নিজস্ব প্রতিবেদন : কৌশিকী অমাবস্যার (Kaushiki Amavasya) টানে এবার সুদূর রাশিয়া (Russia) এবং থাইল্যান্ড (Thailand) থেকে তারাপীঠ (Tarapith) এলেন যোগিনীরা। তারা মায়ের (Tara Maa) অপার মহিমা যেন এবার পৌঁছে গেল আন্তর্জাতিক মহলে। কৌশিকী অমাবস্যায় প্রতিবছর রাজ্যের পাশাপাশি দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে সাধু-সন্তদের আগমন হলেও বিদেশ থেকে খুব কম ভক্তদের আগমন লক্ষ্য করা যায়। তবে এবার কৌশিকী অমাবস্যাই রাশিয়া এবং থাইল্যান্ড থেকে আগত দুই ভক্তের দেখা মিলবে তারাপীঠে।
সেপ্টেম্বর মাসের ১৪ তারিখ কৌশিকী আমাবস্যা। হাতে মাত্র কয়েকটা দিন, এখন থেকেই তারাপীঠের আনাচে-কানাচে ভক্তদের সমাগম দেখা যাচ্ছে। আশেপাশের হোটেল প্রায় পরিপূর্ণ। প্রত্যেক বছরই এই সময় তারাপীঠে রেকর্ড পুণ্যার্থীদের দেখা যায়। যার মধ্যে একটা বড় শতাংশ তন্ত্রসাধকদের থাকেন। দূর দূরান্ত থেকে বিভিন্ন তন্ত্রসাধকরা এই সময় উপস্থিত হন তারাপীঠে তন্ত্রসাধনায় নিমজ্জিত হতে। এবার সুদূর বিদেশ থেকে এক তন্ত্রসাধিকাকে দেখা গেল কৌশিকী অমাবস্যায় তন্ত্রসাধনার জন্য নিজের দেশ ছেড়ে বাংলায় আসতে। যোগিনী অন্নপূর্ণা নামক এক তন্ত্রসাধিকা রাশিয়া থেকে তারাপীঠ এসেছেন কৌশিকী অমাবস্যায় মা তারার আরাধনায় বসবেন বলে।
জানা যাচ্ছে, প্রায় প্রত্যেক বছরই কৌশিকী অমাবস্যা উপলক্ষে তারাপীঠে আসেন এই যোগিনী। অমাবস্যা তিথিতে তারাপীঠ মহাশ্মশানের মহাযজ্ঞ করে থাকেন একাধিক আশ্চর্য রকম জিনিসপত্র দিয়ে। মনে করা হয় মহাশ্মশানে দেবী তারার আবাস তাই এই মহাশ্মশান আদর্শ স্থান যজ্ঞের জন্য। তখনই প্রশ্ন উঠেছে কেন এই মহাযজ্ঞ এতখানি গুরুত্বপূর্ণ? কি বা ফল পায়? জানা যাচ্ছে, এই তিথিতে তারাপীঠ মহাশ্মশানে মহাজজ্ঞ করলে অসাধ্য সাধন হয়, পূরণ হয় সকল মনস্কামনা, এমনকি অনেক তন্ত্রসাধক ঘন্টার পর ঘন্টা মহাযজ্ঞ করেন শুধুমাত্র অমরত্ব লাভের জন্য। সুদূর রাশিয়া থেকে যোগিনী অন্নপূর্ণা নাথও এসেছেন সেই মহাযজ্ঞে শামিল হতে।
এছাড়াও প্রত্যেক বছর নিয়ম করে এই মহাযজ্ঞের শামিল হয় তৃতীয় লিঙ্গের আরেক যোগিনী। তিনি এসেছেন দিল্লি থেকে। এছাড়াও আরও একজন এসেছেন সুদূর থাইল্যান্ড থেকে। এই সকল প্রতিটি সাধু সন্তরা কেবলমাত্র কৌশিকী অমাবস্যায় সাধনা করে সিদ্ধিলাভের আশায় দূর দূরান্ত থেকে এসেছেন তারা মায়ের চরণে। আগামী দিনেও এমন দেশ-বিদেশ থেকে কারা কারা আসছেন তার দিকে তাকিয়ে তারাপীঠ।
গত কয়েক বছর ধরে কৌশিকী অমাবস্যায় তারাপীঠে ভক্তদের সমাগমের ক্ষেত্রে কখনো বাধা হয়ে দাঁড়ায় কোভিড, আবার কখনো বাধা হয়ে দাঁড়ায় হোটেল সহ বিভিন্ন পরিষেবার মূল্যবৃদ্ধি। তবে এবার তারাপীঠ মন্দির কমিটি এবং প্রশাসন প্রথম থেকেই প্রচেষ্টা চালিয়ে এই সকল জায়গায় লাগাম টেনেছে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে আশা করা হচ্ছে, এবার তারাপীঠে কৌশিকী অমাবস্যায় ভক্ত সমাগম পুরাতন সব রেকর্ডকে ভেঙ্গে দেবে।