নিজস্ব প্রতিবেদন : নতুন কৃষি আইন প্রত্যাহারের দাবিতে দেশজুড়ে জোরদার হয়ে উঠেছে কৃষক আন্দোলন। আর এই কৃষক আন্দোলনে শামিল হয়ে দেশের বিভিন্ন রাজ্য থেকে লক্ষ লক্ষ লোক জমায়েত করেছেন দিল্লি সীমান্তে। কেন্দ্রের সাথে দফায় দফায় আলোচনা হলেও কোনো সমাধান সূত্র বেরিয়ে না আসায় কৃষকদের আগাম ঘোষণা মত আগামীকাল অর্থাৎ মঙ্গলবার দেশজুড়ে সাধারণ ধর্মঘট পালিত হবে। তবে এই কৃষকদের ডাকা ধর্মঘটে পশ্চিমবঙ্গে কতটা প্রভাব পড়বে তাই এখন লাখ টাকার প্রশ্ন।
ইতিমধ্যেই কৃষকদের এই আন্দোলনকে সমর্থন জানিয়েছেন দেশের বড় বড় সেলিব্রিটি থেকে শুরু করে বিরোধী রাজনৈতিক দল একজোটে। পাশাপাশি তাদের দ্বারা ডাকা মঙ্গলবারের ধর্মঘটকে সমর্থন জানিয়েছে দশটি কেন্দ্রীয় ট্রেড ইউনিয়ন, কংগ্রেস, আম আদমি পার্টি, টিআরএস, এনসিপি এবং বামপন্থী প্রত্যেকটি রাজনৈতিক দল। যে কারণে দেশজুড়ে এই বনধের ভালো রকম প্রভাব পড়বে বলেই মনে করা হচ্ছে।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, আগামীকাল দেশের বেশিরভাগ রাজ্যে স্বাভাবিক জনজীবন স্তব্ধ হয়ে যেতে পারে। এর মূলে তাদের ব্যাখ্যা, কৃষক আন্দোলনকে যেভাবে দেশজুড়ে সমর্থন জানানো হচ্ছে তাতে যেমন বিজেপি বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলি কৃষকদের ডাকা ধর্মঘটকে সমর্থন করেছে, ঠিক তেমনি এই আন্দোলন বর্তমানে সাধারণ মানুষের মনেও একটা জায়গা করে নিয়েছে। আর এই সকল বর্তমান পরিস্থিতির পরিপ্রেক্ষিতে আগামীকাল কৃষকদের এই ধর্মঘটে যথেষ্ট প্রভাব পড়তে চলেছে। আর পশ্চিমবঙ্গে?
পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কৃষকদের এই আন্দোলনকে প্রথম থেকেই সমর্থন জানাচ্ছেন। এমনকি সোমবার মেদিনীপুরের সভা থেকেও তিনি তাদের এই আন্দোলনকে সমর্থন জানানোর পরিপ্রেক্ষিতে বলেন, “নবান্নের ধান ছুঁয়ে শপথ করছি আমরা কৃষকদের পাশে ছিলাম, আছি এবং থাকবো। সিঙ্গুর, নন্দীগ্রাম, নেতাই ভুলিনি। আর ভারতও ভুলিনি। আমি কৃষিজীবীদের ভুলিনি। আগামীকাল কৃষকদের আন্দোলন আমি সমর্থন করছি। তবে বনধ দলের নীতির পরিপন্থী না হওয়ায় তা সমর্থন করছি না। তবে কালকের আন্দোলনকে আমি সমর্থন করছি, কাল ব্লকে ব্লকে আন্দোলন হবে। বিজেপি কৃষকদের ক্ষমতা কেড়ে নিচ্ছে। হয় কৃষি আইন প্রত্যাহার করুক অথবা ক্ষমতা ছাড়ুক।”
অর্থাৎ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় স্পষ্ট জানিয়ে দেন তিনি কৃষকদের পাশে থেকে কৃষকদের আন্দোলনকে সমর্থন করলেও কৃষকদের দ্বারা ডাকা ধর্মঘটকে তিনি সমর্থন করছেন না। আর এর পরেই পশ্চিমবঙ্গে এই ধর্মঘটের প্রভাব কতটা পড়বে তা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। কারণ বিশেষজ্ঞদের মতে, তৃণমূল রাজ্যে শাসনে আসার পর রাজ্য সরকারের কড়া মনোভাবে বিগত ৯ বছরে রাজ্যে সেভাবে কোন ধর্মঘটকে সফল হতে দেখা যায়নি। পাশাপাশি এই কয়েক বছরে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের দ্বারা একাধিক ধর্মঘট ডাকা হলেও সাধারণ মানুষের রাস্তায় নামার স্বতঃস্ফূর্ততা লক্ষ্য করা গিয়েছে।