সামান্য রোজগারে চলে সংসার, KKR স্টার সূয়াসের লড়াই ২২ গজের থেকেও কঠিন

আরসিবির (RCB) বিরুদ্ধে ইমপ্যাক্ট প্লেয়ার (Impact Player) হিসেবে মাঠে নেমে বাজিমাত করেছেন তিনি। এর আগে ছিল না কোন প্রথম শ্রেণীর ম্যাচ খেলার অভিজ্ঞতা কিম্বা অভিজ্ঞতা নেই কোন লিস্ট এ ক্রিকেট খেলার। তাই আইপিএল (IPL) এর মত এত বড় মঞ্চে নিজেকে প্রমাণ করতে পারবেন কিনা সেই ব্যাপারে একটা প্রশ্ন চিহ্ন থেকেই গিয়েছিল। কিন্তু জীবনের প্রথম অগ্নিপরীক্ষায় সসম্মানে উত্তীর্ণ হয়েছেন তিনি। তবে তার এই যাত্রাটা মোটেও সুগম ছিলনা। কথা হচ্ছে কেকেআরের (KKR) নতুন আবিষ্কার বিস্ময় বালক সুয়াশ শর্মার (Suyash Sharma)।

সুয়াশ উঠে এসেছেন দিল্লি থেকে। ডান হাতে লেগ স্পিন করার পাশাপাশি ডান হাতে ব্যাটটাও করতে জানেন। তবে বছর উনিশের সুয়াশকে যথেষ্ট যুদ্ধ করেই আজকের এই জায়গায় পৌঁছাতে হয়েছে। সুহাশের বাবা দীর্ঘদিন ধরেই ক্যান্সার আক্রান্ত। তার উপর করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ে প্রয়াত হয়েছেন তার কোচ সুরেশ বাত্রা। পরিবারে ছিল তীব্র অভাব। কিন্তু ক্রিকেটের প্রতি ভালোবাসার কোনো অভাব ছিল না সুহাশের কাছে। তাইতো প্রথম সুযোগেই রাঙিয়ে দিতে পেরেছেন নিজের অভিষেকের মঞ্চটি।

আর্থিক অভাব অনটনের কারণে অনেক প্রতিভা থাকা সত্ত্বেও বেশ কিছু সহজ সুযোগ হাতছাড়া হয়েছে তার। নাইট রাইডার্স এর খেলার আগে তিনি খেলতেন দিল্লি অনূর্ধ্ব ২৫ দলে। সেখানেও প্রতিভা থাকা সত্ত্বেও চান্স পাননি সিনিয়র দিলে। এমনকি ক্যাম্পে আসার আগ পর্যন্ত কেকেআর অধিনায়ক নীতিশ রানা (Nitish Rana) তাকে চিনতেনও না। কেকেআর এর আগে খেলেছেন দেনা ব্যাংকের (Dena Bank) হয়ে। তারও খেলেছেন বিখ্যাত মাদ্রাস ক্লাবের (Madras Club) হয়ে।

কিন্তু দিল্লির কোন ক্লাবের সঙ্গেই সরকারি চুক্তি না হওয়াতে খুব কম পয়সাতেই খেলতে হতো তাকে। এমনকি দিল্লির অনূর্ধ্ব ২৫ দলে খেলার সময় রটে গিয়েছিল যে তিনি রাজস্থানের খেলোয়াড়। অনেক কষ্ট করে তাকে এই জায়গা থেকে বেরিয়ে আসতে হয়েছে। তবে আইপিএল বদলে দিয়েছে তার জীবন। অভিষেকের তিন উইকেট নিয়ে আরসিবির মিডিল অডারে ভাঙ্গন ধরান তিনিই।

এদিন খেলার সুযোগ পাওয়াটাও তার কেকেআর এ সুযোগ পাওয়ার মতোই। মূল অকশন থেকে কেনা হয়নি তাকে। ডিসেম্বরে মিনি অকশনে তাকে বেস প্রাইস ২০ লাখ টাকা দিয়ে কিনে নেয় কেকেআর। অনুশীলনেই যথেষ্ট নজর কেড়েছিলেন তিনি। আর এদিন টিম ম্যানেজমেন্ট ও অধিনায়ক তার প্রতি যে আস্থা রাখলেন তার মর্যাদাও দিলেন নিজের প্রতিভা দিয়ে।