নিজস্ব প্রতিবেদন : গুগল বর্তমান বিশ্বে তথ্যপ্রযুক্তির ক্ষেত্রে এক বিখ্যাত নাম। এই সংস্থায় কাজ পেয়ে থাকেন বিশ্বের প্রথমসারির শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মেধাবী ছাত্রছাত্রীরা। ভারতের প্রথমসারির আইআইটি থেকে নামকরা ম্যানেজমেন্ট, ইঞ্জিনিয়ারিং প্রতিষ্ঠানের ছাত্রছাত্রীরাও মুখিয়ে থাকেন এখানে কাজ পাওয়ার জন্য। কিন্তু সেই Google সংস্থার সম্মানজনক ও লোভনীয় চাকরি ছেড়ে দেন ভারতের মুনাফ কপাডিয়া। Google সংস্থায় অ্যাকাউন্ট স্ট্রাটেজিস্ট পদে কর্মরত ছিলেন তিনি। কাজ করেছেন মুসৌরি, হায়দরাবাদ ও মুম্বইয়ের গুগল অফিসে।
মুনাফ কপাডিয়া স্বাধীনভাবে নিজের ব্যবসা শুরু করতে চেয়েছিলেন। সেই জন্য তিনি গুগলের চাকরি ছেড়ে দেন। ২০১৫ সালে খোলেন ‘দ্য ভোরি কিচেন’, নিজেই ছিলেন এই হোম ডেলিভারি সংস্থার সিও। পরবর্তী ক্ষেত্রে সিঙ্গারা বিক্রি করে তিনি হয়ে ওঠেন কোটিপতি! বর্তমানে সিঙ্গারা বিক্রি করেই তাঁর বাৎসরিক আয় ৫০ লাখের কাছাকাছি।
মুনাফ কপাডিয়ার জন্ম ১৯৮৮ সালের ২২ নভেম্বর। ২০১৭ সালে ফোর্বস ম্যাগাজিনে তিনি ভারতীয় সেরা ৩০ জন শিল্পদ্যোগীর মধ্যে স্থান পান, যাদের বয়স ৩০ বছরের নীচে।
পড়াশোনা করেন এম এন কলেজে কমার্স এবং ইকনমিকস নিয়ে, এমবিএ করেন মার্কেটিং নিয়ে। চাকরি ছাড়ার পর মা নাসিফার সহযোগিতায় হোম ডেলিভারি শুরু করেন। মুনাফের মায়ের হাতের সুস্বাদ রান্না অচিরেই গ্ৰাহকের সংখ্যা বাড়িয়ে দেয়। কিন্তু ব্যবসা বাড়ানোর জন্য যে পরিমাণ অর্ডার পাওয়ার দরকার ছিল তা পাচ্ছিলেন না। ফলে মুনাফ ব্যবসা বন্ধ করে দেওয়ার কথা ভাবতে থাকেন। এই সময় ফোর্বস পত্রিকায় তাদের ব্যবসায়িক প্রতিবেদন ছাপা হয়। নতুন করে আত্মবিশ্বাস খুঁজে পেয়ে মুম্বইয়ে সামোসা বা সিঙ্গারার দোকান খোলেন মুনাফ।
মা নাসিফার কিমা-সামোসা, নার্গিস কাবাব, ডাব্বা গোস্ত ও ৪৮ ঘন্টা ধরে রোস্ট হওয়া ছাগলের পা বিখ্যাত হয়ে যায়। যা মুম্বইয়ের হাইপ্রোফাইল হোটেল ও পার্টি থেকে অর্ডার আসতে শুরু করে। সঙ্কট কাটিয়ে ব্যবসা সাফল্য লাভ করতে শুরু করে।
ফুড রাইটার ও টিভি হোস্ট কুনাল বিজয়কর জানান, “মুনাফের সাফল্যের পিছনে আছে সবচেয়ে দ্রুত অর্ডার পৌঁছে দেবার চেষ্টা। তার চেয়েও বড় কারণ মা নাসিফার হাতের জাদু।” মুনাফের কিচেনের রান্নার স্বাদের প্রশংসা করেছেন ঋষি কাপুর, রানী মুখার্জি, হৃত্বিক রোশনের মতো তারকারা।
বড় কোম্পানিতে অনেক টাকার মাইনে পেয়ে গোলামি নয়, নিজের চেষ্টায় আত্মনির্ভর ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলার স্বপ্ন নিয়ে আজ সাফল্যের শিখরে মুনাফ কাপাডিয়া। আর তার স্বীকৃতি দিয়েছে ভারতের তরুণ প্রজন্মের এই শিল্পোদ্যোগীকে ফোর্বসের মতো পত্রিকা।