লাল্টু : মনে পড়ে মাস কয়েক আগের কথা? যে সময় হঠাৎ দুবরাজপুর ব্লকের বালিজুরির শিব ঠাকুর মন্ডল (Shib Thakur Mondal) শিরোনামে চলে আসেন। তিনি শিরোনামে এসেছিলেন অনুব্রত মণ্ডলের (Anubrata Mondal) বিরুদ্ধে দুবরাজপুর থানায় একটি কেস করে। অনুব্রত মণ্ডলকে যখন দিল্লি নিয়ে যাওয়ার জন্য সমস্ত প্রস্তুতি সেরে ফেলেছিল ইডি, সেই সময় এই শিব ঠাকুর মন্ডলের কেসের কারণেই আসানসোল জেল থেকে অনুব্রত মণ্ডলকে আনা হয় দুবরাজপুরে। তারপর সেখানে তাকে সাত দিনের পুলিশি হেফাজতে রাখা হয়।
শিব ঠাকুর মন্ডল একজন ছিলেন একজন তৃণমূল কর্মী এবং তিনি এইভাবে দলের সভাপতির বিরুদ্ধে কেস করে রাতারাতি হিরো হয়ে উঠেছিলেন। এমন কি সেই সময় তিনি বুক ঠুকে জানিয়েছিলেন, তিনি একমাত্র ব্যক্তি যিনি সাহস করেছেন অনুব্রত মণ্ডলের বিরুদ্ধে মামলা করার। এই মামলার পরিপ্রেক্ষিতেই অনুব্রত মণ্ডলের তিহার (Tihar) যাত্রা পিছিয়ে যায়। বিরোধীদের তরফ থেকে বারবার অভিযোগ করা হচ্ছিল, অনুব্রত মণ্ডলের তিহার যাত্রা আটকানোর জন্যই দলের পরামর্শে শিব ঠাকুর মন্ডল এমন মামলা করেছিলেন।
পরবর্তীতে দেখা যায় শিব ঠাকুর মন্ডলকে দল বহিষ্কার করলেও তার স্ত্রী লিপিকা মন্ডলকে (Lipika Mondal) পঞ্চায়েত ভোটে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার জন্য তৃণমূল প্রার্থী করে। তখন থেকেই বিরোধীরা এই বিষয়টি নিয়ে আরও সরব হতে শুরু করেন এবং অনুব্রত মণ্ডলের তিহার যাত্রা পিছিয়ে দেওয়ার উপহার বলে দাবি করতে থাকেন। পঞ্চায়েত ভোটে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে লিপিকা মন্ডল জয় লাভ করেন এবং এখন দলের থেকে আরও বড় পুরস্কার পেলেন।
দলের তরফ থেকে লিপিকা মন্ডলকে বালিজুরি গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান হিসেবে বেছে নেওয়া হয় এবং আজ অর্থাৎ বৃহস্পতিবার বালিজুরি গ্রাম পঞ্চায়েতের বোর্ড গঠন হতেই তিনি প্রধান হিসেবে শপথ গ্রহণ করেন। বালিজুরি গ্রাম পঞ্চায়েতের মোট ১৪ টি আসনের মধ্যে সাতটিতে জয়লাভ করেছিল তৃণমূল এবং ছয়টিতে জয়লাভ করেছিল বিজেপি। একটি আসন যায় নির্দল প্রার্থীর ঘরে। সংখ্যা গরিষ্ঠতার নিরিখে তৃণমূলই বোর্ড গঠন করে।
ভোটে জয়লাভ করা এবং প্রধান হওয়ার পর লিপিকা মন্ডল অবশ্য এই সকল পুরস্কারের বিষয়টিকে অস্বীকার করেছেন। তিনি জানিয়েছেন, দল তাকে চেয়েছে, মানুষ তাকে চেয়েছেন এবং ভোট দিয়েছেন। মানুষ এবং দলের এই সকল চাওয়া পাওয়ার মান তিনি রাখবেন এবং আগামী দিনে মানুষের জন্য কাজ করবেন।