লাল্টু : একসাথে ঘট আনা, একসাথে বিসর্জন। নিজেদের পারিশ্রমিকের টাকায় একসাথে পুজো, এই ভাবেই বংশপরম্পরায় আনুমানিক ২৫০ বছর ধরে পূজিত হয়ে আসছে খয়রাশোল থানার পাঁচরার পাথরকুচি গ্ৰামের কর্মকারদের বাড়ির ৭ দুর্গা পূজো।
পন্ডিত উপাধি পাওয়া, গ্ৰামে গদাধর পন্ডিত নামে পরিচিত গদাধর কবিরাজ পাথরকুচি গ্ৰামে শুরু করেন কর্মকার বাড়ির দুর্গা পূজো। পরে বংশ বৃদ্ধি ও পরিবারের সদস্যের সংখ্যা বাড়ায় পূজোর সংখ্যাও বাড়ে। ধীরে ধীরে তা ৭ পুজোর রূপ পায়। বর্তমানে এই পুজো ‘সাত মা’-এর পূজো নামেই পরিচিত।
একটা দুর্গা মন্দির থেকে পরপর সাতটি মন্দির, সাতটি মন্দিরেই দেবীর মাটির প্রতিমা। প্রতিমা তৈরি করা থেকে বিসর্জন সবই হয় একসাথে। নবপত্রিকা স্নান, অষ্টমীর বলিদান, বিসর্জন সবকিছুই হয় একসাথে।
তবে কর্মকারদের বাড়ির পূজোর বৈশিষ্ট্য হলো, অষ্টমীতে ছাগ বলির এক টুকরো মাংস একটি মাটির সরা বা মাটির পাত্রে, একটি পান ও সুপারি দিয়ে রাখা হয়। সেটিকে নবমীর গভীর রাতে তথা রাত দেড়টা-দুটো’র পর একটি ভেলায় মাংসের টুকরোটি রেখে প্রদীপ ও আলোনা খই দিয়ে শ্মশান সংলগ্ন নদীতে বিসর্জন দেওয়া হয়।
বাড়ির সকল সদস্য ও আত্মীয়রা দূরদূরান্ত থেকে চলে আসেন সাত-মা-এর পূজোয়। পূজো চারদিন চলে জমাটি আড্ডা আর সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। তবে এবার সবকিছুতেই বাদ সেধেছে করোনা আবহ। আত্মীয় স্বজনদের আসাতে যেমন বাধা তেমনি সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানেও হয়েছে কাটছাঁট। মা আসার আনন্দ যতটা মাতিয়ে তুলছে, করোনা আবোহ ততটাই ভাবিয়ে তুলেছে পরিবারের সদস্যদের।