর্মীয় স্থান। মন্দির, মসজিদ, গির্জা, গুরুদ্বার সেদিন সকাল ১০টা থেকে খোলা যাবে।
শর্ত : একসঙ্গে ১০ জনের বেশি ধর্ম স্থানে প্রবেশ করা যাবে না। কোন ধর্মীয় জমায়েত অথবা উৎসব পালন করা যাবে না। মন্দিরে ঢোকার আগে স্যানিটাইজ করতে হবে। মাস্ক থাকা বাধ্যতামূলক।
২) চা ও পাট শিল্প : করোনা আবহে লকডাউন শুরু হওয়ার পর চা ও পাট শিল্প বন্ধ হয়ে যায়। পরে তা ৫০% কর্মীদের নিয়ে চালু করার অনুমোদন দেওয়া হয়। আর আগামী সোমবার থেকে সেখানে ১০০% কর্মী নিয়ে চা ও পাটশিল্প খোলা যাবে।
শর্ত : করোনা পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখে সকলকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে। স্যানিটাইজ করা, মুখে মাস্ক ব্যবহার করা বাধ্যতামূলক।
In the Private sector, I urge all to stay safe, work indoors as much as possible & to the best of their abilities. Prerogative lies with the respective managements of private entities to decide on workforce capacity & act accordingly. (2/3)
— Mamata Banerjee (@MamataOfficial) May 29, 2020
৩) বাস : তৃতীয় দফার লকডাউনে ঘোষণা করা হয়েছিল সরকারি ও বেসরকারি বাস অর্থাৎ গণপরিবহণ চালু করার কথা। সে ক্ষেত্রে জানানো হয়েছিল বাসে ২০ জনেরও বেশি যাত্রী উঠানো যাবে না। তবে এবার বাসে যত সিট তত সিটে যাত্রী তোলা যাবে।
শর্ত : সিট সংখ্যা সমান বাসে যাত্রী তোলার ক্ষেত্রে অনুমতি দেওয়া হলেও কেউ দাঁড়িয়ে যেতে পারবেন না। অর্থাৎ সিট সংখ্যা বেশি যাত্রী যেন না হয়। মেনে চলতে হবে স্বাস্থ্যবিধি, পড়তে হবে মাস্ক, ব্যবহার করতে হবে স্যানিটাইজার।
৪) সরকারী ও বেসরকারী অফিস : গতকাল নবান্নে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানান ৮ই জুন থেকে ১০০% কর্মী নিয়ে শুরু হবে সরকারি ও বেসরকারি অফিস। যদিও রাতে টুইট করে জানান, ৭০% কর্মী নিয়ে করা যাবে কাজ।
শর্ত : বেসরকারি অফিসের কর্মীদের যতটা সম্ভব বাড়িতে বসেই কাজ করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। বাকি অন্যান্য স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে।
With multiple crises in the state, we've decided to increase State Government workforce capacity from 50% to 70%. Continuation of restoration work is one of the top priorities & this workforce increase will ensure that public services are uninterrupted and unhindered. (1/3)
— Mamata Banerjee (@MamataOfficial) May 29, 2020
৫) অন্যান্য যান চলাচল : ৪০% যাত্রী নিয়ে সোমবার থেকে অন্যান্য যান চলাচল করতে পারবে। তবে লোকাল ট্রেন চালানোর দায় কেন্দ্রের উপর ছেড়েছেন।
শর্ত : যাত্রীদের ফেস মাস্ক ব্যবহার করা বাধ্যতামূলক।
৬) হকার্স মার্কেট : শহরের হকার্স মার্কেট ইতিমধ্যেই খুলতে শুরু করেছে। হকার্স মার্কেটে হকারদের দোকান খোলার ক্ষেত্রে পুলিশকে বিষয়টি দেখতে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।
শর্ত : হকার্স মার্কেট খোলার ক্ষেত্রে জোড়-বিজোড় পদ্ধতি মানা হবে। যার দায়িত্ব পালন করবে পুলিশ মানতে হবে অন্যান্য স্বাস্থ্যবিধি।
৭) ব্যক্তিগত চিকিৎসা কেন্দ্র ও ক্লিনিক : এক্ষেত্রে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন চিকিৎসকেরা যেন পিপিই পড়ে ধীরে ধীরে রোগী দেখা শুরু করেন। (এখন এটি খোলা বা না খোলা তা চিকিৎসকদের উপর নির্ভর করছে।)
৮) ফেরি সার্ভিস : সোমবার থেকে চালু হবে ফেরি সার্ভিস। লকডাউনের আগে ২৩ শে মার্চ শেষবার হুগলি নদীতে ফেরি চলেছিল। আর এবার সোমবার থেকে আনুমানিক ৬০ মিনিট অন্তর অন্তর চলবে ফেরি সার্ভিস।
শর্ত : ৪০% যাত্রী নিয়ে শুরু হবে ফেরি সার্ভিস। মেনে চলতে হবে স্বাস্থ্যবিধি। সকাল ৮টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত এই ফেরি সার্ভিস বজায় থাকবে। মাস্ক না পরে কাউকে ফেরিতে ওঠার অনুমতি দেওয়া হবে না।
৯) পুরবাজার : ১লা জুন থেকে খুলবে নিউমার্কেটসহ কলকাতার ৪৫ পুরবাজার। (সূত্র)
শর্ত : বাজার খোলা যাবে সকাল ১০ টা থেকে বিকাল ৫ টা পর্যন্ত। সমস্ত রকম স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে। বিকাল ৫ টার পর থেকে বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া হবে।