নিজস্ব প্রতিবেদন : কলকাতা নাইট রাইডার্স প্রথমবার আইপিএল ট্রফি পেয়েছিল ২০১২ সালে। এরপর ২০১৪ সালে ফের ট্রফি পায়। তবে তারপর থেকে ট্রফির খরা কাটাতে সময় লেগে যায় দশ দশটি বছর। ২০২৪ সালে তৃতীয়বারের জন্য কলকাতা নাইট রাইডার্স চ্যাম্পিয়ন (IPL 2024 Champion KKR) হলো, আর তৃতীয়বারের জন্য চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পিছনে ১০টি ম্যাজিক দেখছেন বিশেষজ্ঞরা।
১) কলকাতা নাইট রাইডার্স-এর ফাইনালে ওঠা এবং চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পিছনে যে ম্যাজিককে না বললেই নয় তাহলে সুনীল নারিন। সুনীল নারিনকে গৌতম গম্ভীর ওপেন করাতে রাজি করান। তিনি ওই পজিশনে খেলতে প্রস্তুত না থাকলেও তাকে বারবার আস্থা দিয়ে খেলানো হয়। আর তার ফল পেয়েছে দল। একটি সেঞ্চুরি এবং তিনটি হাফ সেঞ্চুরির দৌলতে তার ব্যাট থেকে ৫০০ রান পেয়েছে কেকেআর।
২) টিমের এমন অনবদ্য সাফল্যের পিছনে গৌতম গম্ভীরের মেন্টরশিপকে কোনভাবেই কোনভাবেই ভোলার নয়। লখনৌ জায়ান্টস থেকে কেকেআর-এ আসার পর যেভাবে তিনি টিম ম্যানেজমেন্ট থেকে শুরু করে প্লেয়ার বাছাইয়ের কাজ করেছেন তা দলের সাফল্যের জন্য অন্যতম কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
৩) এবার কেকেআরের তৃতীয়বারের জন্য চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পিছনে শ্রেয়স আইয়ারের অধিনায়কত্বকে কোনভাবেই ভোলা যায় না। দিল্লির হয়ে অধিনায়কত্ব করার পর মিনি নিলামে তিনি কলকাতার সঙ্গে যুক্ত হন এবং অধিনায়কত্বের দায়িত্ব পান। জাতীয় দল থেকে বাদ পড়া, কেন্দ্রীয় চুক্তি থেকে বাদ পড়ার পর KKR-এর অধিনায়কত্ব পেয়ে তার কাছে প্রমাণ করার জন্য বহু কিছুই ছিল। আর সেইসবকে তিনি প্রমাণ করেছেন এবারের আইপিএল সিজনে।
৪) সুনীল নারিন এবং বরুণ চক্রবর্তীর স্পিনার জুটি কলকাতা নাইট রাইডার্সকে সফলতার চূড়ায় পৌঁছে দেওয়ার পিছনে অন্যতম ম্যাজিক হিসেবে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
৫) প্রায় ২৫ কোটি টাকা দিয়ে দলে নেওয়া মিচেল স্টার্কের অভিজ্ঞতা দলকে অনেকটাই শক্তিশালী করেছে। বাকি খেলোয়াড়রা তার অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে দলকে এগিয়ে নিয়ে গিয়েছেন।
৬) ফাইনালে টসে জিতে সানরাইজার্স হায়দরাবাদের অধিনায়ক কামিন্সের প্রথমে ব্যাটিং নেওয়ার সিদ্ধান্তকে অনেকেই ভুল বলে মনে করছেন। এক্ষেত্রে তার বিশাল রান খাড়া করে বিপক্ষকে চাপে খেলার চেষ্টা থাকলেও ওই স্ট্র্যাটেজি তাদের দলকেই বিপাকে ফেলে দেয়।
৭) শুরুর দিকে মিচেল স্টার্ক সেই ভাবে নিজেকে মেলে ধরতে না পারলেও তার উপর প্রথম থেকেই বিশ্বাস ছিল কিছু একটা করে দেখাবেন। আর সেটাই তাকে করে দেখাতে দেখা গেল ফাইনালে। ফাইনালে দুর্ধর্ষ ফর্মে থাকা অভিষেক শর্মাকে সাজঘরে ফিরিয়ে তিনি সানরাইজার্স হায়দ্রাবাদের কোমর ভেঙে দিয়েছিলেন।
৮) মিডিল অর্ডার এবং লোয়ার অর্ডারে বারবার ভালো খেলে ম্যাচে কামব্যাক করার উদাহরণ রয়েছে হায়দ্রাবাদের। কিন্তু কলকাতা নাইট রাইডার্সের বোলাররা ফাইনালে পুরোপুরিভাবেই হায়দ্রাবাদকে চাপে রেখেছিলেন। যে কারণে তারা আর ঘুরে দাঁড়ানোর সুযোগ পায়নি।
৯) বড় ম্যাচ খেলার চাপ সেই ভাবে নিতে পারেনি সানরাইজার্স হায়দ্রাবাদ। যে কারণে প্রথম থেকেই একের পর এক উইকেট খোয়াতে শুরু করে আর চাপ এমন জায়গায় পৌঁছে যায় যে আর ঘুরে দাঁড়ানোর কোন জায়গা ছিল না।
১০) অল্প রানের লক্ষ্যমাত্রা থাকলেও ফাইনাল ম্যাচের চাপ এবং যেভাবে বল সুইং করছিল তাতে কলকাতা নাইট রাইডার্সকে চাপে ফেলা যেত বলে অনেকেই মনে করছিলেন। কিন্তু কলকাতা নাইট রাইডার্স-এর ব্যাটাররা পরিস্থিতি আগে থেকেই বুঝে ধীর স্থির ভাবে খেলে ম্যাচ নিজেদের পকেটে পুরে নেন।