নিজস্ব প্রতিবেদন : অভিনেত্রী সাংসদ নুসরত জাহানকে নিয়ে গত শুক্রবার থেকেই তোলপাড় সোশ্যাল মিডিয়া। মূলত তাঁর অন্তঃসত্ত্বা হওয়ার খবর ছড়িয়ে পড়তেই এই তোলপাড়। সোশ্যাল মিডিয়ায় এই খবর ছড়ানোর পর থেকেই নেটিজেনরা অনেকেই কু কথায় আক্রমণ করছেন তাকে। অন্যদিকে আবার এই টানাপোড়েনের মাঝে মুখ খুলতে দেখা যায় নিখিল জৈনকেও।
বিতর্ক, জল্পনা এসবের মাঝে নিখিল জৈন শনিবার জানিয়েছেন, ‘ওই বাচ্চা কার? তা সম্পর্কে আমি বিন্দুমাত্র জানি না। আমরা ৭ মাস ধরে আলাদা রয়েছি। আমার সাথে ওর কোন সম্পর্ক নেই।’ আর এবার এই টানাপোড়েনের পরিস্থিতিতে মুখ খুললেন লেখিকা তসলিমা নাসরিন।
সোশ্যাল মিডিয়ায় নুসরতকে নিয়ে তাসলিমা নাসরিন লিখেছেন, “নুসরতের খবর বেশ চোখে পড়ছে। তিনি প্রেগনেন্ট। তাঁর স্বামী নিখিল এ ব্যাপারে কিছু জানেন না। দুজন আলাদা থাকছেন ছ’মাস হলো। তবে যশ নামে এক অভিনেতার সঙ্গে অভিনেত্রী নুসরত প্রেম করছেন। সন্তানের পিতা, মানুষ অনুমান করছে, যশ; নিখিল নয়। খবরটি খবর না গুজব জানিনা। তবে এই যদি পরিস্থিতি হয়, তবে নিখিল আর নুসরতের ডিভোর্স হয়ে যাওয়াই কি ভালো নয়? অচল কোনও সম্পর্ক বাদুড়ের মতো ঝুলিয়ে রাখার কোনও মানে হয় না। এতে দু’পক্ষেরই অস্বস্তি।”
এর পাশাপাশি লেখিকা আক্ষেপের সুরে লিখেছেন, “যখন নুসরত আর নিখিল বিয়ে করলেন, বেশ আনন্দ পেয়েছিলাম। ঠিক যেমন আনন্দ পেয়েছিলাম সৃজিত আর মিথিলা যখন বিয়ে করেছিলেন। অসাম্প্রদায়িকতায় বিশ্বাস করি বলে দুই ধর্মের মানুষের মধ্যে বিয়ে হলে খুব স্বাভাবিক কারণেই পুলকিত হই। জাত ধর্ম ইত্যাদি দূর করতে হলে ভিন্ন জাত আর ভিন্ন ধর্মের মানুষকে আত্মীয়তার বন্ধনে আবদ্ধ হতে হবে। এতেই হিং’সে আর হা’নাহা’নিকে হটানো যাবে। কিন্তু এত চোখ জুড়োনো জুটি যে বেশিদিন সুখে থাকবে না কে জানতো!”
অন্যদিকে লেখিকাকে নুসরতকে নিয়ে তার স্মৃতি উজার করতেও দেখা গিয়েছে। শুধু তাই নয়, পাশাপাশি তিনি ভবিষ্যতে দেখিয়েছেন তার লেখনীতে। তিনি লিখেছেন, “সেদিন ব্রাত্যর একটি ছবিতে নুসরতকে দেখলাম। ওটিই নুসরতের প্রথম কোনও ছবি আমার দেখা। মেয়েটি অনেকটা অ্যানজেলিনা জোলির মতো দেখতে, অভিনয়ও করে বেশ চমৎকার। নিশ্চয়ই মেয়েটি স্বনির্ভর। আসলে স্বনির্ভর এবং সচেতন হলে, আত্মবিশ্বাস এবং আত্মসম্মান যথেষ্ট থাকলে নিজের সন্তানের অভিভাবক নিজেই হওয়া যায়। নিজের সন্তানকে নিজের পরিচয়েই বড় করা যায়। পুরুষের মুখাপেক্ষী হতে হয় না। আসলে নিখিল এবং যশের মধ্যে কী এমন আর পার্থক্য! পুরুষ তো শেষ পর্যন্ত পুরুষই। এক জনকে ত্যাগ করে আরেক জনকে বিয়ে করলে খুব যে সুখময় হয়ে ওঠে জীবন তা তো নয়। দ্বিতীয় বিষময় জীবন থেকে বাঁচতে তাহলে কি আবার আরেকটি বিয়ে করতে হবে? তাহলে এ রেসের শেষ হবে না, কাংক্ষিত পুরুষের দেখাও মিলবে না। স্বাধীনচেতা নারীর কাংক্ষিত পুরুষ কল্পনায় থাকে, বাস্তবে নয়।”
প্রসঙ্গত, দিন কয়েক ধরেই যেভাবে নুসরতের অন্তঃসত্ত্বা নিয়ে সোশ্যাল নাগরিকদের মধ্যে কাটাছেড়া চলছে সেই জায়গায় লেখিকার এই এই লেখনি বেশ তাৎপর্যমণ্ডিত বলেই মনে করছেন ওয়াকিবহাল মহলের একাংশ।