লাল্টু মুখার্জি : লক্ষ্মীর ভান্ডার, এই কথাটি শুনলেই এখন রাজ্যের মানুষদের মধ্যে যা মনে পড়ে তা হল পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকারের লক্ষ্মীর ভান্ডার প্রকল্প। লক্ষ্মীর ভান্ডার প্রকল্প হলো রাজ্যের মহিলাদের কাছে উপরি পাওনা। কেননা ওই প্রকল্পের মধ্য দিয়ে প্রতি মাসে সাধারণ শ্রেণীর মহিলারা ১০০০ টাকা এবং তফসিলি জাতি ও উপজাতি শ্রেণীর মহিলারা ১২০০ টাকা পেয়ে থাকেন। তবে এই উপরি পাওনা নয়, এবার কষ্টের যোগানো চার চারটি লক্ষ্মীর ভান্ডার (Lakshmir Bhar Theft) নিয়ে উধাও হয়ে গেল চোরের দল।
লক্ষ্মীর ভান্ডার, যাকে গ্রাম্য ভাষায় অনেকে লক্ষ্মীর ভাঁড়, আবার অনেকেই কেবলমাত্র ভাঁড় বলে থাকেন। যাতে তিল তিল করে জমানো হয় বিভিন্ন ধরনের কয়েন। পরে সেই ভাঁড় ভেঙে সেখান থেকে পাওয়া টাকা দিয়ে অনেকেই রয়েছেন যারা নিজেদের প্রয়োজনীয় কাজ করিয়ে থাকেন। ঠিক সেই রকমই এক পরিবার চার চারটি লক্ষ্মীর ভান্ডারে পাঁচ থেকে দশ টাকার কয়েন সঞ্চয় করেছিলেন। ওই ভাঁড়গুলি পুরো ভর্তি ছিল। আর সেই চারটি ভাঁড় রাতের অন্ধকারে হানা দিয়ে নিয়ে পালালো চোরের দল।
শুক্রবার মধ্যরাতে, ইংরেজি ২৭ জুলাই রাতে এমন ঘটনাটি ঘটেছে দুবরাজপুর পৌরসভার ১৫ নম্বর ওয়ার্ডের নাপিত পাড়ায়। গভীর রাতে দুঃসাহসিক এমন চুরির ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে এলাকায়। চোরেরা ওই বাড়িতে ঢুকে দোতালা থেকে আলমারি খুলে ৫০ হাজার টাকার নগদ, সোনার কানের এবং পাশের শোকেসে থাকা চারটি কয়েন ভর্তি ভাঁড় নিয়ে পালিয়ে যায়। বাড়ির বাইরে ফেলে দিয়ে যায় নকল গহনা। আলমারি থেকে সমস্ত জিনিস বার করে তছনছ করে দেয়। চোরেদের বাধা দিতে গিয়ে আহত হন ৭৬ বছরের বাড়ির গৃহকর্তা সুধীর রুজ।
আরও পড়ুন ? Gold Price Dropped: শনিবার হুড়মুড়িয়ে কমলো সোনার দাম, এতটা কমবে ভাবা যায়নি
বাড়ির গৃহকর্তা সুধীর রুজ জানিয়েছেন, বাড়ির নিচের তলায় তিনি স্ত্রীকে নিয়ে থাকেন। পাশের ঘরে থাকেন বাড়ির বড় ছেলে সুশান্ত রুজ। উপরের দুটি ঘর বাড়ির ছোট ছেলে কাজল রুজের। রুমগুলি ছোট হওয়ার কারণে ছোট ছেলে অন্য জায়গায় আবাস যোজনা ঘর পাওয়ায় সেখানে থাকেন। ছোট ছেলে কাজল রুজ বাজারে মহিলাদের শাখার ব্যবসা করেন। এবার পুজোতে ব্যবসায় কাজে লাগাবার জন্য বাড়িতে ৫০ হাজার টাকা ও চারটি ভাঁড়ে প্রায় এক লক্ষ টাকা রেখেছিলেন। যদিও যে আলমারি থেকে নগদ টাকা চুরি হয়েছে সেই আলমারিটার চাবি লাগানো ছিল না বলে জানা গিয়েছে।
উপরে থাকা একটি রুমে চোরেরা তালা খুললেও সেখান থেকে কিছু নিতে পারেনি। উপরে চুরি করার পর চোরেরা নিচের ঘরে আসে, যেখানে গৃহকর্তা ও তার স্ত্রী শুয়েছিলেন। ওই ঘরের আলমারি খোলার পর চুরি করার চেষ্টা করলে তা বিফলে হয়ে যায়। ধস্তাধস্তি হয় বাড়ির ৭৬ বছর বয়সী গৃহকর্তার সঙ্গে। তাকে লোহার কোন জিনিস দিয়ে মাথায় আঘাত করতে গেলে তিনি মাথা সরিয়ে নিলে তার হাতে আঘাত লাগে বলে জানান প্রত্যক্ষদর্শী তথা বাড়ির গৃহকর্তা সুধীর রুজ। এমন ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে দুবরাজপুর থানায় খবর দেওয়া হলে দুবরাজপুর থানার পুলিশ তদন্ত শুরু করেছে।