দেশের লাইফলাইন ভারতীয় রেল (Indian Railways) সারা বিশ্বের সামনে ভারতের মান বাড়িয়েছে। দেশের গর্বের এই প্রতিষ্ঠান, অত্যাধুনিক ভারতীয় ইঞ্জিনিয়ারিং এর ফসল। শুরুটা ব্রিটিশরা করলেও এরপর ভারতীয়রা এগিয়ে নিয়ে যায় এই প্রতিষ্ঠানকে। চমকে দেবার মতন একাধিক কাজ করেছে ভারতীয় রেল। তবে তার মধ্যে অন্যতম হলো দীর্ঘতম ট্রেন তৈরি। আর সেই ট্রেনগুলো এতটাই বড় যে সেগুলি চালানোর জন্য প্রয়োজন হয় তিন থেকে চারটি ইঞ্জিন।
এক শহর থেকে অন্য আর এক শহরে অথবা এক রাজ্য থেকে অন্য আর এক রাজ্যে যাতায়াতের জন্য আমরা ট্রেনকেই সর্বোত্তম, সবচেয়ে সস্তা এবং নিরাপদ পরিবহনের মাধ্যম হিসেবে দেখি। ভারতে প্রতি দিন প্রায় কোটি কোটি মানুষ ট্রেনে যাতায়াত করে। আপনারা অনেকেই জানেন যে দেশের দ্রুততম ট্রেন কোনটি। কিন্তু আমরা যদি আপনাকে জিজ্ঞাসা করি যে, দেশের দীর্ঘতম ট্রেন (Longest Train) কোনটি, অনেকেই হয়তো সেই প্রশ্নের জবাব দিতে পারবেন না। কারণ এ সম্পর্কে আপনাদের অনেকেরই হয়তো ধারণা নেই। তাই এই প্রতিবেদনের মাধ্যমে জেনে নিন সেই ট্রেনগুলোর সম্পর্কে।
১) সুপার ভাসুকি (Super Vasuki)
এই ট্রেনটি সম্পর্কে আপনাদের মধ্যে অনেকেই হয়তো কমই জানেন। ভারতের অন্যতম দীর্ঘতম ট্রেনের নাম সুপার ভাসুকি। স্বাধীনতা দিবসের ৭৫তম বার্ষিকীতে এই ট্রেনটি চালু হয়েছিল বলে জানা গেছে। এই ট্রেনটির একটি বিশেষ বিষয় হল যে, এটি ৬টি ইঞ্জিন দিয়ে চলে। এই ট্রেন সম্পর্কে আরও বলা হয়েছে যে, ট্রেনটি প্রায় ২০ টি থেকে ৩০ টি কোচ নয়, একেবারে ২৯৫ টি কোচ একসঙ্গে বহন করে। এবং এই ট্রেনটিই প্রায় সাড়ে তিন কিলো মিটার দীর্ঘ। ট্রেনের রুট ছত্তিশগড়ের কোরবা থেকে শুরু হয়ে শেষ হয় নাগপুরের রাজনন্দগাঁও পর্যন্ত বিস্তৃত।
২) শেষনাগ ট্রেন (SheshNaag)
শেষনাগ ট্রেনটিকেও দীর্ঘতম ট্রেনের তালিকায় বিবেচনা করা হয়। এই ট্রেনের দৈর্ঘ্য প্রায় ২ কিলো মিটার ৮০০ মিটার। বলা হয় যে, এই ট্রেনটি এতটাই দীর্ঘ যে, সেটিকে টানতে প্রায় ৫ টি ইঞ্জিনের সাহায্য নিতে হয়। এর ট্রায়াল নাগপুর ডিভিশন থেকে শুরু করে বিলাসপুর ডিভিশনের কোরবা পর্যন্ত করা হয়েছিল। এবং এটি ৪ টি ট্রেনের সংযোগ দিয়ে শুরু হয়েছিল। যদিও এই সুপার ভাসুকি এবং শেষনাগ ট্রেন গুলি কোনো যাত্রীবাহী ট্রেন নয়, এগুলি হল মালবাহী ট্রেন।
৩) বিবেক এক্সপ্রেস (Vivek Express)
অনেকেই শুনে থাকবেন এই ট্রেনের কথা। কারণ এটি দীর্ঘতম যাত্রীবাহী ট্রেন। ভারতের দীর্ঘতম দূরত্বের ট্রেন বলে বিবেচনা করা হয় এটিকে। বলা হয় যে, এই এক্সপ্রেস ট্রেনটি দেশের উত্তর পূর্ব প্রান্তের ডিব্রুগড় থেকে যাত্রা শুরু করে এবং দক্ষিণ ভারতের দক্ষিণতম অংশ কন্যাকুমারী তে এর যাত্রা শেষ হয়। এই ট্রেনটি তিরুঅনন্তপুরম, কোয়েম্বাটুর, বিজয়ওয়াড়া, বিশাখাপত্তনম, ভুবনেশ্বর, কটক এবং জলপাইগুড়ির মতো বিভিন্ন স্থানের মধ্য দিয়ে যায়। এটি কন্যাকুমারী থেকে রাত ১১ টায় ছেড়ে যায় এবং পঞ্চম দিন সকালে ডিব্রুগড়ে পৌঁছায়। এই ট্রেনটি প্রায় ২৩টি কোচ নিয়ে চলাচল করে। বিবেক এক্সপ্রেস ট্রেনটি প্রায় ৪২৩৪ কিলো মিটার দূরত্ব অতিক্রম করে।