করোনা কাঁটায় বন্ধ হচ্ছে না তারাপীঠ সহ অন্যান্য ধর্মীয়স্থান, জমায়েতে নিষেধাজ্ঞা

Shyamali Das

Updated on:

হিমাদ্রি মণ্ডল : করোনা ভাইরাসের সংক্রমণের ত্রাসের কারণে বিশ্বজুড়ে বন্ধ হয়েছে একের পর এক প্রতিষ্ঠান। ভারতে, এমনকি আমাদের রাজ্যেও বন্ধ হয়েছে স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়, প্রেক্ষাগৃহ, সুইমিং পুল ইত্যাদি। এমনকি বিশ্বভারতীর ঐতিহ্যবাহী সাপ্তাহিক ব্রহ্ম উপাসনাও বন্ধ হয়েছে বুধবার থেকে। এরপরেই জেলায় থাকা ঐতিহ্যবাহী মন্দির মসজিদগুলি নিয়ে শুরু হয় আশঙ্কা। তাহলে কি এবার সেগুলিও আপাতত বন্ধ হতে চলেছে! এ নিয়ে বুধবার বীরভূমের জেলা পরিষদের কনফারেন্স হলে একটি বৈঠক হয়। যে বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন তারাপীঠ সহ অন্যান্য মন্দিরের মন্দির কমিটির সদস্যরা, উপস্থিত ছিলেন জেলার মসজিদ কমিটির সদস্যরা।

এই বৈঠকেই সিদ্ধান্ত হয় আপাতত তারাপীঠ সহ জেলার কোন মন্দির, মসজিদ বা ধর্মীয় স্থান বন্ধ না করার। তবে জমায়াতের ক্ষেত্রে নিয়ন্ত্রণে সর্তকতা অবলম্বনের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। রীতি মেনে মন্দিরগুলিতে চালু থাকবে পুজো। লাইনের ক্ষেত্রে নিয়ন্ত্রণে নিয়োগ করতে হবে ভলেন্টিয়ার। মসজিদেও জমায়েত নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। এছাড়াও পূজা অর্চনা হোক অথবা নামাজ এক একজন পুণ্যার্থীদের মধ্যে কমপক্ষে ১ মিটার দূরত্ব বজায় রাখতে হবে। পাশাপাশি মন্দিরগুলিতে এই মুহূর্তে ভান্ডারা বন্ধ রাখার নির্দেশ দেওয়া হলো জেলা প্রশাসনের তরফ থেকে।

বৈঠক শেষে বীরভূম জেলাশাসক মৌমিতা গোদারা বসু জানান, “যেহেতু মন্দির মসজিদের মত ধর্মীয় স্থানগুলিতে বিপুল পরিমাণ লোকের সমাগম হয়। তাই আজ আমরা এই বৈঠকে তাদের অনুরোধ করেছি জামায়াতের ক্ষেত্রে যেন নিয়ন্ত্রণ রাখা হয়। আমাদের নির্দেশাবলী শুনে মন্দির ও মসজিদ কমিটির সদস্যরা সকলেই সমস্ত রকম বিধি নিষেধ মেনে চলার আশ্বাস দিয়েছেন। তারাপীঠ, বক্রেশ্বর, নলাটেশ্বরী প্রত্যেকটি মন্দির কমিটির সদস্যরা জানিয়েছেন, পূণ্যার্থীদের ক্ষেত্রে ১ মিটার দূরত্ব বজায় রাখার, ভান্ডারা আপাতত বন্ধ রাখার কথা। পাশাপাশি মসজিদ কমিটির সদস্যরাও এমন সিদ্ধান্তে সায় দিয়েছেন।”

তারাপীঠ মন্দিরের মন্দির কমিটির সভাপতি তারাময় মুখোপাধ্যায় বলেন, “এদিন প্রশাসনিক বৈঠকে মন্দির খোলা রাখার সিদ্ধান্তের কথা জানানো হয়। তবে রীতি মেনে পূজা-অর্চনা চালিয়ে যাওয়ার পাশাপাশি যেন নিয়ন্ত্রণ করা হয় জমায়েতের ক্ষেত্রে, পূণ্যার্থীদের মধ্যে দূরত্ব বজায় রাখার ক্ষেত্রে, ভান্ডারা বন্ধ রাখার ক্ষেত্রে। আর এই করনা ভাইরাসের সংক্রমণ রুখতে আমরাও জেলা প্রশাসনের সিদ্ধান্ত সায় দিয়েছি। পাশাপাশি আমরা করোনা ভাইরাস ঠেকানোর জন্য মন্দিরে মাইকিং করে সচেতনতামূলক প্রচার চালাচ্ছি। পাশাপাশি আমরা স্থাস্থ্য ক্যাম্প চালু করতে চলেছি। যাতে যাঁরা আসবেন যেন নিশ্চিন্তে আসতে পারেন।”

সিউড়ি জিয়াউল ইসলাম সিউড়ি মাদ্রাসার শিক্ষক মহঃ শাখাউদ্দিন জানান, “রীতি মেনে নামাজ যেমন হয় তেমনটা চালিয়ে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন জেলা প্রশাসন। তবে অন্যান্যদের মত জমায়েতের ক্ষেত্রে নিয়ন্ত্রণ করতে বলা হয়েছে। সেইমতো আমরা রীতি নীতি নামাজ বা অন্যান্য রীতি বজায় রাখলেও প্রশাসনের নির্দেশিকা অনুসারে নামাজ পড়ার সময় একজনের থেকে অন্যজনের কমপক্ষে ১ মিটার দূরত্ব বজায় রাখবো।”

এছাড়াও এদিন জেলা প্রশাসনের তরফ থেকে মন্দির ও মসজিদ কমিটির সদস্যদের হাত ধোয়া, পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখার ক্ষেত্রে ও জোর দেওয়ার কথা জানানো হয়।