Tata Group: আর চলবে না আম্বানি-আদানির এক তরফা রাজত্ব! এবার কড়া চ্যালেঞ্জ দিতে হাজির টাটা (Tata Group)। একেবারে সম্মুখ সমর যাকে বলে আর কি! আর চলবে না আম্বানি-আদানির এক তরফা রাজত্ব! এবার কড়া চ্যালেঞ্জ দিতে হাজির টাটা। মনে প্রশ্ন আসছে তাই তো? হঠাৎ কি বিষয়ে চ্যালেঞ্জ নিয়ে হাজির হলো টাটা? তাও আবার আম্বানি আদানির বিপরীতে। চলুন বিস্তারিত জেনে নেওয়া যাক। ভারতের বৃহত্তম শিল্প গোষ্ঠী গুলির মধ্যে অন্যতম টাটা গোষ্ঠী। এই গোষ্ঠীর একাধিক ব্যবসার মধ্যে অন্যতম উল্লেখযোগ্য ব্যবসাটি হল টাটা পাওয়ার। নবায়নযোগ্য শক্তি উৎপাদনকারী টাটা পাওয়ারের লগ্নীর পরিমাণ ২০২৪-২৫ অর্থবর্ষে বাড়তে চলেছে। গত বছরের তুলনায় প্রায় দ্বিগুণ হতে চলেছে মূলধনের পরিমাণ।
সম্প্রতি টাটা কোম্পানির শেয়ার হোল্ডারদের মধ্যে একটি বৈঠকের আয়োজন করা হয়েছিল। সেই বৈঠকে সংস্থার চেয়ারম্যান চন্দ্রশেখরন একটি বড় ঘোষণা করেন। তিনি জানান এ বছর সংস্থার মূলধন হিসেবে লগ্নী করা হতে চলেছে ২০ হাজার কোটি টাকা। ইতিমধ্যে এই পরিমাণ অর্থ সঞ্চয়ের জন্য তহবিল গঠন করা শুরু হয়ে গিয়েছে। কিছুটা ঋণ নেওয়া হবে আর বাকি অর্থ অভ্যন্তরীণ ক্যাশ ফ্লো এর মাধ্যমে যোগাড় করা হবে। সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো লগ্নির বেশিরভাগ অংশটাই থাকবে টাটা পাওয়ারের জন্য। সবুজ শক্তির বাজারে একটি শক্তিশালী মজবুত ভিত তৈরি করতে উঠেপড়ে লেগেছে টাটা গোষ্ঠী। এতদিন এই বিষয়টিতে সব থেকে বেশি আধিপত্য ছিল আম্বানি এবং আদানি গ্রুপের। টাটার এই পদক্ষেপ সরাসরি চ্যালেঞ্জের (Tata Group) মুখে দাঁড় করিয়ে দিয়েছে তাদের।
তবে আম্বানি বা আদানি গ্রুপ যে একেবারে চুপচাপ বসে রয়েছেন তা কিন্তু নয়। অনেক আগেই এই নির্দিষ্ট খাতে বড় অংকের লগ্নী করার ঘোষণা করেছিলেন আম্বানিরা। ২০২২ সালেই তিনি জানিয়েছিলেন ১৫ বছরের মধ্যে ৭৫০০ কোটি ডলার বিনিয়োগ করতে চলেছেন ক্লিন এনার্জির জন্য যা ভারতীয় মূল্যে ৬ লক্ষ কোটি টাকারও বেশি। রিলায়েন্স ইন্ডাস্ট্রিস (Tata Group) কিন্তু এই বিষয়টিকে নিয়ে অনেক বড় পরিকল্পনা করে রেখেছে। সৌর বিদ্যুৎ উৎপাদন থেকে শুরু করে তা কাজে লাগিয়ে সবুজ হাইড্রোজেন তৈরি করা এবং তা সর্বত্র বন্টন করা সবকিছু নিয়েই পরিকল্পনা তৈরি করে ফেলেছে আম্বানিরা। গুজরাটের জামনগরে ইতিমধ্যে চারটি কারখানা তৈরি করা হচ্ছে ধীরুভাই আম্বানির গ্রিন এনার্জি কমপ্লেক্সে।
আরও পড়ুন ? Tata Curvv EV: ১৫ মিনিট চার্জ দিলেই যথেষ্ট, ছুটবে ১৫০ কিমি! ফের EV গাড়ির জগতে বিপ্লব টাটাদের
পিছিয়ে নেই আদানি গ্রুপও। আদানি গ্রুপের কর্ণধার গৌতম আদানি প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন ২০৩০ সালের মধ্যে ২.৩ লক্ষ কোটি টাকা বিনিয়োগ করা হবে সবুজ শক্তি উৎপাদনের জন্য। খুব শীঘ্রই হয়তো সবুজ হাইড্রোজেন তৈরির জন্য নয় বিলিয়ান ডলার অর্থাৎ ভারতীয় মুদ্রায় প্রায় ৭৫ হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগ করতে চলেছে আদানি গ্রুপ। প্রায় ৩৩ হাজার কোটি টাকা খরচ করা হবে যন্ত্রপাতি এবং অন্যান্য বিষয়ের জন্য। এর মধ্যেই ধরা থাকবে কারখানা তৈরীর খরচও। প্রয়োজনীয় যাবতীয় খরচ খরচা করার পর যা বাকি থাকবে সেই অবশিষ্ট অর্থ দিয়ে তৈরি করা হবে একটি পাঁচ গিগাবাইট ইলেক্ট্রলাইজার তৈরী করার মত ক্ষমতা যুক্ত কারখানা।
এই পরিস্থিতিতে সবুজ শক্তি উৎপাদনের জন্য বড় বিনিয়োগ করতে চলেছে টাটা গোস্টীও (Tata Group)। এই বিনিয়োগ সংস্থার জন্য বড় পদক্ষেপ হতে চলেছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, এই পদক্ষেপ সংস্থার জন্য নতুন সূচনা হতে চলেছে। টাটা গোষ্ঠীর এই পদক্ষেপ থেকে স্পষ্টভাবেই বোঝা যায় যে তারা অন্যান্য বিষয়গুলির থেকে সবুজ শক্তি উৎপাদনের বিষয়টিকে সব থেকে বেশি প্রাধান্য দিচ্ছেন। এই ব্যবসার ক্ষেত্রে আধিপত্য সৃষ্টির লড়াইয়ে নামতে তারা একেবারে প্রস্তুত। এতদিন যে লড়াই শুধু আদানি আর আম্বানির মধ্যে সীমাবদ্ধ ছিল। এখন সেখানে যুক্ত হলো টাটা গোষ্ঠীর নামও। আম্বানি আদানিকে সরাসরি চ্যালেঞ্জের মুখে দাঁড় করিয়ে দিল টাটা গোষ্ঠী (Tata Group)। তবে যাই হোক না কেন আখেরে ভারতেরই লাভ হবে বলে মনে করা হচ্ছে। কারণ এই প্রতিযোগিতার মাঝে পড়ে কমবে খরচের পরিমাণ, বাড়বে প্রযুক্তির উদ্ভাবন। সব মিলে ভারতের জন্য ইতিবাচক ফলই নিয়ে আসবে সবুজ শক্তির উন্নয়ন।