‘বিছানায় যাইনি বলে প্রাপ্য পাইনি’, শ্রীলেখার স্বজনপোষণের অভিযোগে মুখ খুললেন স্বস্তিকা

নিজস্ব প্রতিবেদন : বলিউডের তরুণ তথা উঠতি অভিনেতা সুশান্ত সিং রাজপুত আকস্মিক নিজেকে পৃথিবী থেকে সরিয়ে নেওয়ার ঘটনার পর থেকেই বলিউডে স্বজনপোষণ বা নেপটিজম নিয়ে অভিযোগ উঠতে শুরু করেছে বিভিন্ন মহলে। কঙ্গনা রানাওয়াত থেকে আয়ুষ্মান খুরানা অনেকেই এই অভিযোগ তুলতে শুরু করেছেন। আরও ঠিক একইভাবে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে বলিউডের মত বাংলা ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রি টলিউডও কি নিপোটিসমের শিকার!

হ্যাঁ, বাংলা ইন্ড্রাস্ট্রিতেও এনিয়ে বিস্ফোরক মন্তব্য করে বসলেন শ্রীলেখা মিত্র। তার ইউটিউব চ্যানেলে ১ ঘণ্টা ৯ মিনিটের একটি ভিডিওতে টলিউডের বিরুদ্ধে নেপটিসমের অভিযোগ তোলেন তিনি। আর এই পরিস্থিতিতে নিজের সোশ্যাল মিডিয়াতে শ্রীলেখা মিত্রের মন্তব্যের পাল্টা উত্তর দিয়ে মুখ খুললেন অভিনেত্রী অভিনেত্রী স্বস্তিকা মুখোপাধ্যায়।

শ্রীলেখা মিত্র নাম করেই অভিযোগ তুলেছিলেন প্রসেনজিৎ ঋতুপর্ণা জুটির দিকে। তিনি বলেন, সেই সময় ইন্ডাস্ট্রিতে রাজ করতো এই জুটিই তাই তাদের নিয়েই কাজ করতে চাইতেন নির্মাতারা। এর ফলেই লিড রোল পেতেননা তিনি ও ভাগ্যে জুটতো পার্শ্ব চরিত্র বা সেকেন্ড লিড। সময় বদলানোর সাথে সাথে বলিউডে নতুন জুটির রাজত্ব হলো কিন্তু তিনি ব্রাত্যই থেকে গেলেন।

শ্রীলেখার কথা অনুযায়ী তিনি ব্রাত্য হওয়ার মূলে রয়েছে কোনো অভিনেতা পরিচালক বা প্রযোজকের সাথে প্রেমের সম্পর্কে না জড়ানো। নাম করেই তিনি বলেন, তার মতে সেই কারণেই ভালো বন্ধু সৃজিত মুখার্জির ছবিতেও স্থান পাননি তিনি। আর এক্ষেত্রেও নাম করে তিনি তোপ দাগেন স্বস্তিকা মুখোপাধ্যায়ের উপর।তিনি বলেন, সম্পর্কের জন্যই সৃজিতের ছবিতে জায়গা হয়েছে স্বস্তিকার।

তবে বরাবরই স্পষ্ট কথা বলার জন্য দর্শকদের মধ্যে নাম রয়েছে স্বস্তিকা মুখোপাধ্যায়ের। তাই এই পরিস্থিতিতেও স্বস্তিকা সোশ্যাল মিডিয়ায় নিজের বক্তব্য রাখলেন। শ্রীলেখা মিত্রের পাল্টা জবাব দিতে দেখা গেল তাকে শনিবার। তবে তিনি কারোর নাম না করেই। তিনি বলেন, “যখন কোনো অভিনেত্রী কোনো পরিচালকের সাথে এক বা একাধিক ছবি করেন ঠিক তখনই প্রেম এমনকি বিছানায় যাওয়ার গুজবও ওঠে।”

স্বস্তিকা লেখেন, “ছোট্ট প্রশ্ন।
যখন কোন অভিনেত্রী কোন পরিচালকের সঙ্গে এক বা একের বেশি ছবি করে তখন বলা হয় সে শুয়ে বা প্রেম করে কাজটা পেয়েছে। বেশ। তা আমি এক পরিচালকের সঙ্গে তার জীবনের ১৭টা ছবির মধ্যে আড়াইখানা ছবি করেছি (২টি মুখ্য চরিত্র, ১টি অতিথি শিল্পী)। কিন্তু যেহেতু এই পরিচালকের সঙ্গে সৌমিক হালদার ১১টা, অনুপম রায় ৯টা, প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায় ৭টা, যীশু সেনগুপ্ত ৭টা, অনির্বাণ ভট্টাচার্য ৬টা এবং পরমব্রত চট্টোপাধ্যায় ৬টা কাজ করেছেন, তারা নিশ্চয় আরো বেশি করে শুয়ে আর প্রেম করে কাজগুলো পেয়েছেন? এনারা তাহলে সবাই উভকামী ও সুযোগসন্ধানী? যুক্তি তো সবার ক্ষেত্রেই এক হওয়া উচিৎ, তাই না? নাকি নিজের খামতি ঢাকতে স্লাটশেমিং শুধু আমাদের মত ‘কুযোগ্য’ অভিনেত্রীদের করা হবে যারা একেবারেই অভিনয়টা পারেনা?”

স্বস্তিকার সোশ্যাল মিডিয়ায় এই পোস্ট যে শ্রীলেখা মিত্রের কথার পাল্টা জবাব তা আলাদা ভাবে বলে দেওয়ার প্রয়োজন পড়েনা। স্বস্তিকার এই জবাবের পাল্টা উত্তর এখনও আসেনি শ্রীলেখা মিত্রের থেকে।

শুধু স্বস্তিকাই নন সৃজিতের বিরুদ্ধে নেপটিসমের অভিযোগ নাকোচ করেছেন টোটা রায়চৌধুরীও। তিনি জানিয়েছেন, সৃজিতের ছবি ভালো লাগলেও কোনোদিন ফোন করে কাজ চাননি তিনি। কারণ তার মনে হয়েছে সৃজিত মুখার্জী একজন অসম্ভব দায়িত্বশীল মানুষ। কিন্তু অন্যদিকে তিনিই ফোন করে ফেলুদার চরিত্রের জন্য অফার করেন। তার কথাতেও প্রকাশ পায় একই বিষয় যে সৃজিত মুখোপাধ্যায়ের কাছে নেপটিসম নয়, বরং যোগ্যতা আসল বিষয়।

তবে টলিউডে স্বজনপোষনের অভিযোগ তোলার পর অন্যান্যরা যেভাবে নাম না করেই শ্রীলেখাকে জবাব দিয়েছে সেই সকল জবাবের পাল্টা জবাব এখনও দিতে দেখা যায়নি শ্রীলেখা মিত্রকে। তবে পাল্টা জবাব এলে এই বিষয়ে জল বহুদূর গড়াতে পারে তা কিন্তু বেশ টেরই পাচ্ছেন নেটিজেনরা।