নিজস্ব প্রতিবেদন : কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অমৃতা সিনহা (Amrita Singha) বারবার তৃণমূল সাংসদ অভিষেক ব্যানার্জিকে (Abhishek Banerjee) নিয়ে অবাক হচ্ছেন। একসময় ইডি অভিষেক ব্যানার্জীর ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট দেখাতে না পারায় অবাক হয়েছিলেন বিচারপতি। আর এবার একইভাবে অবাক হলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সম্পত্তি বৃদ্ধি দেখে। মূলত লিপস অ্যান্ড বাউন্ডস মামলায় যেসব নথি জমা পড়েছে সেই সকল নথি দেখে বিচারপতি এমন অবাক হওয়ার পাশাপাশি প্রশ্ন তুলেছেন, ২০১৪ সালের পরেই এত সম্পত্তি বৃদ্ধি হয়েছে কিভাবে? এই বিষয়ে তদন্ত হওয়া দরকার বলেও মনে করেছেন তিনি এবং খোঁজ নিতে বলা হয়েছে।
অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সম্পত্তি বৃদ্ধি নিয়ে বারবার অভিযোগ তুলতে দেখা গিয়েছে বিরোধী দলের নেতা-নেত্রীদের। এছাড়াও কয়লা, নিয়োগ দুর্নীতিতে একাধিকবার কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার তলব পেয়েছেন তিনি। এসব তলবের মধ্যে বিচারপতির এমন প্রশ্ন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় সম্পত্তি বৃদ্ধির বিতর্ককে যেন আরও বাড়িয়ে দিল। কেননা বিচারপতি অমৃতা সিনহার প্রশ্ন ছিল, ২০১৪ সালের পরেই কিভাবে এত সম্পত্তি বৃদ্ধি? এক্ষেত্রে চলুন দেখে নেওয়া যাক ২০১৪ সালে অভিষেক ব্যানার্জীর কত সম্পত্তি ছিল এবং পরে তা বেড়ে কত হয়েছে?
২০১৪ সালে যখন অভিষেক ব্যানার্জি প্রথমবার ডায়মন্ড হারবার কেন্দ্র থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন সেই সময় তিনি ইলেকশন কমিশনকে নিজের সম্পত্তির বিষয়ে যে হলফনামা দিয়েছিলেন তাতে উল্লেখ করেছিলেন, ইলেকশন অ্যাকাউন্টে ছিল ৩৪ লক্ষ ২৪ হাজার ৬০০ টাকা। তার নামে ব্যাংক অ্যাকাউন্ট, অলংকার ইত্যাদি সহ মোট সম্পত্তি ছিল ২৩ লক্ষ ৫৭ হাজার ১৫০.১১ টাকা। তার স্ত্রী রুজিরা ব্যানার্জীর নামে ছিল ৫৪ লক্ষ ৮ হাজার ৪৯৩.১৩ টাকা। তার মেয়ের নামে ছিল ১০ লক্ষ ৯ হাজার ২৯.৬৪ টাকা।
এছাড়াও অভিষেক ব্যানার্জি জানিয়েছিলেন তার নামে কলকাতায় ১৫৮৮ স্কোয়ার ফুট এলাকায় ১১৭৫ স্কয়ার ফুটের একটি ফ্ল্যাট রয়েছে। ২০১৪ সালে যার আনুমানিক বাজার মূল্য ছিল ৩০ লক্ষ টাকা। অন্যদিকে তার স্ত্রী রুজিরা অথবা মেয়ের নামে কোন এই ধরনের ফ্ল্যাট অথবা জমি জায়গা ছিল না বলেই দাবি করা হয়েছিল। এখন প্রশ্ন হল এরপর অভিষেকের সম্পত্তির পরিমাণ কত বৃদ্ধি পেয়েছে?
আরও পড়ুন ? ইডি হাজিরায় বদলে গেল অভিষেকের পোশাকের রং! কেন এবার কালো হল সাদা
অভিষেক ব্যানার্জি পরে ২০১৯ সালে ডায়মন্ড হারবার লোকসভা কেন্দ্র থেকেই প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন। সেই সময় তিনি ইলেকশন কমিশনকে নিজের সম্পত্তির যে হিসেব দেখিয়েছিলেন তাতে তিনি উল্লেখ করেছিলেন, তার নামে ব্যাংক অ্যাকাউন্ট, অলংকার ইত্যাদি সহ মোট সম্পত্তি ছিল ৭১ লক্ষ ৪০ হাজার ৭৩৯.৪৫ টাকা। তার স্ত্রী রুজিরা ব্যানার্জীর নামে ছিল ৩৫ লক্ষ ৫৬ হাজার ৯১৫.৪৮ টাকা। তার মেয়ের নামে ছিল ৩০ লক্ষ ৯৭ হাজার ৬৬৪.৭৪ টাকা।
অন্যদিকে ২০১৪ সালে অভিষেক ব্যানার্জি নিজের নামে যে ফ্ল্যাটটি ছিল বলে ইলেকশন কমিশনকে দেওয়া হলফনামায় উল্লেখ করেছিলেন, সেই ফ্ল্যাটের বিষয়টি ২০১৯ সালের হলফনামায় নেই। যদিও সম্প্রতি কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা অভিষেক ব্যানার্জিকে যেসব তদন্ত করেছে তার পরিপ্রেক্ষিতে বারবার বিস্ফোরক সব নথি সামনে এসেছে বলেই জানা যাচ্ছে সূত্র মারফৎ।