লাল্টু : মহাষ্টমী ও মহা নবমীর সন্ধিক্ষণে বলিদানের পর অস্ত্র, লাঠিসোঁটা নিয়ে জয়ের আনন্দে মেতে উঠাকে কেন্দ্র করে ব্যতিক্রমী এক উৎসব রয়েছে বীরভূমের দুবরাজপুরে। ব্যতিক্রমী এই উৎসবের নামই হলো ‘জয়তারা’ উৎসব। এই উৎসবকে ব্যতিক্রমী এই কারণেই বলা হয়ে থাকে, কারণ রাজ্যের অন্য কোথাও এমন উৎসবের প্রচলন আছে কিনা তা কারোর জানা নেই।
বীরভূমের দুবরাজপুর শহরের এই ‘জয়তারা’ উৎসব ঠিক কখন থেকে শুরু হয়েছে তার উত্তর কারোর কাছে নেই। প্রত্যেকেরই উত্তর একটাই, ‘আমাদের পূর্বপুরুষরা বলতে পারেন না এই উৎসব কবে থেকে শুরু হয়েছে’। তাদের এই উত্তরেই উপলব্ধি করা যায় এই উৎসব কয়েক শতাব্দী প্রাচীন।
‘জয়তারা’ উৎসবকে কেন্দ্র করে কচিকাঁচা থেকে অন্যান্যদেরও মেতে উঠতে দেখা যায়। প্রতিবছর এই উৎসবকে দেখার জন্য হাজার হাজার মানুষের সমাগম ঘটে। যদিও গত দু’বছর ধরে করোনা সংক্রমণের কথা মাথায় রেখে উৎসবে লাগাম টানা হয়েছে। পাশাপাশি চলতি বছর এই উৎসবের সময় মধ্যরাত্রে এবং করোনা সংক্রমণের কথা মাথায় রেখে কারণে অন্যান্য বছরের তুলনায় কয়েকগুণ পুলিশ মোতায়েন করা হয়।
‘জয়তারা’ উৎসব কি?
মহাষ্টমী-মহানবমীর সন্ধিক্ষণে মহাষ্টমীর বলিদান শেষ হওয়ার পর শিশু, কিশোর, যুবক সহ বয়স্ক প্রবীনরা টাঙ্গি, দা, ঢাল, তরোয়াল, বল্লম, ত্রিশূল এমন নানা অস্ত্রশস্ত্র হাতে উল্লাসে রাস্তায় শোভাযাত্রা নিয়ে নাচতে নাচতে এক মণ্ডপ থেকে আর এক মন্ডপ পরিক্রমা করেন।
এই উৎসবের উৎপত্তি সম্পর্কে কথিত আছে, অসুর বধের পর দেবতারা নিজেদের জয়ে জয়োল্লাস শুরু করেন। সেই সময় তারা হাতে অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে বেরিয়ে পড়েছিলেন এই জয়োল্লাস করার জন্য। সেই ঘটনারই প্রতীক হিসাবে বীরভূমের দুবরাজপুর শহরের প্রতিবছর এমন জয়তারা উৎসব পালন করতে দেখা যায়। এই উৎসবে ও শহরের বাসিন্দাদের আনন্দে আত্মহারা প্রতি লক্ষ্য করা যায়।