২১ দিনের লকডাউনে যে সকল ক্ষেত্রে ছাড় পাওয়া যাবে তার তালিকা

নিজস্ব প্রতিবেদন : ভারতে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ২২ শে মার্চ প্রথম জনতা কারফিউয়ের ডাক দেন। ঠিক তার পরের দিন বিকাল পাঁচটা থেকে পশ্চিমবঙ্গের শুরু হয় লকডাউন। মুখ্যমন্ত্রী জানান, এই লকডাউন চলবে আগামী ২৬ তারিখ পর্যন্ত। এরপর মঙ্গলবার মুখ্যমন্ত্রীর ঘোষণা করেন, সমস্ত রকম পরিস্থিতি বিবেচনা করে লকডাউনের সময়সীমা বাড়ানো হলো ৩১ তারিখ পর্যন্ত। তারপর সেদিনই দেশের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী জাতির উদ্দেশ্যে ভাষণ রাখার সময় জানান, বিশেষজ্ঞ, চিকিৎসক ও বিজ্ঞানীদের মতামত অনুসারে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে সারাদেশকে ২১ দিনের জন্য লকডাউন করা হলো। তবে এই ২১ দিনের লকডাউনে বিশেষ কিছু ক্ষেত্রে ছাড় দেওয়া হয়েছে, যে সকল ছাড়ের কথা পশ্চিমবঙ্গ সরকারের তরফ থেকে বিজ্ঞপ্তি আকারে জানানো হয়েছে।

লকডাউন চলাকালীন পশ্চিমবঙ্গে যে সকল ক্ষেত্রে ছাড় পাওয়া যাচ্ছে তা হল

  • আইন-শৃঙ্খলা, আদালত ও সংশোধনাগার ব্যবস্থা।
  • স্বাস্থ্য পরিষেবা ও পশু চিকিৎসা পরিষেবা।
  • পুলিশ, সশস্ত্র বাহিনী, আধাসেনা ও বেসরকারি নিরাপত্তা পরিষেবা।
  • বিদ্যুৎ, জল ও জঞ্জাল অপসারণ পরিষেবা।
  • অগ্নিনির্বাপণ, অসামরিক প্রতিরক্ষা ও আপৎকালীন পরিষেবা।
  • টেলিকম, ইন্টারনেট, তথ্যপ্রযুক্তি ও ডাক পরিষেবা।
  • ন্যাশনাল ইনফরমেটিকস সেন্টার, আর্লি ওয়ার্নিং এজেন্সিস।
  • ব্যাঙ্ক, এটিএম ও বিমা।
  • মুদিখানা, সজি, ফল, মাংস, মাছ, পাউরুটি, দুধ, ডিম, পােলট্রির খাবার, পশু খাদ্য মজুত ব্যবস্থা ও তার পরিবহণ।
  • হিমঘর ও গুদামজাতকরণ পরিষেবা।
  • মুদিখানা সামগ্রী, খাবার এবং খাবারের হোম ডেলিভারির জন্য ব্যবহৃত ই-কমার্স ব্যবস্থা।
  • ওষুধ ও চিকিৎসা সরঞ্জাম।
  • খনিজ তেল, প্রাকৃতিক গ্যাস, এলপিজি, পিএনজি মজুদ ও পরিবহন ব্যবস্থা।
  • ওষুধের দোকান ও চশমার দোকান
  • ওষুধের উৎপাদন ও তার পরিবহন।
  • জেলাশাসক ও পুর কমিশনের অনুমোদনক্রমে অত্যাবশ্যকীয় পণ্যের উৎপাদনের জন্য কারখানা নিরন্তর খোলা থাকবে।
  • সংবাদমাধ্যম, এমএসও এবং কেবল অপারেটর।
  • অত্যাবশ্যকীয় পণ্যের উৎপাদনের সঙ্গে যুক্ত কারখানা।
  • পর্যটক অথবা লক ডাউনের কারণে যে সকল মানুষ যেখানে আটকে পড়েছেন বা আশ্রয় নিয়েছেন সেই সকল হোটেল, হোম স্টে, হোটেল ইত্যাদি খোলা থাকবে।
  • স্বাস্থ্যকর্মী এবং জরুরি পরিষেবা কর্মীরা, বিমান ও জাহাজ কর্মীরা।
  • কোয়রান্টিনের জন্য ব্যবহৃত প্রতিষ্ঠান।
  • সড়কপথ, আকাশপথ, বন্দর এবং রেলওয়ে সাইডিং-এর মাধ্যমে অত্যাবশ্যকীয়।
  • খাদ্যসামগ্রীর পরিবহন।
  • বনভূমির জন্য ব্যবহৃত জরুরি পণ্যের পরিবহন।
  • শস্য বীজ ও কীটনাশকের দোকান।
  • খাদ্যসামগ্রী, ওষুধ, চিকিৎসা সামগ্রী ও সরঞ্জাম প্যাকেটজাত করার জন্য ব্যবহৃত সামগ্রীর কারখানা।
  • হাসপাতাল বা নার্সিংহোমে রোগী ও তাদের সঙ্গীদের যাওয়া-আসা।
  • চলমান কৃষিকাজের জন্য যুক্ত ব্যক্তিগণ।

যারা ছাড় পাবেন তাদের ছাড় পাওয়ার পদ্ধতি

  • সরকারের দেওয়া পরিচয় পত্র দেখাতে হবে আওতায় থাকা সরকারি কর্মীদের।
  • যাঁদের কোনও পরিচয়পত্র বা অনুমতিপত্র দেখাতে হবে না। যেমন অত্যাবশ্যকীয় খাদ্যসামগ্রী, ওষুধ, আপৎকালীন স্বাস্থ্য সংক্রান্ত পরামর্শ ইত্যাদির জন্য যাঁরা নিকটবর্তী দোকানে যাবেন (একসঙ্গে দু’জনের বেশি নয়)। চলমান কৃষিকাজ, পশুপালন এবং মৎস্য চাষের সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তিরা।
  • নিয়োগকর্তার দেখানো পরিচয় পত্র দেখিয়ে যারা অবাধে যাতায়াত করতে পারবেন। স্বাস্থ্য পরিষেবার সঙ্গে যুক্ত কর্মী, নার্স, প্যারা-মেডিক্যাল কর্মী এবং সমস্ত চিকিৎসা প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যুক্ত অন্য কর্মীরা। বিদ্যুৎ, জল, জঞ্জাল সাফাই, ব্যাঙ্ক এবং খনিজ তেল, এলপিজি, সিএনজি সরবরাহের সঙ্গে যুক্ত কর্মীরা। মুদ্রণ ও বৈদ্যুতিন সংবাদমাধ্যমের কর্মীরা এবং সংবাদপত্র পৌঁছে দেওয়ার সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তিরা। রেল, বন্দর, বিমানবন্দরের কর্মীরা এবং অত্যাবশ্যকীয় পণ্য সরবরাহের গাড়ি ও কার্গোর কর্মীরা।
  • গণ-সরবরাহ ব্যবস্থা, সুফল বাংলা, হাইপারমার্ট, সুপার স্টোর, ই-কমার্স সংস্থা, খাবারের হােম ডেলিভারির সঙ্গে যুক্ত কর্মীরা তাদের নিয়ােগকর্তার দেওয়া এবং স্থানীয় পুলিশ কর্তৃপক্ষ অথবা মহকুমাশাসকের অনুমােদিত অনুমতিপত্র দেখিয়ে অবাধে যাতায়াত করতে পারবেন। অত্যাবশ্যকীয় পরিষবা চালু রাখার জন্য সর্বনিম্ন কত সংখ্যক কর্মী জরুরি, সেই সংখ্যক কর্মী দিয়েই এই সংস্থাগুলিকে কাজ চালাতে হবে।
  • যাতায়াতের জন্য যে কোনও পুলিশ কর্তৃপক্ষ অথবা মহকুমাশাসকের দেওয়া অনুমতিপত্র গােটা পশ্চিমবঙ্গেই মান্যতা পাবে।