Teen Sadvi In Kumbh Mela: আগ্রার এই ১৩ বছরের কিশোরীর ছোটবেলা থেকেই IAS অফিসার হওয়ার স্বপ্ন ছিল। কিন্তু একটি সিদ্ধান্তে বদলে গেল তার গোটা জীবন। জীবনের আমূল পরিবর্তন ঘটে গেল মহাকুম্ভ মেলায় গিয়ে। কেন আচমকা নিজের সিদ্ধান্ত বদল করলো এই কিশোরী? ওই কিশোরীর সিদ্ধান্তকে বাবা-মাও সমর্থন করল। নিজের মেয়েকে অবশেষে তুলে দিলো প্রয়াগরাজে সাধুর হাতে। আজকের এই প্রতিবেদনটি পড়লে জানতে পারবেন সবকিছুই বিস্তারিতভাবে।
প্রয়াগরাজে এখন চলছে মহাকুম্ভ। প্রায় ১২ বছর পর প্রয়াগরাজে কুম্ভমেলা হচ্ছে। আগ্রার ওই কিশোরী মহাকুম্ভে গিয়েছিল মা-বাবার সঙ্গে। সেখানেই ঘটে গেল তার জীবনের সবথেকে বড় ঘটনা। নিজেকে জাগতিক সমস্ত কিছু থেকে সরিয়ে সমর্পণ করল ঈশ্বরের নামে। নিজের ছোটবেলার স্বপ্নকে বিসর্জন দিয়ে দিল সন্ন্যাসিনী (Teen Sadvi In Kumbh Mela) হওয়ার জন্য। মহাকুম্ভে গিয়ে বাবা মার কাছে নিজের সিদ্ধান্তের কথা জানায় এই কিশোরী, মা-বাবাও বিষয়টিকে ভগবানের ইচ্ছে বলেই মনে করেন। তাই মেয়ের ইচ্ছেপূরণে তাকে প্রয়াগরাজে এক সাধুর আশ্রমে রেখে আসেন।
মেয়েটির (Teen Sadvi In Kumbh Mela) বাবা-মার বক্তব্য মহাকুম্ভে গিয়ে তার আত্ম উপলব্ধি হয়েছে। সেই কারণে নিজেকে সমস্ত জাগতিক বিষয় থেকে সরিয়ে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল সে। এমনটাই জানিয়েছেন কিশোরীর মা রিমা সিং। একটি সংবাদমাধ্যমকে তিনি জানান, গত তিন বছর ধরে জুনা আখড়ার মহন্ত কৌশলগিরি মহারাজ তাদের গ্রামে ভাগবত কথা শোনাতে আসতেন। তেমনি একটি সেশনে মহন্তজির কাছে তার মেয়ে রাখী দীক্ষা নেয়। এর পর কৌশলগিরি মহারাজ তার মেয়েকে মহাকুম্ভের ময়ে জুনা আখড়ার যাওয়ার আমন্ত্রণ জানান। সেই কারণেই রাখীকে নিয়ে তার স্বামী সন্দীপ, আরেক মেয়ের এবং তিনি নিজে এখানে এসেছিলেন। রাখীর মধ্যে আমূল পরিবর্তন শুরু হয়ে যায় এই মহাকুম্ভে আসার পর থেকেই। এখানে আসার পর রাখী বলে, ইহজগতের সমস্ত চাহিদা ছেড়ে সে সন্ন্যাসিনী হতে চায়। এই সিদ্ধান্তকে ভগবানের সিদ্ধান্ত বলে মেনে নিয়েছিল তারা এবং মেয়ের সাথে এই বিষয়ে কোনোরকম অশান্তি করেনি।
আরও পড়ুন:Huge Bluefin Tuna Fish: বিশালাকার ২৭৬ কেজি ওজনের টুনা মাছ, নিলামে উঠলো ১১ কোটি টাকা
সিং পরিবার আগ্রায় থাকে একটি ভাড়া বাড়িতে। সন্দীপ সিং পেঁড়ার ব্যবসা করেন। তার দুই কন্যাসন্তানের নাম হল রাখী ও নিক্কি। রাখীর মা রিমা বলেন, রাখী ছোটবেলা থেকেই একটি মাত্র স্বপ্ন দেখেছে, বড় হয়ে সে হবে IAS। মহাকুম্ভে এসে সন্ন্যাসিনী হওয়ার জন্য সেই সিদ্ধান্তকে ত্যাগ করল সে। মহন্ত কৌশলগিরি মহারাজ সংবাদ সংস্থাকে বলেন, রাখীর উপর কোনরকম চাপ সৃষ্টি করা হয়নি। নিজে থেকেই জাগতিক বিষয়গুলি থেকে দূরে সরে যেতে শুরু করেছিল। সিং পরিবারের সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরেই তার যোগাযোগ। ওদের আর্জি মেনেই রাখিকে আশ্রমে রাখতে রাজি হয়েছি। সন্ন্যাসিনী হওয়ার পর রাখীর নাম পরিবর্তন হয়ে হবে গৌরী গিরি।
মেয়ে চিরদিনের জন্য দূরে চলে গেলে কেমন লাগবে বাবা-মার? এই প্রশ্নের উত্তরে রাখীর মা বলেন, মেয়ে হিসাবে তার জন্য চিরকাল উদ্বেগ থাকবে। কোথায় রয়েছে, কী করছে, খোঁজ খবর নিতে মন চাইবে। এমনকি তাদের আত্মীয়রা পর্যন্ত প্রশ্ন করছে কেন মেয়েকে আশ্রমে রেখে আসার মত চরম সিদ্ধান্ত নিল তারা। সকলকেই জানিয়েছি এটা ভগবানের ইচ্ছে।জুনা আখড়ার এক মহন্ত বলেন, গৌরীর (Teen Sadvi In Kumbh Mela) পিণ্ডদান প্রক্রিয়া এবং অন্যান্য ধর্মীয় রীতিনীতি শুরু হবে আগামী ১৯ জানুয়ারি থেকে। এইসব প্রক্রিয়া সম্পন্ন হওয়ার পর সে আনুষ্ঠানিকভাবে এই গুরু পরিবারে সদস্যা হবে। শুরু হবে জীবনের এক নতুন অধ্যায়।