লাল্টু : ভোট ঘোষণা হওয়ার পর কিছুটা দেরি হলেও অন্যান্য বছরের মতোই শাসকদল তৃণমূলই সবার আগে তাদের পূর্ণাঙ্গ প্রার্থী তালিকা ঘোষণা করে। প্রথমদিকে দফায় দফায় প্রার্থী তালিকা ঘোষণা হবে এমনটা শোনা গেলেও তৃণমূল নেতৃত্ব একসাথে রাজ্যের ২৯৪টি বিধানসভার মধ্যে শরিফ বন্ধুদের জন্য তিনটি আসন ছেড়ে ২৯১টি বিধানসভার প্রার্থী ঘোষণা করে।
তবে এই প্রার্থী ঘোষণার পরেই ক্ষোভ-বিক্ষোভের আগুন জ্বলতে শুরু করে রাজ্যের একাধিক এলাকায়। বাদ যায়নি অনুব্রত গড় বীরভূমও। প্রার্থী তালিকা ঘোষণা হওয়ার সাথে সাথেই নলহাটির বিধায়ক মইনুদ্দিন শামস ক্ষোভ দেখিয়ে দল ছাড়েন। আর এবার দুবরাজপুরে প্রার্থী পছন্দ না হওয়ায় প্রার্থী বদলের দাবি তুললেন তৃণমূল কর্মীরা।
গত শুক্রবার রাজ্যের অন্যান্য বিধানসভা কেন্দ্রগুলির মতোই দুবরাজপুর বিধানসভা কেন্দ্রের তৃণমূল প্রার্থী হিসেবে নাম ঘোষণা করা হয় খয়রাশোল এলাকার তৃণমূল কর্মী অসীমা ধীবরের। প্রার্থী তালিকায় তার নাম আসতেই অসীমা ধীবর নিজের হাতে দেওয়াল লিখন শুরু করে দেন। কিন্তু তিনি নিজে দেওয়াল লিখন শুরু করলেও বিধানসভার একাধিক এলাকায় এখনো পর্যন্ত কর্মীরা প্রার্থীর নাম লেখেন নি। এমন আশ্চর্যজনক ঘটনা চোখে পড়তেই জানা যায় এলাকায় প্রার্থী নিয়ে তৃণমূলের একাংশের মধ্যে ক্ষোভ রয়েছে এবং তারা বীরভূম জেলা তৃণমূল সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলকে প্রার্থী বদলের জন্য অভিযোগ জানিয়েছেন।
ঘটনার বিষয়ে জেলার তৃণমূল সহ-সভাপতি মলয় মুখার্জি জানিয়েছেন, “খয়রাশোল এবং দুবরাজপুর এলাকার বেশ কিছু অঞ্চলে অসীমা ধীবরকে নিয়ে তৃণমূল কর্মীদের মধ্যে ক্ষোভ বিক্ষোভ রয়েছে। এবিষয়ে তারা জেলা সভাপতিকে জানিয়েছেন। দল এই বিষয়ে চিন্তা ভাবনা করছে। মুখ্যমন্ত্রীর সাথে আলোচনা করেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। আর সেই সিদ্ধান্ত এক দু’দিনের মধ্যেই জানা যাবে। তবে দল যদি মনে করে অসীমা ধীবরই প্রার্থী থাকবেন সেক্ষেত্রে দলের সিদ্ধান্তকে সমস্ত কর্মীদের মেনে নিতে হবে।”
অন্যদিকে এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে এলাকার স্থানীয় বিজেপি নেতৃত্ব কটাক্ষ করতে ছাড়েননি। তারা জানিয়েছেন, “দুবরাজপুর বিধানসভায় তৃণমূল যতই খেলোয়াড় চেঞ্জ করুন যাকেই প্রার্থী করুক এখানে বিজেপি বিপুল ভোটে জয়লাভ করবে। বিজেপি দুবরাজপুরের মানুষের মন জয় করে ফেলেছে। এখন শুধু সময়ের অপেক্ষা।”
[aaroporuntag]
অন্যদিকে রাজনৈতিক মহলের বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, দুবরাজপুর বিধানসভায় প্রার্থী নিয়ে যেভাবে ক্ষোভ-বিক্ষোভ চোখে পড়ছে, যেভাবে কর্মীরা এখনো পর্যন্ত দেওয়ালে প্রার্থীর নাম লেখেননি তা রীতিমতো চাপে ফেলেছে শাসক দলকে। এখন এই জায়গায় শাসকদল কিভাবে তার মোকাবিলা করে সেটাই এখন দেখার। পাশাপাশি দল যদি সত্যিই প্রার্থী বদলের পথে হাঁটে তাহলে কাকে প্রার্থী করা হবে? সেই প্রশ্নও উঠে আসছে। প্রশ্ন উঠছে তাহলে কি ফের নরেশ চন্দ্র বাউড়ি, নাকি কোনো সেলিব্রেটি!