নিজস্ব প্রতিবেদন : ভারতের মতো বিপুল জনসংখ্যার দেশ ইন্টারনেট ব্যবসায় একচ্ছত্র রাজত্ব শুরু করেছে মুকেশ আম্বানির সংস্থা Reliance Jio। একটা সময় হয়তো এমনটা ভাবা সম্ভব না হলেও বর্তমানে তা এখন স্পষ্ট। তবে আগামী দিনে এই মুকেশ আম্বানির সংস্থার বড় প্রতিদ্বন্দ্বী হতে চলেছে TATA এমনটাই জানাচ্ছে সংবাদ সংস্থা Bloomberg। কিন্তু কিভাবে ভারতের ইন্টারনেট বাজারে আধিপত্য কায়েম করা মুকেশ আম্বানির সংস্থার প্রতিদ্বন্দ্বী হবে TATA?
এনিয়ে সংবাদ সংস্থায় জানানো হয়েছে, টাটা সন্স ইতিমধ্যেই ইন্টারনেট ব্যবসার জন্য বিনিয়োগকারী খুঁজতে শুরু করেছে। টাটা সংস্থা ছোট থেকে বড় চা-কফি থেকে গাড়ি সহ নানান ব্যবসায় হোল্ডিং করে। বর্তমানে তাদের মোট সম্পত্তি ১১ হাজার ৩০০ কোটি ডলার। ভারতীয় মুদ্রায় যা প্রায়ই ৮ লক্ষ কোটি টাকার বেশি। বর্তমানে তাদের ভারতে ১০০-এর বেশি ব্যবসার চেন রয়েছে। আর এরাই এবার ইন্টারনেট ব্যবসার দিকে নজর দিতে শুরু করেছেন।
যদিও টেলিকম ব্যবসায় টাটার এই প্রথম পা রাখা তা নয়। এর আগেও টেলিকম ব্যবসার অভিজ্ঞতা রয়েছে টাটা সন্স সংস্থার। এমনকি তারাও একটা সময় টেলিকম ব্যবসায় নেমে একচ্ছত্র রাজত্ব করেছে ভারতের বাজারে। টাটা যখন টেলিকম ব্যবসা শুরু করে তখন দেশের বেশীরভাগ মোবাইল ব্যবহারকারীর হাতেই ছিল এই সংস্থার কানেকশন। সুতরাং পুরনো অভিজ্ঞতা এবং নতুন টেকনোলজির সাহায্যে ইন্টারনেট ব্যবসায় পা রাখলে টাটা মুকেশ আম্বানির বড় প্রতিদ্বন্দ্বী হয়ে উঠতে পারে এমনটাই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
ইন্টারনেট ব্যবসার পাশাপাশি টাটা সংস্থা ই-কমার্স এর ক্ষেত্রেও মুকেশ আম্বানির সংস্থা সহ অন্যান্য ই-কমার্স সংস্থাগুলির বড় প্রতিদ্বন্দ্বী হয়ে উঠতে পারে। ১৫২ বছরের ঐতিহ্যবাহী এই সংস্থা বর্তমানে ‘সুপার অ্যাপ’ বানানোর জন্য ওয়ালমার্ট ইনকর্পোরেটেডের মত বহুজাতিক বিনিয়োগকারী সংস্থাগুলির সাথে কথাবার্তা চালাচ্ছে। সূত্র মারফত জানা গিয়েছে ওয়ালমার্ট ইনকর্পোরেটেডের ২৫০০ কোটি ডলার বিনিয়োগ করতে পারে।
এই ‘সুপার অ্যাপ’-এর মাধ্যমে আগামী দিনে গ্রাহকরা তাদের জামাকাপড়, লাইফস্টাইল, ইলেকট্রনিক্স জিনিসপত্র, মুদিখানার জিনিসপত্র, হাতে গরম খাবার, শিক্ষাসংক্রান্ত পরিষেবা, ট্রাভেল বুকিং ইত্যাদি পরিষেবার সুযোগ এক নিমিষে নিতে পারবেন গ্রাহকরা। এর পাশাপাশি এই অ্যাপে টাটা সনসের প্রতিটি জিনিসের উপর মিলবে দুর্দান্ত ছাড়। এর উপর আবার যদি টাটার সাথে ওয়ালমার্ট-এর চুক্তি হয় এবং ওয়ালমার্ট যদি বিনিয়োগ করে তাহলে ফ্লিপকার্ট (Flipkart) থেকেও সুবিধা পাওয়া যাবে।
তবে এই দুই ক্ষেত্রেই মুকেশ আম্বানিকে টেক্কা দেওয়া খুব একটা সহজ হবে না বলেও মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। কারণ মুকেশ আম্বানির সংস্থা ইতিমধ্যেই টেলিকম বাজারে ৪০ কোটি গ্রাহক নিজেদের পকেটে পুরে নিয়েছে। দ্বিতীয়ত ই-কমার্স ব্যবসায় তারা দেশে লকডাউন জারি হওয়ার সময় থেকেই জোর দিতে শুরু করেছে এবং যে সকল জায়গায় তারা পরিষেবা দিতে শুরু করেছে সেখানে বেশ জনপ্রিয়তাও অর্জন করেছে। তবে ৬৩ বছর বয়সী মুকেশ আম্বানির সংস্থার সাথে ৮২ বছর বয়সী রতন টাটার সংস্থা প্রতিদ্বন্ধিতা হলে দেশের আমজনতা অর্থাৎ গ্রাহকরা অনেক বেশি সুযোগ-সুবিধা পাবেন বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।