নিজস্ব প্রতিবেদন : শ্রীলঙ্কার আর্থিক সংকট এখন বিশ্বের কাছে অজানা নয়। চরম এই আর্থিক সংকটের মধ্যে শ্রীলঙ্কায় এখন সামান্য খাদ্যশস্যের দাম আকাশছোঁয়া। খাদ্যশস্য ছাড়াও জ্বালানি প্রায় শেষের দিকে এবং তার দাম কোন জায়গায় পৌঁছাতে পারে তা আন্দাজ করাই যেতে পারে। ভারতের এই প্রতিবেশী দেশের এমন অর্থনৈতিক অবস্থা গোটা বিশ্বকে নাড়িয়ে দিয়েছে।
তবে শ্রীলঙ্কার মতো আর্থিক সংকট অর্থাৎ বেহাল দশা হতে পারে ভারতের বেশকিছু রাজ্যেও। ভারতের বেশকিছু রাজ্য সরকার সাধারণ মানুষের মন পেতে দান-খয়রাতির পথ বেছে নিয়েছে। এই দান খয়রাতির কারণে বিপুল আর্থিক বোঝা চাপছে এই সকল রাজ্যগুলির উপর। স্বাভাবিকভাবেই এই আর্থিক বোঝা রাজ্যগুলিকে খারাপের দিকে নিয়ে যাচ্ছে। সম্প্রতি এই বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে সতর্ক করেছেন আমলারা।
২০১৪ সালে প্রধানমন্ত্রী হিসাবে নরেন্দ্র মোদী নির্বাচিত হওয়ার পর গত ৩ এপ্রিল নবমবার সমস্ত দপ্তরের সচিবদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন তিনি। সেই বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে আমলারা বেশ কয়েকটি রাজ্যের আর্থিক পরিস্থিতি নিয়ে উষ্মা প্রকাশ করেছেন। আমলাদের কথা অনুযায়ী, বিধানসভা ভোট এবং সেই ভোটকে কেন্দ্র করে সাধারণ মানুষের মন পেতে রাজ্য সরকারগুলি এমন কিছু প্রকল্পের ঘোষণা করেছে যার ফলে সেই সকল সরকারগুলির উপর বিপুল আর্থিক বোঝা চেপে গিয়েছে। এর কারণে অর্থনীতি সমস্যার সম্মুখীন হতে পারে এবং ওই সকল রাজ্যগুলির অবস্থা শ্রীলঙ্কা অথবা গ্রীসের মত হতে পারে।
এই প্রসঙ্গে বলা হয়েছে বিভিন্ন রাজ্যে সরকারে থাকা রাজনৈতিক দলগুলি বিনামূল্যে রেশন, বিনামূল্যে বিদ্যুৎ, নিরখরচায় ওষুধ এবং আরও একাধিক পরিসেবার ক্ষেত্রে ভর্তুকির ঘোষণা করেছে। এই সকল প্রকল্পে ভর্তুকি অথবা বিনামূল্যে পরিষেবা দেওয়ার ঘোষণা করার পরিপ্রেক্ষিতে রাজ্য বাজেটে বিপুল পরিমাণ অর্থ বরাদ্দ করা হচ্ছে। বিপুল পরিমাণ অর্থ বরাদ্দ করার সঙ্গে সঙ্গে ব্যয় কমছে স্বাস্থ্য এবং শিক্ষাক্ষেত্রে।
দক্ষিণ ভারতের তামিলনাড়ু এমন রাজনীতির শিল্পতে পরিণত হয়েছে। এর সূত্রপাত হয় ১৯৫৪ থেকে ১৯৬৩ সাল পর্যন্ত মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে থাকা কে কামরাজের শাসনকালে। সেই সময় তিনি রাজ্যের শিক্ষার্থীদের বিনামূল্যে খাবার দেওয়ার ঘোষণা করেন।
দান খয়রাতির কারণে দেশের যে সকল রাজ্যগুলির অর্থনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে আশঙ্কা প্রকাশ করা হচ্ছে সেই সকল রাজ্যগুলি হল অন্ধপ্রদেশ, কেরল, মধ্যপ্রদেশ, বিহার, পাঞ্জাব, হরিয়ানা, ওড়িশা, অসম। এছাড়াও বাকি যেসকল রাজ্যগুলি রয়েছে সেগুলির অর্থনৈতিক পরিস্থিতি খুব একটা ভালো রয়েছে এমনটা বলা যাবে না। কেবলমাত্র দেশের দুটি রাজ্য গুজরাট ও মহারাষ্ট্রে জিডিপির তুলনায় ঋণের পরিমাণ কিছুটা হলেও সুবিধাজনক।