নিজস্ব প্রতিবেদন : পশ্চিমবঙ্গের শাসক দল তৃণমূলের (TMC) মাথায় সোমবার ছিল বিনা মেঘে বজ্রপাতের মত। কারণ এই দিনই নির্বাচন কমিশন (Election Commission) ঘোষণা করে দেয় আর তৃণমূল সর্বভারতীয় দল নয়। নির্বাচনী আইন অনুযায়ী জাতীয় দল হওয়ার জন্য রাজনৈতিক দলগুলিকে তিনটি শর্ত পূরণ করতে হয়।
সেই তিনটি শর্ত হলো, লোকসভায় অন্তত চারটি রাজ্য থেকে ৬% ভোট পেতে হবে, লোকসভায় তিনটি রাজ্য থেকে ১১ টি আসন (মোট আসনের ২% ভোট) এবং আগে যেটা আসনের অন্ততপক্ষে চারটিতে পুনরায় জয়লাভ করতে হবে, অন্তত চারটি রাজ্যে রাজ্য দলের তকমা থাকতে হবে।
২০১৬ সালে যখন তৃণমূল জাতীয় দলের তকমা পায় সেই সময় পাঁচ বছর অন্তর অন্তর কারা জাতীয় দলের তকমা পাবে তা বিবেচনা করা হতো। কিন্তু বর্তমানে সেই নিয়মে পরিবর্তন আনা হয়েছে এবং বলা হয়েছে ১০ বছর অন্তর অন্তর এই বিবেচনা করা হবে। এর ফলে ২০২৩ সালে তৃণমূল জাতীয় দলের তকমা হারানোর ফলে ২০৩৩ সাল পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে যোগ্যতা অর্জনের জন্য। অর্থাৎ ১০ বছর অপেক্ষা ছাড়া উপায় নেই। অন্যদিকে এই ১০ বছর ধরে জাতীয় দলের তকমা হারানোর ফলে ৭টি সুবিধা পাবে না তৃণমূল।
১) জাতীয় দলের তকমা হারানোর ফলে পশ্চিমবঙ্গ এবং মেঘালয় বাদে অন্য কোন রাজ্যে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে হলে নিজস্ব প্রতীক নাও মিলতে পারে।
২) জাতীয় দলের প্রার্থীরা প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার ক্ষেত্রে একজন প্রস্তাবক হলেই হয়। এক্ষেত্রে তৃণমূল পশ্চিমবঙ্গ এবং মেঘালয় ছাড়া অন্য রাজ্যে এই সুবিধা পাবে না।
৩) জাতীয় দলের তকমা থাকলে ভোটের সময় নির্বাচন কমিশন গোটা দেশে ভোটার লিস্টের দুই কপি বিনামূল্যে দিয়ে থাকে। তৃণমূল এবার এই সুবিধা পাবে কেবলমাত্র পশ্চিমবঙ্গ এবং মেঘালয়ে।
৪) জাতীয় দলের তকমা থাকলে রাজধানী অর্থাৎ দিল্লিতে জমি ও বাড়ি পেয়ে থাকে দলীয় দপ্তর বানানোর জন্য। এই সুবিধা হারালো তৃণমূল।
৫) জাতীয় দলের তকমা হারানোর ফলে তৃণমূলকে এবার তারকা প্রচারকের সংখ্যা কমাতে হবে। জাতীয় দলের ৪০ জন তারকা প্রচারক রাখতে পারে আর প্রাদেশিক দল হিসাবে ২০ জন তারকা প্রচারক রাখা যায়।
৬) অন্য কোন রাজ্যে তৃণমূল এবার প্রচার করতে গেলে সর্বোচ্চ ২০ জনের খরচ দিতে পারবে। জাতীয় দলের তকমা থাকলে ৪০ জনের খরচ দেওয়ার অনুমতি থাকে রাজনৈতিক দলগুলির।
৭) জাতীয় দলের তকমা থাকলে ভোট প্রচারের জন্য সরকারি টিভি ও রেডিয়োতে বিনা খরচে সময় দেওয়া হয়নি নির্বাচনের সময়। এই সুবিধা এবার হারাতে হবে তৃণমূলকে।