Cancer Train: মারণরোগের রেলগাড়ি, পাঞ্জাবের এই ক্যান্সার ট্রেন দেশের জন্য অশনিসংকেত

Prosun Kanti Das

Published on:

Advertisements

Cancer Train: “ক্যানসার ট্রেন”, ট্রেনের এমন অদ্ভুত নাম হয় কখনো শুনেছেন কি? এই অদ্ভুত নাম নাকি সম্পূর্ণ দিয়েছেন আমজনতারাই। একেবারে নিয়ম করে নির্দিষ্ট সময়ে প্রত্যেকদিন এই ট্রেনটি ছাড়ে এবং পৌঁছে যায় নিজের গন্তব্যস্থলে। স্বাভাবিকভাবে আবার ফিরেও আসে ট্রেনটি। ক্যান্সার ট্রেন নাম বলে এতে বিশেষভাবে কোন কিছু নেই, একেবারে অন্যান্য ট্রেনগুলোর মতই সাধারণ। আলাদা কোন কিছুই এতে দেখতে পাবেন না। তবে এ কথা সত্যিই এই ট্রেনের যাত্রীরা সবাই ক্যান্সারে আক্রান্ত।

Advertisements

দেশের অন্যান্য পরিবহন ব্যবস্থাগুলোর থেকে ভারতীয় রেল হলো অন্যতম বৃহৎ একটি পরিবহন ব্যবস্থা। দূর হোক কিংবা কাছে খুব সহজেই আপনি পৌঁছে যেতে পারবেন আপনার গন্তব্যস্থলে এবং খরচাও করতে হবে নিতান্তই কম। কোথাও আবার রেল ছাড়া যাতায়াতের উপায়ও নেই। যারা নিত্যদিন ট্রেনে যাতায়াত করে তাদের কাছে ট্রেন হয়ে ওঠে দ্বিতীয় বাড়ির মত। তাই এদেশে ‘ক্যানসার ট্রেন’ (Cancer Train) কল্পনা করা এমন কিছু কঠিন ব্যাপার নয়। কিন্তু এই ট্রেনটিকে মারণরোগীদের ট্রেন বলার আসল কারণ জানা আছে আপনার?

Advertisements

পাঞ্জাবের এই ট্রেনটি বেশ জনপ্রিয় হয়েছে এই অদ্ভুত নামের জন্য। রেলের দেওয়া নাম আবোহার-যোধপুর প্যাসেঞ্জার। ট্রেনটি নিয়ম করে প্রতিদিন রাত সাড়ে ৯ টা নাগাদ পাঞ্জাবের ভাটিণ্ডা স্টেশন থেকে রওনা দেয়। একেবারে ভোরবেলা পৌঁছে যায় রাজস্থানের বিকানের শহরে। পাঞ্জাব থেকে ক্যান্সার রোগীরা এখানকার একটি বিশেষ হাসপাতালে আসেন চিকিৎসা করানোর জন্য। সেই জন্যই ট্রেনটির নাম হয়েছে ক্যান্সার ট্রেন (Cancer Train)।

Advertisements

যারা ক্যান্সার রোগী তাদের কোনরকম ভাড়া দিতে হয় না এই ট্রেনটিতে চড়তে গেলে। রোগীর সাথে যদি তার পরিবারের লোকজন থাকে তাদের ভাড়াও কিছুটা মুকুব করে দেওয়া হয়। এই ট্রেনে যাত্রা করলে দেখতে পাবেন প্রতিদিন কত পরিমাণে ক্যান্সার আক্রান্ত রোগীরা যাতায়াত করছে এই ট্রেনটিতে। কিন্তু গোটা পাঞ্জাবে কি কোথাও ক্যান্সারের চিকিৎসা হয় না? পাঞ্জাবে ক্যান্সারের চিকিৎসা করা গেলেও সাধারণ মানুষের হাতের বাইরে। মূলত এই রাজ্যের বেসরকারি হাসপাতালগুলিই ক্যানসার চিকিৎসার জন্য ভালো। এইসব বেসরকারি হাসপাতালগুলির চিকিৎসার খরচ এত বেশি যা চালানো সত্যিই অসম্ভব। সরকারি জায়গায় যেভাবে চিকিৎসা হয়, তাতে ভরসা করতে পারেন না রোগীরা। তাই ভরসা একটাই, ক্যানসার ট্রেন (Cancer Train)।

আরো পড়ুন: উৎসবের ভ্রমণে টিকিটের জটিলতা দূর করুন, কারেন্ট বুকিংয়ের মাধ্যমে সহজে পেতে পারেন কনফার্ম টিকিট

তাই বলে ভিন রাজ্য রাজস্থানে কেন যেতে হয় পাঞ্জাবের বাসিন্দাদের? আসলে রাজস্থানের যে হাসপাতালে পাঞ্জাবের রোগীরা চিকিৎসার জন্য যান, সেখানেও সবটাই প্রায় বিনামূল্যে হয়। বাড়তি সুবিধা হিসেবে পেয়ে যান একেবারে সামান্য খরচায় চিকিৎসা এবং খাওয়া-দাওয়ার জন্যও তেমন খরচ নেই। যে ধর্মশালাতে থাকা হয় তার খরচাও একেবারে কম। সেই কারণে মারণরোগীরা এই রাজ্যের হাসপাতালটিতে চিকিৎসা করানোর জন্য আসেন।

প্রতিনিয়ত পাঞ্জাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে ক্যান্সার রোগীর সংখ্যা। এর পেছনে একাধিক কারণ লুকিয়ে আছে। পাঞ্জাবের অধিকাংশ অধিবাসী নিজেদের জীবিকা নির্বাহ করে কৃষিকার্য করে। বর্তমানে যেখানে কৃষিকাজ সেখানে কীটনাশকের উপস্থিতি অবশ্যই থাকবে। এর থেকেই ক্যানসারের বীজ ছড়িয়ে পড়ছে রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে। সমীক্ষার দ্বারা এমনটাই ধরা পড়েছে। শুধু কীটনাশক নয়, কলকারখনার ভারী ধাতুর বর্জ্য জলে মিশে ক্যানসারের প্রবণতা বাড়িয়েছে। একাধিক পদক্ষেপ নেওয়া হলেও কোন সুরাহা হয়নি এই সমস্যার। দিনকে দিন বাড়তেই চলেছে ক্যান্সার রোগীদের সংখ্যা। কেউ যদি প্রতিদিন ভাটিণ্ডা স্টেশনে যান তাহলেই দেখতে পাবেন কি পরিমানে ক্যান্সার রোগীরা যাচ্ছেন রাজস্থানে। একটু সন্ধ্যে হলেই স্টেশনে ভিড় জমাতে শুরু করেন মারণরোগীরা। ফিরে আসার আশা নিয়ে তারা এই ট্রেনে চেপে বসেন। কিন্তু দুঃখের বিষয় হল সকলের আশা পূরণ হয় না। ব্যর্থ হলেও বহু সংখ্যক ক্যান্সার রোগীরা প্রতিদিন এই ট্রেনটিতে যাত্রা করেন সুস্থ হওয়ার আশায়।

Advertisements