লকডাউনে ক্ষতির মুখে পড়ে ছাঁটাইয়ের সিদ্ধান্ত টাটা গ্রূপের

নিজস্ব প্রতিবেদন : করোনা রুখতে মার্চ মাস থেকে দেশজুড়ে লকডাউন জারি হওয়ার পর থেকেই বাড়িতেই বসে আছেন কর্মীরা। আর এই করোনা পরিস্থিতিতে প্রায় প্রতিটি সংস্থাই বিপুল আর্থিক সংকটের মুখে এসে দাঁড়িয়ে। এমনকি বড় শিল্পগোষ্ঠী টাটা কোম্পানিও লোকসানের জেরে কঠিন সিদ্ধান্তে পৌঁছতে বাধ্য হয়েছে। তারাও এবার কর্মী ছাঁটাইয়ের পথে হাঁটতে চলেছে।

সূত্র মারফত জানা গিয়েছে এই সংস্থা ইতিমধ্যেই প্রায় হাজার খানেক কর্মী ছাঁটাই করেছে। আর আগামী কয়েক দিনে আরও কর্মী ছাঁটাই করতে চলেছে। সম্প্রতি লকডাউনের জেরে টাটা সংস্থার লোকসানের পরিমাণ বহুগুণে বেড়ে গেছে। তাই এই পরিস্থিতি সামাল দিতে কর্মী ছাঁটাইয়ের সিদ্ধান্তে পৌঁছেছেন টাটা গোষ্ঠীর পরিচালকেরা। খুব শীঘ্রই কর্মী ছাঁটাইয়ের বিষয়ে ঘোষণা করবেন তারা।

সূত্রের খবর লকডাউন পরিস্থিতিতে টাটা গ্রূপের বিভিন্ন ব্যবসাকে ব্যাপক লোকসানের সম্মুখীন হতে হচ্ছে। টাটা গ্রূপের বিমান সংস্থা (Vistara), গাড়ি শিল্প (Tata Motors), এরোস্পেস জাতীয় একাধিক ব্যবসায় দেখা দিয়েছে মন্দা। এর মধ্যে সবথেকে বেশি ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে গাড়ি শিল্পের। তবে কেবলমাত্র টাটা গ্রূপ নয় তার প্রতিযোগী সংস্থা মারুতি সুজুকিও গত এপ্রিল মাসের বিক্রির রিপোর্ট শূন্য। এমত অবস্থায় ভারতে গাড়ি শিল্পের অবস্থা শোচনীয়।

সূত্র মারফত এটাই জানা গিয়েছে যে, প্রাথমিকভাবে গাড়ি ও উৎপাদন সংস্থাগুলির চুক্তি ভিত্তিক অস্থায়ী কর্মীদের প্রথমে ছাঁটাই করা হবে। ছাঁটাইয়ের প্রথম তালিকায় রয়েছেন টাটা মোটর্সের জাগুয়ার ল্যান্ডরোভারের (Jaguar Land Rover) উৎপাদন শিল্পের সঙ্গে যুক্ত কারখানার বহু অস্থায়ী কর্মীরা।

তবে দেশে লকডাউন জারি হওয়ার প্রথম দিকে টাটা কোম্পানি ঘোষণা করেছিল লোকসান হলেও কোন কর্মী ছাঁটাই করা হবে না। সূত্র মারফৎ আরও জানা গিয়েছে, নেদারল্যান্ডসের টাটা গ্রূপের ইস্পাত উৎপাদন ব্যবসা থেকে ও ছাঁটাই করা হবে ১০০০ থেকে ৯০০০ কর্মী। এর আগেই সেই সকল কর্মীদের ২০% বেতন ছাঁটাই করে দেওয়া কথা বলেছিল টাটা গ্রূপ।

প্রসঙ্গত, গত ১৬ই জুন জাগুয়ার ল্যান্ড রোভার ব্র্যান্ড, লন্ডনের বৃহত্তম গাড়ি উৎপাদন সংস্থার ৩০% লোকসান হওয়ার পর হাজার জন কর্মী ছাঁটাই করে টাটা মোটর্স। আর এরপর করোনা ভাইরাসের জেরে বিশ্বব্যাপি আর্থিক পরিস্থিতি একেবারে শোচনীয়। ভারতে এই বছর এপ্রিল মাসে ৯,৮৯৪ কোটি টাকার লোকসান করেছে টাটা মোটরস। সেখানে ২০১৯ সালের এই সময় প্রায় ১১০০ কোটি টাকার লাভ হয়েছিল সংস্থার।