নিজস্ব প্রতিবেদন : দেশের ৭৪ তম স্বাধীনতা দিবসে লালকেল্লায় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বক্তব্যে বারবার উঠে আসে আত্মনির্ভর ভারতের প্রসঙ্গ। এদিন তিনি এই কথাটি নাই নাই করে ৩৫ বার উচ্চারণ করেছেন তার দীর্ঘায়িত জাতির উদ্দেশ্যে বক্তব্যের মাঝে। তবে শুধু আত্মনির্ভর ভারতই নয়, পাশাপাশি এদিন স্বাধীনতা মঞ্চ থেকেই শত্রুপক্ষকে কড়া বার্তা দিতে দেখা যায় প্রধানমন্ত্রীকে। এর পাশাপাশি তিনি ভারতকে ডিজিটাল ভারতে রূপান্তরিত করার পরিকল্পনার কথাও ঘোষণা করেন। আর ভারতকে সম্পূর্ণ ডিজিটাল করার লক্ষ্যে এদিন প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যে তিনটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় উঠে আসে।
১) ন্যাশনাল ডিজিটাল হেলথ মিশন : জাতীয় স্বাস্থ্য নীতিতে ২০১৭ সালে বড়োসড়ো বদল ঘটানো হয়। এরপর স্বাস্থ্য ব্যবস্থাকে কিভাবে ডিজিটাল করা যায় তা নিয়ে কেন্দ্র সরকারের তরফ থেকে বিশদ পরিকল্পনা নেওয়া হয়। যে পরিকল্পনাই হলো ন্যাশনাল ডিজিটাল হেলথ মিশন। আগস্ট মাসের ৭ তারিখ এই ন্যাশনাল ডিজিটাল হেলথ মিশন দেশের স্বাস্থ্য পরিকাঠামোকে ডিজিটাল করার বিষয়ে যাবতীয় তথ্য প্রকাশ করে। এই মিশনের মাধ্যমে দেশের প্রতিটি মানুষ পাবেন একটি করে হেলথ আইডি কার্ড, যাকেই বলা হচ্ছে এক দেশ এক হেলথ কার্ড। এর মাধ্যমে দেশের প্রতিটি হাসপাতাল, চিকিৎসা কেন্দ্র, ক্লিনিক, ওষুধের দোকান, ইনসিওরেন্স সংস্থা সবকিছুকে এক সার্ভারের আওতায় আনা হবে। যার ফলে রোগীদের সমস্ত রকম তথ্য তাদের হেলথ আইডি কার্ডে সুরক্ষিত থাকবে। এর ফলে দেশের যেকোনো জায়গায় চিকিৎসা করতে যাওয়ার ক্ষেত্রে পুরাতন রেকর্ড বা নথি বয়ে নিয়ে যাওয়ার প্রয়োজন নেই। চিকিৎসকেরা হেল্থ আইডি কার্ডের মাধ্যমেই সমস্ত তথ্য এক নিমিষে পেয়ে যাবেন। যাতে করে চিকিৎসা ব্যবস্থা আরও ত্বরান্বিত হবে এবং রোগীদের স্বাস্থ্য সুরক্ষিত হবে।
২) দেশের প্রতিটি কোনায় অপটিক্যাল ফাইবার কানেক্টিভিটি : মোদি সরকার এই প্রকল্পকে বিশ্বের সবথেকে বড় সংযোগ প্রকল্প বলে আখ্যা দিয়েছে। এই প্রকল্পের মাধ্যমে আগামী দিনে দেশের প্রতিটি কোনায় অপটিক্যাল ফাইবার কানেক্টিভিটি গড়ে তোলা হবে। ভারত নেট প্রকল্পের মাধ্যমে দেশের আড়াই লক্ষের বেশি গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় প্রায় ৮ লক্ষ কিলোমিটার অপটিক্যাল ফাইবার কানেক্ট করবে মোদি সরকার। ১০০০ দিনের মধ্যে দেশের ছ’লক্ষ গ্রামে অপটিকাল ফাইবার কানেকশন দেওয়া। এই প্রকল্পে খরচ হবে আনুমানিক ৪২ হাজার ৬৮ কোটি টাকা।
৩) সাইবার সিকিউরিটি পলিসি : ভারতে নতুন সাইবার সিকিউরিটি পলিসি ২০২০ লাগু করা হবে। এই সাইবার সিকিউরিটি পলিসির মূলে রয়েছে ভারত-চীন সংঘাত। বিভিন্ন অ্যাপের মাধ্যমে ভারতীয়দের তথ্য চুরি করা হচ্ছে, এনিয়ে দেশজুড়ে কম জল ঘোলা হয়নি। আর এই তথ্য চুরির অভিযোগে ভারতে নিষিদ্ধ হয়েছে ৫৯টি জনপ্রিয় চিনা অ্যাপ। এছাড়াও নিষিদ্ধ হওয়ার তালিকায় রয়েছে আরও কতকগুলি চিনা অ্যাপ। তবে এরপরেও প্রশ্ন উঠছে শুধু চীন নয়, ভারতের আভ্যন্তরীণ বিষয়ে নজরদারি চালাচ্ছে আমেরিকার মতো দেশ ও তাদের বিভিন্ন অ্যাপ। যে কারণে এই সকল সমস্ত দিক বিচার বিবেচনা করে এই নীতির পরিবর্তন ঘটানোর প্রয়োজন হয়েছে বলে মনে করছে কেন্দ্র। নতুন সাইবার সিকিউরিটি পলিসি ২০২০ লাগু হলেই এর আওতায় থাকতে হবে সকলকে।