অমাবস্যা নয়, পূর্ণিমায় কালীপুজো! মায়ের গায়ের রং সাদা, পুজো হয় ময়ূরাক্ষী নদীর তীরে

নিজস্ব প্রতিবেদন : আমরা সাধারণত কালীপুজো (Kalipuja) অমাবস্যা তিথিতেই হতে দেখি। আবার প্রতিমার রংয়ের ক্ষেত্রে যা যা নজরে আসে তাহলো কালো অথবা শ্যাম বর্ণের। শ্যাম বর্ণের কালীকে আমরা শ্যামা কালী বলে থাকি। তবে এই দুই রঙ ছাড়াও একেবারে ধবধবে সাদা রঙের কালী প্রতিমার পুজো হয়ে থাকে এই বাংলাতে। মায়ের পরনে থাকে সাদা শাড়ি ও লাল পাড়। এই কালীপুজোকে বলা হয় শ্বেত কালী (White Color Maa Kali)। এমন পুজো হয়ে থাকে ময়ূরাক্ষী নদীর ধারে।

এই যে শ্বেত কালীপুজোর কথা বলা হচ্ছে সেই পুজো আবার অমাবস্যায় হয় না। এমন কালীপুজো হয় পূর্ণিমা তিথিতে। মার্গশীর্ষ পূর্ণিমায় এমন কালীপুজোর আয়োজন করা হয় বীরভূমের সিউড়ি শহরের পার্শ্ববর্তী ময়ূরাক্ষী নদীর তীরে থাকা অজয়পুরে। এখানকার এই কালীপুজোর বয়স ৪০০ বছরের বেশি বলেই জানা যায় স্থানীয় সূত্রে। এখানে এমন কালীপুজোর সূচনা কিভাবে হলো তা জানতে গিয়ে উঠে আসে জ্বালাতন গোঁসাইয়ের কাহিনী।

জানা যায়, এখন যেখানে শ্বেত কালী পুজোর আয়োজন করা হয়, সেই অশ্বত্থ গাছের নিচে জ্বালাতন গোঁসাই আসতেন এবং সেখানে পুজো অর্চনা, সাধনা করতেন। সেখান থেকেই ধাপে ধাপে এই পুজোর সূচনা হয়। এরপর বংশপরম্পরায় এই পুজো হয়ে আসছে। পুজোর দায়িত্বে থাকা মাহারা পরিবারের থেকে জানা গিয়েছে, জ্বালাতন গোঁসাই তাদের পূর্বপুরুষ ঋষিকেশ মহারাকে এই পুজোর দায়িত্ব দিয়ে গিয়েছিলেন। তারপর থেকে তারা এই পুজো করে আসছেন।

আরও পড়ুন 👉 Metro fare: এবার স্যাট করে যাওয়া যাবে দক্ষিণেশ্বর কালী মন্দির! মেট্রো আনছে নতুন উপহার

কথিত আছে, কোন এক অমাবস্যার সময় বারুইপুর গ্রামের এক মহিলা আত্মহত্যা করেছিলেন। এরপর ওই মহিলার মৃতদেহ পুঁতে দেওয়া হয়েছিল ওই অশ্বত্থ গাছের নিচে। পরে জ্বালাতন গোঁসাই ওই মৃত মহিলার দেহ তুলে সাধনা করেছিলেন এবং সিদ্ধিলাভ করেছিলেন। এইসব কথিত কাহিনী থেকে প্রতিবছর এখানকার এই কালীপুজোয় দূর দূরান্ত থেকে বহু মানুষের আগমন হয়। নিজেদের মনস্কামনায় পুজো দিয়ে থাকেন পুণ্যার্থীরা।

পুজো উদ্যোক্তাদের তরফ থেকে দাবি করা হয়, শ্বেত কালী পুজো বীরভূমে আর কোথাও নেই। এমনকি রাজ্যেও যদি কোথাও থাকে তা সংখ্যায় হাতে গোনা হবে। প্রতিবছর নির্দিষ্ট এই পূর্ণিমা তিথিতে পুজো হয়ে থাকে।